লাউ চিংড়ি রেসিপি
নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজকে নতুন একটা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে আশা করছি সকলেরই ভালো লাগবে।
গরমকালে বাঙ্গালীদের প্রত্যেক ঘরে ঘরে লাউ চিংড়ির কদর খুব। লাউ ফেলে প্রচুর উপকার পাওয়া যায়। লাউ এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে জল থাকে ।যা জলের পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। লাউ খেলে ত্বক চুল ঠিক থাকে। এছাড়াও দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে লাউ খুবই উপকারী। লাউ এর মধ্যে ক্যালসিয়াম ফসফরাস আরো অনেক উপাদান রয়েছে। এর ফলে দেহের ঘাম জনিত লবণের ঘাটতি দূর করতে সাহায্য করে।লাউ খেলে এইরকম প্রচুর উপকার হয়।
এরকম রেসিপি প্রতিনিয়ত তৈরি করলে অনেক উপকার পাওয়া যায় আবার মুখরোচক খাবার হিসেবেও খাওয়া যায়। দুপুরবেলায় গরম গরম ভাতের সাথে লাউ চিংড়ি রেসিপি খেতে দুর্দান্ত লাগে। সব রকম সবজির মধ্যেই কিছু না কিছু গুনাগুন রয়েছে কোন টাতে বেশি আবার কোনটাতে কম।লাউ বিভিন্ন ধরনের হয় ।ছোট ,বড় ,মাঝারি সব আকৃতির ।আপনারা আপনাদের প্রয়োজন মত একটা লাউ নিয়ে নেবেন ।আমি আমাদের প্রয়োজনমতো একটা লাউ নিয়েছি ।চলুন তাহলে শুরু করি আজকে লাউ চিংড়ি রেসিপি।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | বড়ো সাইজের লাউ | ১ টা |
২ | আলু | ২ টো |
৩ | চিংড়ি মাছ | ৩০০ গ্ৰাম |
৪ | কাঁচা লঙ্কা | ৭টা |
৫ | আদা | ৫০ গ্ৰাম |
৬ | রসুন | ৪ কোয়া |
৭ | জিরে | ১ চামচ |
৮ | টমেটো | সামান্য |
৯ | ধনে গুঁড়া | ১ চামচ |
১০ | মিট মসলা | ১ চামচ |
১১ | সরষের তেল | ৫০ গ্ৰাম |
১২ | গোটা জিরে | সামান্য |
১৩ | শুকনো লঙ্কা | ১ টা |
১৪ | হলুদ | ১ চামচ |
১৫ | লবণ | ২ চামচ |
১৬ | গরম মসলা | ১ চামচ |
১৭ | মুগডাল | ২৫ গ্ৰাম |
প্রথম ধাপ
একটা বড় সাইজের লাউ নিয়েছি ।লাউ টাকে খোসা ছাড়িয়ে বীজগুলো ফেলে দিয়েছি। এরপরে টুকরো টুকরো করে কেটে একটা কুরুনির সাহায্যে লাউ গুলো কুঁড়ে নিতে হবে ।আপনারা চাইলে বটির সাহায্যে কুচি কুচি করে কেটে নিতে পারেন। আমার মনে হয় কুরুনির সাহায্যে কুঁড়ে নেওয়ায় সুবিধা হয়।
দ্বিতীয় ধাপ
এরপর পরিমাণমতো চিংড়ি মাছ ভালো করে পরিষ্কার করে বেছে ধুয়ে লবণ, হলুদ মাখিয়ে রেখে দিতে হবে। এর সাথে পরিমাণ মতো সমস্ত মসলা রেডি করে রেখে দিয়েছিলাম। দুটো আলু খোসা ছাড়িয়ে ভালো করে ধুয়ে কুরুনি দিয়ে কুঁড়ে নিয়েছি।
তৃতীয় ধাপ
এবারে গ্যাস অন করে একটা কড়াই বসিয়ে দিয়েছি। কড়াই গরম হলে কড়াইতে পরিমাণমতো তেল দিয়ে দিয়েছি। তেল গরম হলে চিংড়ি মাছ গুলো ভালো করে লাল লাল করে ভেজে নিতে হবে। সমস্ত মাছ ভাজা হয়ে গেলে একটা পাত্রে তুলে রেখে দিতে হবে।
চতুর্থ ধাপ
সমস্ত মাছ তুলে নেওয়ার পরে ওই কড়াইতে আরো খানিকটা তেল এড করে গরম তেলের মধ্যে একটা শুকনো লঙ্কা আর সামান্য পরিমাণে গোটা জিরে দিয়ে দিতে হবে। এরপর পরিমাণ মতো মুগের ডাল ভালো করে ভেজে নিতে হবে।
পঞ্চম ধাপ
মুগের ডাল ভালো করে ভাজা হয়ে গেলে কুঁড়ে রাখা লাউ গুলো কড়াইতে দিয়ে দিতে হবে। এরপর পরিমাণ মতো লবণ ,হলুদ দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করতে হবে।
ষষ্ঠ ধাপ
এরপর কুড়ে রাখা আলু লাউ এর মধ্যে দিয়ে দিতে হবে।
সপ্তম ধাপ
এবারে ভালো করে নাড়াচাড়া করে পেস্ট করে রাখা সমস্ত মসলা দিয়ে দিতে হবে। মসলা তে আমি ব্যবহার করেছি লঙ্কা ,আদা ,রসুন, টমেটো ,জিরে সমস্ত কিছু পেস্ট করে নেওয়ার পর ধনে গুঁড়ো আর মিট মসলা ভালো করে মিশিয়ে নিয়েছিলাম।
অষ্টম ধাপ
সমস্ত মসলা দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিয়ে খানিকক্ষণের জন্য ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে। কিছুক্ষণ পর ঢাকনা খুলে ভেজে রাখা চিংড়ি মাছগুলো লাউ এর মধ্যে দিয়ে দিতে হবে।
নবম ধাপ
আবারো খানিকক্ষণ নাড়াচাড়া করে ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে ।এখানে আমি কোন জল ব্যবহার করিনি। কারণ লাউ থেকেই প্রচুর পরিমাণে জল বের হয়।
দশম ধাপ
এরপরে ঢাকনা খুলে পরিমাণ মতো গরম মসলা দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করে নামিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে লাউ চিংড়ি। আমি এখানে সানরাইজের গরম মসলা ব্যবহার করেছি।
লাউ চিংড়ি নামটা শুনলেই যেন জিভে জল আসে। এই পদটি খেতে দুর্দান্ত লাগে। এই রেসিপিতে আমি বিশেষ কিছু উপাদানও ব্যবহার করিনি। একদম ঘরোয়া পদ্ধতিতে সব সময় রান্না করার চেষ্টা করি। বাইরে কোন উপকরণ ছাড়াই আমি সবসময় রান্না করি। আপনারা চাইলে এইরকম পদ্ধতিতেই রেসিপিটি বাড়িতে তৈরি করতে পারেন। আশা করি রেসিপিটি খেতে অসাধারণ লাগবে। আমি আমার প্রয়োজন মত সমস্ত উপাদানের পরিমাণ দিয়ে দিয়েছি। আপনারা চাইলে আপনাদের পরিমাণমতো সবকিছু ব্যবহার করবেন।
আজ এইখানেই শেষ করছি। আবার নতুন কোন রেসিপি নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
লাউ চিংড়ির এই রেসিপিটি সত্যিই অসাধারণ লাগলো আপু। ধাপে ধাপে সুন্দরভাবে বুঝিয়েছেন যা দেখে রান্না করা খুবই সহজ হবে। লাউ ও চিংড়ির কম্বিনেশন ভাতের সাথে সত্যি দুর্দান্ত লাগে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। অপেক্ষায় রইলাম আরো নতুন রেসিপি।