টিচার্স ডে তে আমার স্টুডেন্টদের কাছ থেকে পাওয়া আরও কিছু গিফ্ট
নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আবারো নতুন কিছু গল্প শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।।
৫ ই সেপ্টেম্বর টিচার্স ডে উদযাপনের পরে একটি পোস্টে আমি আপনাদের সাথে আমার কয়েকটি স্টুডেন্ট এর দেওয়া গিফ্ট শেয়ার করেছিলাম এবং সেইসাথে তাদের সাথে আপনাদের পরিচয়ও করিয়েছিলাম। আজকে চলে এসেছি, একই রকম ভাব আমার আরো কিছু স্টুডেন্টদের সাথে আপনাদের পরিচয় করাতে।
আসলে যেহেতু আমাদের বাড়িতে খুব বেশি জায়গা নেই তাই সেইভাবে সমস্ত স্টুডেন্টদের এক জায়গায় এনে টিচার্স ডে আমি উদযাপন করতে পারি না। যদিও আগে যখন স্টুডেন্ট কম ছিল তখন বাড়িতেই করা হতো। তখন মা এবং বৌদি, বাড়িতেই বিভিন্ন রকমের খাবার বানিয়ে দিত। তবে বর্তমানে যেহেতু আমার মা কর্মসূত্রে রাজ্যের বাইরে থাকেন এবং বৌদির পক্ষেও বাচ্চা সামলে এত জনের জন্য রান্না করে দেওয়া সম্ভব নয় তাই আমি রেস্টুরেন্ট থেকেই খাবার কিনে সকলকে দিই।
আচ্ছা আজকে তাহলে সবার প্রথমে আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিই আমার সবথেকে পুরনো স্টুডেন্টকে। এর নাম রনিকে। ওকে আমি প্রি- প্রাইমারি থেকে পড়াই। এখন ও ক্লাস ৮ এ পড়ে। এতগুলো বছর ধরে আমি ওকে নিজের হাতে গড়েছি। এবং আমি ভীষণভাবে স্যাটিসফাইড। খুবই ভালো ছেলে। ও প্রথম থেকেই আমাকে পিসি বলে ডাকতো। ও ডাক শুনে শুনে আমি বাকিদেরও পিসি হয়ে গেছি। আগে তো আমি ওকে সব সাবজেক্টই পড়াতাম।তবে পঞ্চম শ্রেণী থেকে আমি শুধুমাত্র ইংরেজি বিষয়টাই পড়াই।
ওকে নিয়েই আমি পরে একদিন আপনাদের সাথে আলাদা করে একটা পোস্ট করবো। এতগুলো বছর আমার সাথে জুড়ে আছে ও। তাই ওকে নিয়ে আমার অনেক কিছু লেখা আছে। তবে আজকে শুধু ওর দেওয়া গিফ্টের কথা বলি। প্রতিবছরই ওর মা আমাকে ব্যবহারযোগ্য কিছু জিনিসপত্র দেয়। বিশেষ করে সাংসারিক জিনিসপত্রই বলা চলে। এই বছর দিয়েছিল সুন্দর একটা কাপের সেট।
এরপরে আমার আর একটা স্টুডেন্ট এর সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিই। যদিও ছবিতে মুখটা বোঝা যাচ্ছে না। ওর নাম সায়ন।ও চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে। ওকেও আমি শুধু ইংরেজি বিষয় পড়াই। ও কথা বলতে খুব ভালোবাসে। সেই সাথে আমাকে একটু ভয়ও পায়। প্রথম থেকেই ওর মা আমাকে বলেছিল যাতে ওর সাথে খুব বেশি বন্ধুসুলভ ব্যবহার না করি। কারণ একবার যদি বুঝা যায় যে দিদি পড়া না করলেও বকছে না তাহলে আর পড়া তৈরি করে রাখবে না। তাই মাঝে মাঝে একটু বকা ও সাথে প্রয়োজনে পিটুনিও দিতে হয়।
ও দিয়েছিল আমাকে ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ এর একটি ছবি বাঁধানো ফ্রেম। যাকে উপলক্ষ্য করে এই দিনটি উদযাপন করা হয়, তার এই ছবিটি পেয়ে আমি খুবই খুশি হয়েছিলাম। কারন আমার বাড়িতে ওনার কোনো ছবি আমার কাছে নেই।
এরপরে যার সাথে পরিচয় করাবো তার নাম নীলাভ। ও একটি ইংরেজী মাধ্যমিক স্কুলে পড়ে। ওকে আমি আর্টস গ্রুপের বিষয়গুলো পড়াই। ওকে দেখে আমার বড্ড মায়া হয়। কিন্তু ও ওর বয়সের তুলনায় অত সামাজিক নয়। মানে ঠিক কোন পরিস্থিতিতে কি রকম মন্তব্য করতে হয় সেটা খুব সহজে বুঝতে পারে না। যার ফলে অনেক সময় হাসির পাত্র হয়। ও সপ্তাহে একদিন আমাদের বাড়িতে ব্যাচে পড়তে আসে। বাকি ২ দিন আমি ওদের বাড়িতে পড়াতে যাই। যাতে একটু সামাজিক হয় তার জন্যই আমি একটা দিন ওকে ব্যাচে পড়াই। এখন অনেক টা স্বাভাবিক হয়েছে।
এই বছরের টিচার্স ডের উপহার হিসেবে ও আমাকে একটা কফি মগ গিফ্ট করেছে। যেখানে Happy Teacher's Day লেখা আছে। এই বছরের সমস্ত গিফ্ট গুলো আমি আমার ভাইপোকে দিয়ে আনবক্সিং করিয়েছি, যাতে ও একটু মজা পাই। প্রতিবছরই আমি অনেকগুলো কফি মগ পাই। এই বছরও বেশ অনেকগুলোই পেয়েছি।
আরও অনেক স্টুডেন্টদের সাথে আপনাদের পরিচয় করানো বাকি থেকে গেল। ধীরে ধীরে সকলের সাথেই আপনাদের পরিচয় করাবো। আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।