Better Life with Steem|| The Diary Game||31- May-2025||
![]() |
---|
Made by Canva |
Hello,
Everyone,
দায়িত্ব ও কর্তব্য এমনই একটি জিনিস ,যা আপনার নিজের ইচ্ছেতেই পালন করতে হয় ।আপনি অসুস্থ থাকুন কিংবা সুস্থ থাকুন আপনি দায়িত্ব অবহেলা করতে পারবেন না। আবার অনেকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে দায়িত্ব গুলো এড়িয়ে যায় । কারো কারো ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয় ।
আজ আমি দীর্ঘ ১৫ দিন পরে আপনাদের মাঝে আমার দিনলিপী নিয়ে উপস্থিত হলাম। এই দীর্ঘ বিরতির অবশ্যই কিছু কারণ আছে । পূর্ব পোষ্টে আমি উল্লেখ করেছিলাম, অসুস্থ থাকার কারণে আমাকে বারবার CMH এ যেতে হয় তাই আমি আমার সংসার এবং ষ্টিমিট প্ল্যাটফর্মে কোন কাজই করতে পারছি না ।তার উপরে চলে আসলো আমার ছোট ননদের মেয়ের বিয়ে ।সবকিছু নিয়ে যেন এক কঠিন পরীক্ষার সামনে আমাকে দাঁড় করালো ।
![]() |
---|
এদিকে আর্মি বাবু ছুটি পাচ্ছে না আবার ননদের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান। না গেলেও সে খুব কষ্ট পাবে। তাই অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও আমাকে দায়িত্ব পালন করতে যেতে হবে ।আপন ছোট ননদ বলে কথা ।আর্মি বাবু তার ছোট বোনকে খুব ভালবাসতেন ও স্নেহ করতেন। যেহেতু তিনি ছুটি পাচ্ছেন না তাই আমাকে তার দায়িত্ব পালন করতে অবশ্যই যেতে হবে । অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও আমরা যাচ্ছি ওদের বাড়িতে ।
আর কিছুদিন পরে কোরবানির ঈদ হবে তাই কিছুদিন পর ঈদের ছুটি শুরু হয়ে যাবে।এবারের ঈদে ১০ দিন ছুটি থাকছে তাই সবাই বাড়িতে যাওয়ার জন্য অগ্রিম টিকিট কেটে রাখে । এই সময় রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের বাড়িতে যাওয়ার বাসের টিকিট পাওয়া খুবই কঠিন এবং কষ্টসাধ্য । এই সময় সকল পরিবহনে অনেক যাত্রী হয়, অনেক ভিড় থাকে তাই একটু ভয় ভয় লাগছিল ।ভাগ্যক্রমে আমার ছোট বোনের দেবর বাড়িতে যাবে তাই ওর সাথে আমরা একত্রে বাড়ি যাওয়ার জন্য টিকিট কেটেছিলাম ।
![]() |
---|
বিয়ে বাড়ি যাবো বলে কথা, কিছু তো শপিং করতে হয়। অসুস্থ শরীর নিয়ে অল্প কিছু শপিং করেছিলাম ,তার ভিতরে সব থেকে আমার ভালো লেগেছিল আমার এই শাঁখা-পলা। অনেক দিনের শখ ছিল এমন এক জোড়া শাঁখা-পলা কেনার। তা নিয়ে ইতিপূর্বে একটা পোস্ট করেছিলাম ,এ বিষয়ে আর কিছু বিস্তারিত বললাম না।
গতকাল রাতে সব কিছু গুছিয়ে নিতে রাত তিনটে বেজে গেল , আবার সকাল ছয়টায় ঘুম থেকে উঠতে হলো ।ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে গোপাল সোনাকে সঙ্গে নিয়ে যাব তাই তাকেও তৈরি করে নিলাম । আর্মি বাবুর কিছু রান্না করে রেখে যেতে পারিনি ।তিনি অফিসে খাবার খেয়ে নেবে ।যেহেতু লং জার্নি তাই আমাদেরও কিছু খাবার সঙ্গে নিতে হবে । বোন আমাদের জন্য পিজা এবং খিচুড়ি রান্না করে দিয়েছিল তাই আমি আর তেমন বাড়তি কিছু করিনি, এমনি হালকা খাবার নিয়েছিলাম। সকাল আটটার সময় বাসা থেকে বের হই।
![]() | ![]() |
---|
রাস্তায় জ্যাম থাকতে পারে তাই হাতে সময় নিয়ে বের হয়েছিলাম ।আমাদের গাড়ি ছিল ১১ঃ৩০ মিনিটে । মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টি পড়ছিল। আমরা একটা সিএনজি নিয়ে মালিবাগ সোহাগ পরিবহনের কাউন্টারে গিয়েছিলাম। যেহেতু বিজনিস ক্লাসের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ি ছিল তাই এদের সেবা অনেক ভালো ।ঈদের সময় অন্যান্য পরিবহনগুলো ভাড়া দ্বিগুণ করলেও সোহাগ পরিবহন তাদের ভাড়া সব সময় একই রাখে । বাংলাদেশের টাকা ১২০০ টাকা এবং ষ্টিমিট প্রাইজ 72.11 1 steem =16.64 BDT । আমরা অনলাইন মাধ্যমে টিকিট কেটেছিলাম তাই আমাদের অনলাইন সার্ভিসের জন্য কিছু টাকা কেটেছিল ।
আমার ছোট বোনের বর এবং তার দেবর তখনও আসেনি ।আমরা তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম ।কিছুক্ষণ পর তারা চলে আসলো । আমরা সময়ের আগেই চলে এসেছি তাই আমরা গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলাম আর কফি খাচ্ছিলাম। সবাই গল্প করছিলাম এবং বোনের রান্না করা চিকেন খিচুড়ী খেলাম ।
আর্মি বাবু তার ছোট বোনকে খুব ভালবাসতেন কিন্তু কি হবে তার বোনের বিয়েতেও তিনি চাকরির জন্য থাকতে পারেননি । এবার তার মেয়ের বিয়েতেও যেতে পারছেন না । তাদের পেশা এমনই এক কঠিন পেশা, এই পেশা যেমন অনেক সম্মানের তেমনি অনেক দায়িত্ব পালন হয় তাকে। অনেক দায়িত্ব-কর্তব্যের মাঝে তার নিজের ভালোলাগা গুলো মাঝে মাঝে ত্যাগ করতে হয় ।যাইহোক নির্দিষ্ট সময় আমাদের পরিবহন চলে এসেছে ।আমরা আমাদের টিকিট সংগ্রহ করলাম এবং কুপন সংগ্রহ করে আমাদের লাগেজ গুলো বক্সে দিয়ে দিলাম।
![]() | ![]() |
---|
নির্দিষ্ট আসনে বসে পড়ি । সবাই সবার মত ব্যস্ত হাতের স্মার্টফোন নিয়ে কিন্তু মজার বিষয় হলো কি? আমার ফোন ঘাটার সময় ছিল না কারণ আমি বিয়ে বাড়ির জন্য যে পোশাক তৈরি করেছিলাম তার সম্পূর্ণ কাজ করা হয়নি ।যেহেতু আমি আমার কাজগুলো করতে ভালোবাসি তাই কোন টেইলারের কাছে আমার ড্রেসগুলো তৈরি করতে দেয়নি। আমি অসুস্থ শরীরে চেষ্টা করেছি নিজে তৈরি করার ।
কিছু হাতের কাজ বাকি ছিল।
সকল যাত্রী ঠান্ডা বাতাসে বসে মোবাইল দেখছে , কেউ ঘুমাচ্ছে আর আমি বসে বসে হাতের কাজ করছি ।বেশ লাগছে গ্রাম বাংলার দৃশ্য সত্যি অনেক সুন্দর। বৃষ্টি আশার আগ মুহূর্তে আকাশটা এত সুন্দর সেজে ওঠে দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই। পদ্মা সেতু পার হয়ে বরিশালে যেতে হয়, শুধু বরিশাল নয় দক্ষিণ অঞ্চলের সমস্ত এলাকায় যেতে পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে হয় । গাড়িটি ২০ মিনিটের জন্য বিরতি দিয়েছিলাম ।এখানে খাবার ব্যবস্থা আছে, অনেক কিছুই খাবার পাওয়া যায়। এখানে বরিশাল অঞ্চলের সমস্ত গাড়িগুলোই বিশ মিনিটের জন্য যাত্রা বিরতি দিয়ে থাকে।
![]() | ![]() |
---|
গাড়ি থেকে নেমে ফ্রেশ হয়ে চিকেন স্যান্ডউইচ ও কফি নিলাম ।আমার জার্নিপথে কখনোই ভাত খেতে ভালো লাগে না । ড্রাই ফুড খেতে বেশি পছন্দ করি ।আমরা বিকেল সাড়ে চারটার সময় গৌরনদী এসে পৌঁছাই। ননদের ছেলে ইজিবাইক নিয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। আমার বোনে দেবর তাদের বাড়িতে চলে গেলেন আর আমি ননদের ছেলের সাথে ওদের বাড়িতে আসি ।আমাদের দেখে ননদ অনেক খুশি হয়েছে।
আমি অসুস্থ শরীর নিয়ে ওদের বাড়িতে আসতে পেরেছি । ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে কিছু সময় বিশ্রাম নেই এবং সন্ধ্যার পরে প্রিয়ন্তীকে মেহেদি পড়ানোর একটি প্রোগ্রাম ছিল তাই ওদের সাথে সাথে আমিও মেহেদী পরে ছিলাম। এভাবে কেটে গেল আমার ৩১ তারিখের দিনটি । তিন দিন আগ থেকে লেখাটি শুরু করেছিলাম কিন্তু গ্রামের বাড়িতে ইন্টারনেট ব্যবস্থা তেমন ভালো ছিল না এবং বাসায় এসেও অসুস্থতার জন্য পোস্ট করতে পারিনি ।
আমার ফোনে অনেক ছবি জমা পড়ে গেছে। আমি কোন দিন কোন পোস্ট করবো তাই ভাবতে পারছি না কারণ পোস্ট না করে ছবিগুলো ডিলিট দিতে পারছি না ।সকালের ভালোবাসা ও সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে আমি দ্রুত সুস্থ হতে পারি। আশা করি তোমাদের সাথে আমার প্রতিটি দিনের আনন্দের মুহূর্তগুলো শেয়ার করতে পারবো, সেই আশা রেখে আজ এখানে বিদায় নিচ্ছি। সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। শুভরাত্রি ।