মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখা,,,।
জন্মগ্রহণ করেছি যখন আজ হোক বা কাল মৃত্যু স্বাদ অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে, আমাকে কি বা আপনাকে প্রত্যেক টা প্রাণীকেই, ভীষন অরুচি কর, তবুও খেয়ে যাচ্ছি আস্ত জীবনের আয়ু, মৃত্যুকে আমরা প্রত্যেকটা মানুষ ভয় করি, আর ভয় করে ও কি এর হাত থেকে আমরা পার পাবো কখনোই না,,।
আজ বারান্দায় বসে একা একা ভাবছিলাম গত মাসে হয়ে যাওয়া আমার সাথে কিছু দিনের কথা,,আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে আমরা কখনো কখনো এমন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করি যেখান থেকে অনেক কিছু শিখি,অনেক কিছু সম্মুখীন হয়, ঠিক তেমনি গত মাসে নতুন করে শিখেছিলাম কি ভাবে নিজের সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয়, আমরা একটু বেঁচে থাকার জন্য কত আকুতি করি,,।
আর যখন বেঁচে যাই তখন আমরা হিংসা অহংকার, মিথ্যা কত কিছুর সাথে যুক্ত হই,আমরা মৃত্যুকে ভয় পাই কিন্তুু কখনো চিন্তা করি না মৃত্যুর পরে কি হবে,পরকালের জন্য কতটুকু সঞ্চয় করতে পেরেছি। মৃত্যুর জন্য কতটুকু নিজেকে প্রস্তুত করেছি। এটা আমার মনে হয় কম মানুষই চিন্তা করে,,,যে কথা বলছিলাম।
এবার আমি দ্বিতীয় বার মা হলেও সত্যি কথা বলতে প্রথম বারে, আমি এত ভয় পাইনি যত ভয় এবার পেয়েছি,। আমি যখন ওটিতে গিয়েছিলাম তখন ভয় কাজ করছিলো ঠিকই তবে খুব একটা না। কিন্তুু বাবু হওয়ার পরে যখন আমাকে আই সি ইউ তে নিয়েছিলো। তখন আমি দেখেছি মানুষ কি ভাবে মৃত্যুর সাথে লড়াই করে।
একটু বেঁচে থাকার জন্য মানুষ প্রাণ পণ চেষ্টা করে,আই সি ইউ এমন একটা জায়গা যেখানে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পরে মানুষ খুব ভাগ্য নিয়ে ফিরে আসে ,আমার জীবনের প্রথম এইতো কয়েক দিন আগে সেখানে গিয়ে ঘুরে এসেছি, ঘুরে এসেছি বলে ভুল হবে, বাবু হওয়ার পরে একটা দিন সেখানে আমাকে রাখা হয়েছিলো কিছুটা সমস্যার কারণে,,
আই সি ইউ তে ভর্তি হওয়ার পরে, আমি মৃত্যুটা কে খুব কাছ থেকে দেখেছি। ওখানে ভর্তি হওয়ার পরে আপন জন কেউ কে কাছে যেতে দেয় না, আর যদিও দেয় দুই থেকে এক মিনিটের জন্য, ওখানে নেওয়ার পর আমাকে একটার পর একটা ইনজেকশন স্যালাইন দিতেই ছিলো,যদি ও এগুলো আমার শরীরের জন্য ভালো সে জন্যই দেওয়া হয়েছিলো, তবে আমার জন্য ছিল খুবই ভয়ানক একটা পরিস্থিতি।
https://pixabay.com/photos/operation-operating-room-surgery-1807543/
ভয়ে আমার মুখ একদম শুকিয়ে আসছিলো এমন সময় পাশে আমার একটা আপন মানুষ ছিল না। আসতেই দিবে না কিভাবে আসবে। একটু পানির জন্য আমি প্রত্যেকটা নার্সকে বলেছিলাম। কেউ একটু পানি দেয়নি কারণ, ইনজেকশন স্যালাইন চলাকালীন পানি রোগীকে পানি দেওয়া নিষেধ। কিন্তুু পানির জন্য আমার পুরো শরীরটাই শুকিয়ে যাচ্ছে কথা পর্যন্ত বলতে পারছিলাম না তখন,
ঠিক এমন সময় একটা সংবাদ আসলো আমার সামনের সিটের লোক টা মারা গিয়েছে,,তখন নিজেও বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম, অন্যদিকে কাছে একটা সাহস দেওয়ার মানুষ পর্যন্ত নেই, শুধু আঁঝড়ে চোখের পানি পড়ছিলো, ঠিক এমন সময় আমাকে একটু সাহস দেওয়ার জন্য এসেছিলো আমার হাজব্যান্ড,,,।
তাকে দেখার পরে একটু সাহস পাচ্ছিলাম, সে আমার কাছে আসার পরে তার হাত ধরে আমি শুধু একটা কথাই বললাম আমায় একটু পানি দাও, সে কোন ভাবে এই রাজি হতে চাইছিলো না, এক পর্যায়ে তাকে আমি বলেই ফেললাম তোমার কাছে আমি কিছু চাই না শুধু এক ফোঁটা পানি দাও।
তখন বুঝতে ছিলাম একটু পানির কত মূল্য,সময় ছিল ৫ মিনিটের মতো,আমার আকুতি দেখে আমার হাজব্যান্ড এক পর্যায়ে আমার মুখে এক ফোঁটা পানি দিলো, যেটা আমার কাছে ছিলো অনেক বেশি দামী,এরপর তিনি আমাকে অনেক সাহস দিল এবং খানিক সময়ের মধ্যে চলে গেলো,আর আমি করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম তার থেকে আবার কি ফিরতে পারবো তার কাছে,,।
শুধু সৃষ্টিকর্তাকে ডাকছিলাম এবং আমার উপর দিয়ে যে ঝড়টা গিয়েছিল তখন সেটা মনে করলে এখনো শুকরিয়া আদায় করি যে তিনি আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, তখন আমি দেখেছি মৃত্যুবরণ করে, এইতো কিছুক্ষণ আগে এসেছে আর সে এবার ঘন্টা খানিকের মধ্যে মৃত্যুবরণ করে চলে যাচ্ছে সবকিছু ফেলে রেখে,,
আমাদের জীবনটা খুবই ছোট্ট আরে ছোট্ট জীবনে আমরা কত লড়াই বড়াই করি,আমাদের ভিতরে কত হিংসা অহংকার থাকে, কখনো কি এটা চিন্তা করি একদিনে পৃথিবী মায়া ছেড়ে সব কিছু রেখে চলে যেতে হবে, কখনো তো এটা চিন্তাও করি না যে এই জগত সংসার একদিন আমাকে মনেও রাখবে না।
রোগীর অবস্থা বুঝে ট্রিটমেন্ট করা হয়, যার হায়াত থাকে সে তো বেঁচে ফিরে আর যার থাকেনা সে তো চলে যায়। আমাকে তখন একটা দিনে এত ইনজেকশন স্যালাইন দেওয়া হয়েছিলো, দুই দিন পরে আমি আয়নার মুখ দেখি নিজেকে নিজে চিনতে পারছিলাম না,,।
আজ নিরবে একা একা বারান্দায় বসে যে কয়েক দিন আগে ফিরে গিয়েছিলাম।সে দিনের কথা মনে পড়লে আজও আমার গা শিউরে ওঠে তবে সব শেষে সৃষ্টিকর্তা কাছে শুকরিয়া আদায় করি , তিনি আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন,,। আমার এই জীবনে আর কোন কিছু চাওয়ার বা পাওয়ার আশা আকাঙ্ক্ষা কোনটাই নেই শুধু একটা ইচ্ছা যতদিনই বেঁচে থাকবো যেন সৎ পথে থাকতে পারি।
আমরা যখন একা থাকি পিছনের ভালো-মন্দ আমাদের কে তাড়া করে বেড়ায় সবকিছু মনে করিয়ে দেয়, তাইতো আজ আমার মনে পড়ছিলো এই দিনটির কথা, তো সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন অবশ্যই পরবর্তী পোস্টে দেখা হবে আল্লাহ হাফেজ।

Un placer saludarla querida amiga, entiendo a lo que se refiere, el solo pensar en nosotros provoca un gran temor, pero la situacion por lo que tuvo que pasar en mucho mas dificil, debemos valorar nuestra vida mientras que estamos sanos.
আমরা সামাজিক জীব মানুষ হয়ে যখন এই পৃথিবীতে বসবাস করেছে তখন আমাদেরকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে সেটা যে কোন মুহূর্তেই হোক না কেন তবে আমি আমার জীবনে প্রথম অবস্থায় যখন মা হয়েছিলাম তখন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করার হাত থেকে কিছুটা রক্ষা পেয়েছিলাম আজকে আপনি আপনার দ্বিতীয় বার মা হওয়ার অভিজ্ঞতাটা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন এজন্যই অনেকেই বলে থাকে মা হওয়া এতটা সহজ নয়।