এনগেজমেন্টের দিন ( দ্বিতীয় পর্ব)
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজ আমি আবার চলে এসেছি আপনাদের সাথে আমার এনগেজমেন্টের পরবর্তী পর্ব নিয়ে গল্প করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
প্রথম পর্বে যে পর্যন্ত আলোচনা করেছিলাম আজ তাহলে তার পর থেকে শুরু করা যাক। আগের দিন আমি আপনাদের সাথে আমার এনগেজমেন্টের আগের দিন থেকে যে টেনশন হচ্ছিল সে কথা এবং এনগেজমেন্টের দিনের সকালটা আমি কিভাবে শুরু করেছিলাম সেই নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি। আর তাহলে তার পর থেকেই শুরু করা যাক।
মেকআপ আর্টিস্ট দিদি সাজাতে সাজাতেই আমার শ্বশুর বাড়ির সব কাছের আত্মীয়রা প্রায় আসতে শুরু করেছিল। আর তাছাড়া আমার বাড়ির লোকেরাও মানে আমাদের পরিবারের লোকজন এবং আত্মীয়-স্বজন সকলেই তত্ত্ব সাজিয়ে নিয়ে চলে এসেছিল। আমি বুঝতে পারছিলাম যে সকলে চলে এসেছে তবে এত সেজে ওদের সামনে যেতে আমার প্রথমে একটু লজ্জায় লাগছিল। সব সময় তো এত সাজা হয় না তাই নিজেকে কেমন যেন অন্যরকম লাগছিল। তার উপরে আমি আবার হেয়ার এক্সটেনশন লাগিয়েছিলাম। যেহেতু কিছুদিন আগেই আমার চুল কেটেছি, তাই চুলের লেন্থ এখন অনেকটাই কমে গেছে। তাই আগে থেকেই ভেবে রেখেছিলাম যে আমি এই দিনের জন্য হেয়ার এক্সটেনশন ব্যবহার করব। সেইমতো আমি মেকআপ আর্টিস্ট দিদিকে টাকা দিয়ে দিয়েছিলাম হেয়ার এক্সটেনশন কিনে আনার জন্য। এক্সটেনশনটা লাগানোর পর আমার যেন আরো বেশি লজ্জা লাগছিল। আমার চুল তো এমনিই ছোটো তার ওপর হঠাৎ করে আজকে সবাই লম্বা লম্বা চুল দেখবে সেটা ভেবেই প্রথমে মেকআপ আর্টিস্ট দিদির সাথে এক্সটেনশন না লাগানোর জন্য রিকোয়েস্ট করেছিলাম। কিন্তু দিদি বললো, "এমা নানা খুলো না, খুব সুন্দর লাগছে। তুমি এত শখ করে কিনলে , পরবা না কেন। খুব ভালো লাগছে।" তাই সাহস করে পরেই ফেললাম।
সাজানো যখন প্রায় কমপ্লিট সেই মুহূর্তে আমার ছোটো মামি শাশুড়ি ঘরে এসেছিলাম। তারপর উনিও আমাকে আশ্বাস দিলেন যে এক্সপেনশন লাগিয়ে অনেক ভালো লাগছে। আর মেকাআপটাও খুব ভালো হয়েছে। তাই আমিও একটু সাহস পেয়েছিলাম বাইরে যাওয়ার। তারপর বাইরে বেরিয়ে মামি একে একে ওদের সব আত্মীয়দের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিল। সবার সাথে আলাপ চারিতা করার পর দেখলাম ইতিমধ্যে আমার মামা বাড়ির লোকজনও চলে এসেছে। আমার নিজের ছয়টা মামা।নানা কাজের মাঝে অনেক বছর মামার বাড়ি যাওয়ার সময় পাইনি। তাই একসাথে সকলকে দেখতে পেয়ে বেশ ভালো লাগছিল। তারপর ওদের সাথে ও একটু কথোপকথন করছিলাম। এরপর দেখি আমার এক পড়ানো বাড়ির কাকিমা এসে পড়েছেন। ওদের বাড়িতে আমি অনেক বছর ধরে পড়াচ্ছি তাই একটা খুব ভালো সম্পর্ক ওদের সাথে গড়ে উঠেছে। তাই পড়ানো বাড়ি নিমন্ত্রণ বলতে শুধু ওদেরকেই করেছিলাম। কাকিমা এসেই প্রথমে আমার সাথে কিছু ফটো তুলে নিয়েছিল।
ততক্ষণে আমাদের ডেকোরেশন পুরো কমপ্লিট হয়ে গিয়েছিল। খুব ছোট্ট করে একটা কর্নার ডেকোরেট করা হয়েছিল। এত ছোট করে ডেকোরেট করতে গিয়েও বেশ অনেকটাই খরচ পড়েছিল। তাই ভাবছি বিয়েতে ডেকোরেশনে তো বেশ খরচ হয়ে যাবে। তাই এখন থেকেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। যাক সেসব কথা। সাজানো টা কিন্তু পুরোটাই আমার আইডিয়া অনুযায়ী হয়েছিল । এনগেজমেন্টের একমাস আগে থেকে আমি facebook youtube বিভিন্ন জায়গায় স্বল্প খরচের মধ্যে কিভাবে সাজানো যেতে পারে সেই নিয়ে অনেক কিছু সার্চ করে দেখেছিলাম। শেষমেষ আমার এই ডিজাইনটাই ভালো লেগেছিল। যে সাজিয়েছিল সে আমারই এক বন্ধু। আমার মন মতই সে সাজিয়ে দিয়েছিল।
এরপর আমার হবু বরও এসে হাজির হয়েছিল। তার পাশাপাশি ক্যামেরাম্যান দাদারাও এসে গিয়েছিল। যারা ছবি তুলছো তারা সকলেই আমার পরিচিত কারণ সকলেই দাদার সাথে একসাথে কাজ করে। আমি তো আমার অনেক করতে জানিয়েছিলাম আমার দাদা প্রফেশনালি ফটোগ্রাফির কাজই করে। তাই ফটোগুলা নিয়ে আমাদের কোনো অসুবিধা হয়নি। তারপর আমরা দুজন একটু ফটো তুলে নিয়েছিলাম। কারণ তার কিছুক্ষণ পর থেকেই আশীর্বাদ পর্ব শুরু হয়ে যেত। তারপর আর একসাথে ফটো তোলার মতো সিচুয়েশন থাকত না।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আশীর্বাদ করব নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
নতুন জীবনে প্রবেশ করার প্রথম ধাপ হলো এনগেজমেন্ট। আপনি সেই প্রথম ধাপ অতিক্রম করেছেন। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
আসলে এই দিনটাতে একধরণের আনন্দ ,লজ্জা সবকিছু মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। আপনাকে
হেয়ার এক্সটেনশন লাগানোতে খুবই ভালো লাগছে। খুলে ফেলাটা বোকামি হতো। খুবই ভালো হয়েছে আপনার মেকাপ আর্টিস্টের কাজ।
সেই সাথে কর্নার ডেকোরেশনটাও দেখার মতো হয়েছে। দাদা ও আপনাকে একসাথে খুবই মানিয়েছে। ভালো থাকুন দুজনেই সারা জীবন।
0.00 SBD,
0.01 STEEM,
0.01 SP
অনেক অনেক ধন্যবাদ দিদি আপনাকে। ভালো থাকবেন।
যেহেতু এনগেজমেন্ট এর অনুষ্ঠান তাই সবাই মিলে অনেক বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে নিজেদের কাজকর্ম নিয়ে আপনাকে সাজাতে সাজাতে সবাই এসে হাজির হয়ে গিয়েছে তবে আপনি প্রথম অবস্থায় একটু লজ্জা পেয়েছেন আসলে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই মেয়েদের এই মুহূর্তগুলো অনেক বেশি উপভোগ করার মুহূর্ত তবে আপনি এর পরে আপনার হবু বর এবং সবাইকে নিয়ে অনেক সুন্দর কিছু মুহূর্ত পার করেছেন যেটা দেখে বেশ ভালো লাগলো অসংখ্য ধন্যবাদ এনগেজমেন্ট এর দ্বিতীয় পর্ব আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।