কৃষ্ণনগরে দূর্গা প্রতিমার প্রস্তুতি পর্ব||ভিডিও লিংক||

in Incredible Indialast month

নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন ?আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজকে আবারো নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে আশা করছি সকলেরই ভালো লাগবে।

IMG_20250721_213451.jpg

গতকাল ছিল রবিবার। রবিবার ছুটির দিনে সকলেরই একটু বাইরে বেরোতে ভীষণ মন চাই। কিন্তু হঠাৎ করে দুপুরবেলার পরে শুরু হয়ে যায় মুষলধারে বৃষ্টি। ভেবেছিলাম হয়তো বৃষ্টি থামবে না। কিন্তু একটু বিকেল গড়াতেই আবারো বৃষ্টি থেমে গিয়েছিল। গতকাল ইচ্ছে ছিল কয়েকটা পালে দের কারখানায় ঠাকুর দেখতে যাব। গত বছরে আমি আপনাদের মাঝে গ্রামের বাড়ির ঠাকুর বায়না দেওয়ার পোস্ট শেয়ার করেছিলাম। তাই এ বছরেও আমাদের কাঁধে এসে পড়েছে ঠাকুর বায়না দেওয়ার দায়িত্ব। বহুদিন আগে থেকেই মা দুর্গার মূর্তি তৈরি করা শুরু হয়ে গেছে। তাই এই দুই মাস আগে কোন পালে রা ঠাকুরের দায়িত্ব নিতে চায় না জোর করে তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়। গতকালকে বাড়ি থেকেই বেরিয়ে প্রথমে চলে গিয়েছিলাম গতবার যেখানে ঠাকুর বায়না দিয়েছিলাম সেখানে। আমাদের বাড়ি থেকে দূরত্ব বেশ অনেকটাই। তবে সেখানে গিয়ে দেখলাম অনেক ঠাকুর তৈরি করা রয়েছে। তবে ওখানকার ঠাকুর গুলো অনেকটাই বড় বড়।


ভিডিও লিংক

আমাদের তরুণী পুরে বারোয়ারি টা একদমই ছোট অত বড় বড় ঠাকুর ঘরের মধ্যে ঢুকবে না ।আবার আমাদের ঠাকুরের বাজেটে ও আসবে না ওই ঠাকুর গুলোর দাম অনেকটাই বেশি। প্রায় এক লাখের কাছাকাছি। প্রত্যেক বছর আমাদের গ্রামে কেউ না কেউ ঠাকুর দেয়। ওদের মানসিক থাকে। তাই প্রত্যেক বছর ঠাকুর গুলো তারাই দেয়। ওখানে প্রত্যেকটি ঠাকুর দেখছিলাম। ওখানকার শিল্পীরা ঠাকুর গুলো তৈরি করে রেখে চলে গিয়েছে দেশের বাইরে মা দুর্গার মূর্তি বানানোর জন্য। উনার বউ ছিল ।ওনার বউরের সাথে কথা বলা হলো উনি আবার আমাদের স্কুলে পড়তেন। তাই আমাকে চেনেন উনার সাথে খানিকটা গল্প করলাম। গল্প করার পর ওখান থেকে চলে এসেছিলাম। আমাদের কাছাকাছি বিখ্যাত শিল্পী শংকর পালের কারখানায়। শংকর পাল গত বছরেই প্রয়াত হয়েছেন ।তাই এ বছরে ওনার ছেলে সমস্ত ঠাকুরের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে।


ভিডিও লিংক

ছেলের বয়স বেশি না খুবই ছোট ছেলে ।তবুও নিজের কাঁধে সমস্ত দায়িত্ব তুলে নিয়েছে। তবে উনার কারখানায় ঠাকুরের দাম প্রচুর। তাই ওখানে আর বায়না দেওয়া হয়নি। বেশ খানিকক্ষণ আমরা দুজনে মিলে উনার কারখানায় সমস্ত ঠাকুর দেখলাম। কিছু ছবি আর ভিডিও সংগ্রহ করে নিয়েছিলাম। এরপরে ওখান থেকে চলে গিয়েছিলাম আমাদের কৃষ্ণনগরে কাছাকাছি ষষ্ঠী তলা বলে একটা জায়গায়। সেখানে আর এক প্রখ্যাত শিল্পী অলোক পাল ওনার অনবদ্য হাতের কাজ। প্রথমে উনার কারখানা আমরা খুঁজে পাচ্ছিলাম না ।কারণ কোনদিনই আমরা ওনার কারখানায় যায়নি। ওনার কারখানা টা একটু ভিতর দিকে। যাই হোক খুঁজে পাওয়া মাত্রই ঢুকে পড়েছিলাম ওনার স্টুডিওতে। বর্ষাকালে পালদের কাজকর্ম করা সত্যিই খুবই কষ্টকর ।কারণ প্রত্যেকটি কারখানার ওপরে টিনের সেড দিয়ে তৈরি চার পাশটা ফাঁকাই থাকে ।এই বৃষ্টিতে তাদের কারখানা তে জল জমে রয়েছে। এছাড়াও বৃষ্টির সময় মাটির কাজ করতে ভীষণ কষ্ট হয়।

IMG_20250721_213816.jpg

তাতে আবার বড় বড় মূর্তি সেগুলো শুকোতে ভীষণ দেরি হয়। শিল্পী অলোক পালের সাথে বেশ খানিকক্ষণ কথোপকথন হওয়ার পর উনি রাজি হয়েছেন আমাদের ঠাকুর তৈরি করার জন্য ।তবে এখনো বায়না দেওয়া হয়নি। উনি এখন চারিদিকে জগদ্ধাত্রী ঠাকুর করতে ব্যস্ত। কারণ মা দুর্গা পূজা হওয়ার কিছু দিনের পরেই জগদ্ধাত্রী পূজা ।আমাদের কৃষ্ণনগরে দুর্গাপুজোর থেকেও জগদ্ধাত্রী পূজো নিয়ে বেশি মাতামাতি হয়। এই তিনটে শিল্পী আমি তাদের কিছু হাতের কাজ ভিডিওর মাধ্যমে আপনাদের কাছে শেয়ার করব। এখন প্রত্যেকটি মূর্তি কাঁচা অবস্থায় ।তাই বোঝা সম্ভব নয়। ঠাকুর পুরো কমপ্লিট হওয়ার পর সেই ছবিও আপনাদের মাঝে শেয়ার করব ।তবে আপনারা বুঝতে পারবেন শিল্পীদের অসাধারণ প্রতিভা। ভিডিও লিংক দেওয়া থাকলো আপনার চাইলে দেখতে পারেন।


আজ এইখানেই শেষ করছি। আবার অন্য কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হব আগামীকাল। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

Sort:  
Loading...