একটি জীবনের গল্প

in Incredible Indialast month

আসসালামু আলাইকুম। আশাকরছি সবাই ভালো আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। ইন্ডিয়ান বাসী, বাংলাদেশ বাসী,ও ইনক্রিডিবল ইন্ডিয়া কমিউনিটির সবাইকে জানাই, আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সবার প্রতি আমার ভালবাসা রইল।


1000010890.jpg

আজকের সকালটা ছিল প্রতিদিনের মতন সাধারণ-সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঘুম থেকে উঠলাম! ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সেরে ফেললাম। কিছু সময় পর, কোন এক কারণে বাড়ির বাইরে বের হলাম। বাড়ির গেটের সামনে ময়লা, সিমেন্টের বস্তা, বালু ইত্যাদি পড়ে ছিল। প্রায় অনেকদিন ধরে পাশের বাড়ির কাজ চলছিল, যার জন্য এসব তাদের বাড়ির জিনিস আমাদের গেটে রেখেছিল। আমি মালিককে ডেকে বললাম, রাস্তায় অনেক জায়গা রয়েছে, এই গুলো সেখানে রাখুন, আমাদের বের হওয়া সমস্যার হয়ে যাচ্ছে। পরে তাৎক্ষনিক ভাবে বাড়ির মালিক তার ভুল স্বীকার করে ওই পাশে রাখলো।

1000010742.jpg

এরপর দোকানের দিকে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ করে সকাল বেলায় আমার এক বন্ধুর সাথে দেখা হয়ে গেল। আমরা কিছুক্ষণ কথা বললাম, এর মধ্যেই বন্ধুর ফোন এলো। ফোনে জানলাম, তার বড় আপু অ্যাক্সিডেন্টে করেছে। তৎক্ষণাৎ বন্ধুর সঙ্গে হাসপাতালে চলে গেলাম।

1000011307.jpg

হাসপাতালে পৌঁছানোর পর শুনলাম, বন্ধুর বড় আপু মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন, হাতের আঙুল ভেঙে গেছে এবং মাথা থেকে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আশেপাশের মানুষরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিল। দুর্ঘটনার সময় সে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। আপু ৩০০ ফিট দিয়ে পূর্বাচলে যাচ্ছিলেন , রাস্তায় পার হবার সময় একটি গাড়ি এসে তাকে ধাক্কা দিয়ে দূরে ফেলে দেয়।

বন্ধু তার পরিবারকে ফোন করে বলল, তোমরা দ্রুত হাসপাতালে আসো। হাসপাতালের ডাক্তার জানালেন, রোগীকে এক ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন খুবই ইমারজেন্সি। তার রক্তের পয়েন্ট মাত্র ৫, যা সাধারণত একটি মানুষের ১২ বা ১৪ হওয়া উচিত।

1000011309.jpg

1000011310.jpg

বন্ধুর পরিবারের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নিলেন যে, তাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাবে। সৌভাগ্যক্রমে, তার আপুর রক্তের গ্রুপ আমার সাথে মিলে যায়। আমি মাঝে-মাঝে রক্ত দান করি, এবং রক্তদান আমার কাছে ভালো লাগে । রক্তদান করার পর মনের মধ্যে এক ধরনের প্রশান্তি অনুভব হয়, শরীরও হালকা লাগে, মনটাও ফুরফুরা লাগে।

আমার রক্তদান শেষ হলে, বন্ধুটি আমাকে বলল, ভাই, তোমার এই ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়। বন্ধুর চোখে ভালোবাসা দেখে আমি উপলব্ধি করলাম যে, রক্তদানের সম্পর্ক শুধু রক্তের মাধ্যমে হতে পারে না, মাঝে-মাঝে দূরের মানুষও খুব কাছের হয়ে ওঠে।

1000011312.jpg

কিছুক্ষণ পর, বন্ধুর বোনকে অ্যাম্বুলেন্সে করে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। আমি হাসপাতাল থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় ফিরে আসলাম। রাতে ফোন করে জানতে পারলাম, বন্ধুর আপুর অবস্থা এখন অনেকটা উন্নতি হয়েছে, এবং রক্তক্ষরণও অনেকটা কমেছে।

আজকের এই ছোট্ট জীবনের গল্প দিয়ে আমি আমার পোস্টটি শেষ করছি। আমাদের সবার উচিত মাঝে-মাঝে রক্ত দান করা। মনে রাখবেন, আপনার রক্তের মাধ্যমে এক জীবনের অপার সম্ভাবনা রক্ষা হতে পারে।

ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।


JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7yctNbUfy3Svm873NHceMEBkiU7QugfFD3RdWkWB8D5Nn71Vnqc38zTwcdMtsxGBY9bLpzWCxcXrK7yhhF5vsc2ofGXjYS.png

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



◦•●◉✿ধন্যবাদ সবাইকে লেখাটি পড়ার জন্য।✿◉●•◦

২৫ শে, ফেব্রুয়ারি , ২০২৫

Sort:  
Loading...
 last month 

রক্ত দেয়ার মত ভাল কাজ হয়তোবা এই পৃথিবীতে আর কিছুই হতে পারে না রক্ত দেয়ার মাধ্যমে একজন মানুষের জীবন বেঁচে যায় আজকে আপনি সেই মূল্যবান কাজ করেছেন যেটা দেখে সত্যিই অনেক বেশি ভালো লাগছে আপনার বন্ধুর বোন অসুস্থ হয়ে পড়েছিল কিন্তু আপনি সঠিক সময়ে রক্ত দিয়ে তাকে আবারও এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার আরো একটা পথ তৈরি করে দিয়েছেন জানি সব কিছুই আল্লাহতালার ইচ্ছা তবে আপনি উছিলা ছিলেন এটা জানতে পেরে ভালো লাগলো অসংখ্য ধন্যবাদ এত মহৎ একটা কাজ করার জন্য ভালো থাকবেন সব সময়।

 last month 

জীবন এমনই কখন কোন দিক থেকে কারো বিপদ আসবে সেটা আমরা কেউ জানিনা।। আপনার বন্ধুর বোন হঠাৎ করে রাস্তা বাড়াতে এক্সিডেন্ট করেছে আর যেমন শুনলাম খুবই ভয়ানক ভাবি এক্সিডেন্ট করেছে।। কোথায় আছে বিপদের সময় কোন কিছু কাছে থাকে না কিন্তু এক্ষেত্রে অনেকটাই ভিন্ন রক্ত প্রয়োজন আর আপনার রক্তের সাথে মিলে গেল এটা অনেকটা সৌভাগ্যের।।