Better Life with Steem|| The Diary Game||09- May-2025||

আজ ১০ই মে বিশ্ব “মা দিবস”। বিশ্বের সকল মায়ের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ও অনেক অনেক ভালোবাসা ।মায়ের ভালবাসার কোন তুলনা হয় না আমরা তো সকলেই জানি। তবে সেই ভালোবাসা এমন না হোক যা ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। সমস্ত মায়ের সুখ হল সন্তানের ভালো থাকা নিয়ে, সন্তানের ভালোবাসা নিয়ে , এমন একটা সময় আসে যখন সন্তান তার জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করে ।

সন্তানের জীবনটাকে সুন্দরভাবে সাজানোর জন্য একটু গ্যাপ দেওয়া দরকার , সন্তানকে একটু সুযোগ দেওয়া দরকার । মাঝে মাঝে মনে হয় ,আমরা নারীরাই নারীকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি । আমরা যখন ছেলে বউ থাকি তখন আমাদের শাশুড়ি মাকে আমরা প্রতিদ্বন্দি মনে করি, তাকে সহ্য করতে পারি না । সেই আমরা যখন আবার শাশুড়ি মা হব তখন হয়তোবা আমার ছেলে বউকে সহ্য হবে না বা তাকে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী মনে হবে ।

৭মে থেকে অনলাইন মাধ্যমে সারাক্ষন এএসপি পলাশ সাহার ঘটনাটা সত্যি খুবই দুঃখজনক ।আমি এই ক্ষেত্রে মনে করি, এখানে মা ও ছেলে বৌ যতটা দায়ী ততটা এএসপি পলাশ সাহা নিজেও দায়ী ।সে মাকে ভালোবাসতো বউকেও ভালোবাসতো ,তবে সে সব সময় বউকে বলে আসছে মানিয়ে নিতে কিন্তু কখনো কি মাকে বলেছেন মানিয়ে নিতে ।

অনলাইন মাধ্যমে যখন মায়ের সাক্ষাৎকার শুনি তখন মনে হচ্ছে যেন মা ভালো ,আবার যখন বউয়ের সাক্ষাৎকার শুনি তখন মনে হচ্ছে বউ ভালো। তবে সত্যিকারের ঘটনাটা আমি ঠিক জানি না তাই আমি কারো সম্বন্ধে কোন মন্তব্য দিতে চাচ্ছি না । একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হয়েও তিনি যে এইভাবে একটা ভুল সিদ্ধান্ত নিবেন সেটাও মেনে নিতে পারছি না ।

তিনি অনেক বড় বড় পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছেন, অনেক সফলতা পেয়েছেন এবং এই পর্যন্ত আসতে পেরেছেন কিন্তু বাস্তব জীবন পরীক্ষায় তিনি একদমই ব্যর্থ । সে যদি বিচক্ষণতার সাথে দুজনকে সামলাতে পারতেন তবে এমন পরিস্থিতি সম্মুখীন হতে হতো না। মনে হয় বিধাতা তার জীবন এখানেই ইতি টেনেছিল । এরকম হাজারো প্রশ্ন মনের ভেতর উকি মারছে । এ বিষয়ে আর কথা বাড়ালাম না ।

অন্য একটা কারণে আজ আমার মন ভালো নেই । আজ আমি গতদিনের দিনলিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি ।কিছুদিন থেকে মা বাপি আমার বাসায় ছিল। মা প্রায় এক মাসের বেশি আমার বাসায় ছিল , আপনারা সকলেই জানেন মায়ের চোখ অপারেশন করা হলো ।বাপি গত শনিবার ঢাকাতে আসলেন। ছোট বোনের বাসায় ছিলেন। তিনিও ডাক্তার দেখিয়েছেন।

বয়সের কারণে শরীরে নানা অসুখ বাসা বেধেছে তাইতো এই সময় তাদের বাড়তি যত্ন নিতে হচ্ছে। ডাক্তারের কাছে বারবার আসতে হয় ।বাপি অবসরে আসার পরে থেকে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারপরও বয়সের একটা ভাড় আছে, ৭০ বছর পার হতে চলেছে তাইতো নানা অসুখ বাসা বেধেছে ।ওরা বাসায় ছিল, অনেক ব্যস্ত ছিলাম তাই কোন পোস্ট করতে পারিনি তারপরও ভালো লেগেছে।

আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন তারা আমাদের যত্ন করে লালন পালন করে এত বড় করেছেন । আজ আমাদের সময় এসেছে তাদের যত্ন করা, তাদের ভালোবাসা, তাদের লালন পালন করা। তবে এই সুযোগটা কিন্তু আমরা সব সময় পাইনা। বিশেষ করে মেয়েদের। তারপরও এই যে দেড় মাস মা আমার কাছে ছিল এবং বাপিও কিছুদিন ছিল, দিনগুলো ভালই কাটছে কিন্তু তাদের তো বাড়ি ফেরার সময় চলে এসেছে।

ডাক্তার দেখানো শেষ, আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ তারা তাই এখন বাড়িতে চলে যাবে। মায়ের চেয়ে বাপী অনেকটা নরম হয়ে পড়েছে। বাপিকে নিয়ে চিন্তা হয় যেহেতু বরিশাল আমাদের বাড়ি । গাড়িতে ভ্রমন করতে কষ্ট হবে তাই লঞ্চে কেবিন রাখা হয়েছে ।তারা লঞ্চে করে বাড়িতে যাবে তাইতো খুব সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ওদের জন্য রুটি করলাম ,ডিম ভাজি করে দিলাম, কলা দিলাম এবং সকালের নাস্তা করার সাথে সাথেই আমি দুপুরের আয়োজন শুরু করে দিয়েছি।

যেহেতু ওরা দুপুর ৩ টার সময় বাসা থেকে বেরিয়ে পড়বে । দুপুরের খাবার রান্না করে রাতের খাবার তৈরি করি । মা লঞ্চের খাবার ততটা পছন্দ করে না তাই রাতে খাবার তৈরি করে দিয়েছিলাম বাসা থেকে। আজকের দিনটা যদি আরেকটু বড় হতো তবে বাবা মাকে আরো কিছু সময় কাছে পেতাম ।

আমার রান্না শেষ হতে হতে দেখি যে দুপুর ২টা বেজে গেল । আনন্দের সময় গুলো খুব দ্রুত পার হয়ে যায়। আমি সবকিছু রেডি করে ওদেরকে খেতে দিলাম এবং রাতে খাবার গুলো আমি সব প্যাকেট করে দিলাম ।প্রচন্ড গরম পড়ছে , রাস্তায় জ্যাম থাকতে পারে তাই তড়িঘড়ি করে তিনটার সময় বাসা থেকে বের হলো ।লঞ্চ সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাবে সন্ধ্যা ছয়টায়।

প্রয়োজন হলে কেবিনে গিয়ে কিছু সময় বিশ্রাম নিবে তাও ভালো ।বাপী- মা চলে গেল ।আমার দুপুরের খাবার খেতেও ইচ্ছে করছে না ।কেন যেন খুব একা একা লাগছে, প্রচন্ড মাথা ব্যথা করছে ।হাতে স্মার্টফোনটি নিয়ে স্কল করছিলাম ,শুধু একটি খবর তা হল এএসপি পলাশ সাহা।

মনে হয় এই পৃথিবীতে সবাই সর্ব সুখী হতে পারে না । সৃষ্টিকর্তা কিছু না কিছু অভাব রেখে দেয় কারণ যদি সর্ব সুখী হয় তাহলে তো তাকে ডাকা হবে না। জানিনা সৃষ্টিকর্তা কার জন্য কতটা কি রেখেছে বা আমরা কতটা পুরনো করতে পারবো। মনটা ভালো লাগছে না ,এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, পরিবারের সকল সদস্যকে ভালোবাসুন। শুভরাত্রি ।