আব্বু আর আমি

in Incredible Indialast month

আসসালামু আলাইকুম। আশাকরছি সবাই ভালো আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। ইন্ডিয়ান বাসী, বাংলাদেশ বাসী,ও ইনক্রিডিবল ইন্ডিয়া কমিউনিটির সবাইকে জানাই, আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সবার প্রতি আমার ভালবাসা রইল।


এই পৃথিবীর বুকে তুমি যা কিছুই করো না কেন, এক সময় পৃথিবী তোমাকে তার সবকিছুই সঠিক সময়ে ফেরত দেবে। একসময় মানুষের শক্তি, অহংকার, শরীর, সবকিছুই থাকে সময়ের ব্যবধানে শেষ হয়ে যাবে। আমি এই কথাগুলো বলছি কারণ গতকালকে আমি আমার আব্বাকে নিয়ে একটি স্থানে গিয়েছিলাম, আনোয়ার ভাইয়ের বাসায়, এবং ভাইয়ের সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা ছিল। ফোনে সেটা বলা সম্ভব ছিল না, তাই সরাসরি দেখা করতে গেলাম।

1000011737.jpg

প্রতিদিনের মতো, সকালে প্রায় নয়টায় ঘুম থেকে উঠলাম। ওঠার পর আব্বু বললেন, আমাকে নিয়ে আব্দুল্লাহপুরে যেতে হবে, নাস্তা করে গোসল করে আব্বার সাথে যেতে হবে। তাই কোনো কিছু না ভেবে, সকালবেলা নাস্তা করে গোসল করে রেডি হয়ে আব্বু আর আমি বাসা থেকে বের হলাম আব্দুল্লাহপুরের উদ্দেশ্যে।

আব্বু তো হাঁটতে পারে না, তার উপরে আমাদের আবার ওভার ব্রিজ পার করতে হবে। সত্যি কথা বলতে, আব্বুকে ব্রিজের নিচ থেকে উপরে উঠতে প্রায় ১৫ মিনিট সময় লেগেছিল এবং ওইপাশে আরও ১৫ মিনিট সময় লাগলো। মোট ৩০ মিনিটে আমরা কষ্ট করে ব্রিজটি পার হলাম।

1000011736.jpg

এরপর রাস্তার পাশ থেকে একটি সিএনজি ঠিক করে চড়ে বসলাম। সিএনজিতে যখন BNS সেন্টারের সামনে আসলাম, তখন দেখি রাস্তায় বিশাল জ্যাম। সকল গাড়ি ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে যাচ্ছে। সিএনজি নিয়েছিলাম যাতে ফ্লাইওভার দিয়ে সরাসরি আমাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি। কিন্তু রাস্তার সমস্যার কারণে ফ্লাইওভারের ওপর দিয়েই যেতে হলো।

আবদুল্লাহপুরে পৌঁছাতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লেগে গেল। সিএনজি ফ্লাইওভারের নিচে নামতে পারছিল না, কারণ রাস্তার কাজের জন্য অনেকটা ভাঙা ছিল। এখন আব্বুকে নিয়ে একটা বড় সমস্যায় পড়লাম। তবে, একজন মানুষের সাহায্যে নিয়ে আব্বুকে ধরে আমরা ফ্লাইওভারের ভাঙা জায়গাটা পার হলাম। ছবি তোলার কথা ভুলে গেছি ওই জায়গার।

1000011740.jpg

1000011741.jpg

যারা ঢাকার আব্দুল্লাহপুরে গিয়েছেন, তারা জানবেন যে এখানে ঢাকা জেলার বিভিন্ন স্থানের গাড়ি চলে আসে। আমরা যেই রাস্তা পার হচ্ছিলাম, সেখানে গাড়ির সমাগম ছিল ব্যাপক। কিছুটা বিভ্রান্তির মধ্যে আমরা রাস্তাটা পার করলাম, পরে পুলিশ সার্জেনের সাহায্যে অবশেষে আনোয়ার ভাইয়ের বাসায় পৌঁছালাম।

আনোয়ার ভাই আমাদের দেখে বেশ রাগ করলেন কেন আব্বাকে নিয়ে এত কষ্ট করে এসেছি। কিন্তু, ব্যক্তিগত কিছু কাজ ছিল, যা দরকার ছিল। সেজন্য এত কষ্ট করে আনোয়ার ভাইয়ের বাসায় আসা। এছাড়া আনোয়ার ভাইও অসুস্থ ছিলেন।

1000011296.jpg

পরে, দুপুরের খাবার খেয়ে, আব্বু আর আমি একটা অটো রিক্সা নিয়ে আব্দুল্লাহপুরে বাস স্ট্যান্ডে চলে আসলাম। রাস্তায় এসে দেখি, কোনো সিএনজি পাওয়া যাচ্ছে না এবং খিলক্ষেতের জন্য ৫০০ টাকা চাওয়া হচ্ছিল। শেষে সিএনজির সঙ্গে রাগ করে বিরাটি বাসে চড়ে বাসায় ফিরে আসলাম।

1000011738.jpg

বৃদ্ধ বয়স হলে মানুষের অনেক সমস্যায় হয়ে থাকে। যা,আমি আর আমার বাবাকে নিয়ে মাঝে-মাঝে উপলব্ধ করি। এবং তাদের কথাবার্তা তাদের চিন্তা-ভাবনা বাচ্চাদের মতন হয়ে থাকে। পৃথিবীর সকল বাবা-মাকে আল্লাহ যেন সুস্থতা দান করে। আমার এই ছোট্ট একটি জীবনের গল্প দিয়ে আজকের পোস্টটি শেষ করলাম। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহাফেজ!


JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7yctNbUfy3Svm873NHceMEBkiU7QugfFD3RdWkWB8D5Nn71Vnqc38zTwcdMtsxGBY9bLpzWCxcXrK7yhhF5vsc2ofGXjYS.png

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



◦•●◉✿ধন্যবাদ সবাইকে লেখাটি পড়ার জন্য।✿◉●•◦

২৭, ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

Sort:  
Loading...
 last month 

আসলে আমরা বৃদ্ধ মানুষের দিকে তাকালে অনেক কিছুই বুঝতে পারি জীবন সম্পর্কে।। আপনার বাবা বয়স হওয়ার কারণে এখন আর আগের মত হাঁটাচলা করতে পারে না।।

পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম কতটা কষ্ট করে আনোয়ার ভাইয়ের বাসায় গিয়েছিলেন।।

 last month 

ধন্যবাদ ভাই আপনাকে 💕

 last month 

বর্তমান সময়ে যেমন আমাদের শরীরের শক্তি আছে আমাদের বুদ্ধি আছে মেধা আছে আমরা আমাদের সবকিছু কাজে লাগিয়ে খুব তাড়াতাড়ি যে কোন জায়গায় পৌঁছাতে পারি যখন আমরাও বৃদ্ধ হয়ে যাব আপনার আব্বুর মত তখন কিন্তু আমাদের অনেক সময় লাগবে আমি আব্দুল্লাহপুর গিয়েছি ওখানে যেতে কত পরিমানে কষ্ট হয় আবার ফিরে আসতে কত পরিমাণে কষ্ট হয় সেটা আমার জানা আছে।

বিশেষ করে ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে যাওয়া আশা করা অনেক বেশি ট্যাব একটা ব্যাপার আপনার বাবা সঠিকভাবে পৌঁছাতে পেরেছেন এটা দেখেই ভালো লাগছে ঢাকা শহরের একটা জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে ৫০০ টাকা ১০০০ টাকা সিএনজি ভাড়া যেটা আমার কাছে অবাক করার বিষয় যাইহোক অবশেষে আপনি বাসে করে আপনার বাবাকে নিয়ে ফিরে এসেছেন জানতে পেরে ভালো লাগলো।

 29 days ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য আপু