Socially Useful Productive Work - Paper Bag (Theme - Global warming)
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। গতকাল আমি আপনাদের সকলকে শেয়ার করেছিলাম SUPW কী, এবং এর উদ্দেশ্য কি। বিদ্যালয়ে অথবা ক্লাসরুমে এই একটিভিটির উদ্দেশ্য আপনাদের সাথে আমি আগের দিন খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছি। এবং জানিয়েছিলাম যে আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করে নেব এই কাজটি আমি কিভাবে স্কুলে সম্পূর্ণ করলাম বাচ্চাদের সাথে। কিভাবে এই অ্যাক্টিভিটা সম্পূর্ণ হলো এবং বাচ্চারা এই বিষয়টি থেকে কি শিখতে পেল।
প্রথমেই বলি ক্লাস সিক্সের বাচ্চাদের নিয়ে আমি এই কাজটি সম্পন্ন করেছি। বরাবরই স্কুলে যাওয়ার পর থেকেই ক্লাস সিক্স আমার প্রচন্ড পছন্দ এর ক্লাস ছিল। এরা ছোট হলেও এত বাধ্য এবং সবকিছুতে এদের এত উৎসাহ দেখে আমি নিজেই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম প্রথম থেকে। তাই যখন এক্টিভিটি টা করব ভেবেছি, সাথে সাথেই মাথায় এসেছিল ক্লাস সিক্সের বাচ্চাদের কথা।
তবে ওদের সাথে এই এক্টিভিটি শেয়ার করার মতন আমি বেশি সময় পাইনি। কারণ আমার হাতের সমস্যার কারণে আমি অনেকদিন লিভ নিয়েছিলাম। দিনের দিন গিয়ে সকালবেলাতেই ওদেরকে সমস্ত ব্যাপারটা খুলে বলেছি।। আর যাবতীয় যা জিনিস লাগবে অর্থাৎ আর্ট পেপার, রং, দড়ি ,কাঁচি ,সবকিছুই আমি সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলাম ,যাতে বাচ্চাদেরকে আমি সবকিছু দিয়ে হেল্প করতে পারি।
ক্লাসে ঢোকার পর আমি আমার মতন করে দশজন ছাত্রীকে আমার টিমে নিয়ে নিয়েছিলাম। তারপর আমি কাজ শুরু করেছি। কাজটি এটাই ছিল যে একটি হাতের কাজ অর্থাৎ কিছু একটা এমন জিনিস বানাতে হবে যেটা socially useful.
আমি সম্পূর্ণভাবে চেষ্টা করেছি এক্টিভিটি টা ভালোভাবে শিক্ষার্থীদের সাথে একত্রিত হয়ে করার। চলুন, ধাপে ধাপে কি করা হয়েছে ,সেটা দেখে নেওয়া যাক।।
বিষয় - Socially Useful Productive Work
থিম - গ্লোবাল ওয়ার্মিং
প্রোডাক্ট - পেপার ব্যাগ
প্রথম ধাপ
আমি ক্লাস রুমে শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে নিয়েছি। তারপর তাদের একটি আলাদা জায়গায় বসিয়েছি। যেহেতু একই ক্লাসে আমার সহ শিক্ষিকারাও এই এক্টিভিটির সাথে যুক্ত ছিলেন, তাই ওনাদের মতো ওনারা টিম ভিত্তিক ছাত্রীদের আলাদা বসিয়েছিলেন। আমার টিমে দশ জন ছিল । আমি তাদেরকে একদিকে আলাদা করে বসিয়েছিলাম।
এরপর আমি বোর্ডে বিষয়বস্তুটি এঁকে সকলের সাথে বর্ণনা করে নিলাম ,যাতে বাচ্চাদের বুঝতে সুবিধা হয়।। কিভাবে কিভাবে কাজটা হবে, কি বিষয়ক কাজটা হবে, কেমন ভাবে করতে হবে, সেটা কিছুক্ষণ আলোচনা করে নিলাম ওদের সাথে।
দ্বিতীয় ধাপ
বাচ্চারা যখন কাজটা শুরু করল তখন আমি সকলকেই আলাদা আলাদা ভাবে সাহায্য করতে লাগলাম। প্রথমেই আপনারা দেখতে পাচ্ছেন একটি আর্ট পেপার কে ভাঁজ করে নেয়া হচ্ছে।।
তৃতীয় ধাপ
আমি প্রথমে বাচ্চাদেরকে কিছুটা দেখিয়ে দিয়েছি, যাতে ওরা একা একা পুরো কাজটা পরবর্তীতে সম্পন্ন করতে পারে।। এরপর আর্ট পেপারের দুই ভাগের একভাগ কাগজটিকে কেটে নেওয়া হল।
চতুর্থ ধাপ
কাগজটিকে দুই সেন্টিমিটার থেকে তিন সেন্টিমিটার মতন অংশে গ্যাপ রেখে ভাঁজ করে নিচ্ছি আর একবার। এবং যে জায়গাটা বাড়তি, সেই জায়গাটাকে আঠা দিয়ে আবার ফোল্ড করে দেয়া হবে।।
পঞ্চম ধাপ
এবার ঠোঙা র মতন তৈরি করতে নিচের দিকটা আমরা ঠিক এইভাবে মোরাবো ,যেভাবে আপনারা ছবিতে দেখছেন।
ষষ্ঠ ধাপ
মুড়িয়ে নেওয়ার পর আঠা দিয়ে আটকে দেব। যেমন কাগজের ব্যাগ তৈরি হয় ঠিক সেরকম ভাবে।
সপ্তম ধাপ
বাচ্চারা আমার প্ল্যান অনুযায়ী গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর একটি ছবি নিজেদের মতো করে এই ঠোঙ্গাটির উপর আকলো। রং করার সময় এবং ছবি আঁকার সময় আমি সকলকে হেল্প করলাম।
অষ্টম ধাপ
এবার ব্যাগগুলোকে ঝোলানোর ব্যবস্থা করতে হবে ,তাই ব্যাগগুলোর খোলা মুখের জায়গায় দুই পাশে দুটো করে ফুটো করে দড়ি দিয়ে ঝোলানোর ব্যবস্থা করে দেয়া হলো। আর এই ভাবেই খুব সহজেই তৈরি হয়ে গেল কাগজের তৈরি সমাজ সচেতন মূলক একটি ব্যাগ।
আমি গতকাল আপনাদের বলেছিলাম এই এক্টিভিটির নাম হলো Socially Useful Productive Work. যেটা আমরা সামাজিক ভাবে ব্যবহার করতে পারব, অথবা ক্লাস রুমের কাজে ব্যবহার করতে পারব। সেরম কিছু তৈরি করাই আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ।বিষয়টি যদি ওয়েস্ট মেটিরিয়াল দিয়ে হয় তাহলে তো আরো ভালো হয়। আপনি যদি ভেবে দেখেন তাহলে ফেলে দেওয়া যে কোন কাগজের টুকরো অথবা খবরের কাগজ দিয়েও এই ব্যাগ তৈরি করা সম্ভব।
আমি বাচ্চাদেরকে এই কাগজের ব্যাগটি তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছি এর পিছনে কারণ হলো, ওরা যেমন ব্যাগ বানানো শিখলো কাগজ দিয়ে ,এতে একটা হাতের কাজ ওদের শেখা হলো।। এই ব্যাগে করে ওরা ক্লাসের জিনিসপত্র বিদ্যালয়ের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বহন করতে সক্ষম হবে। শিক্ষিকা বিভিন্ন সময় ক্লাস টেস্ট নিয়ে থাকেন, তখন ক্লাস টেস্টের পৃষ্ঠাগুলো কিংবা দরকারি বিভিন্ন জিনিসপত্র ওরা এই ব্যাগের মধ্যে রেখে দিতে পারে।
এর সাথেই ব্যাগের সামনে ওরা নিজেরাই যে চিত্রটি এঁকেছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং বিষয়ক ,সেটা বারে বারে ওদেরকে সচেতন করাবে এবং ওরা নিজেরাও বিষয়টি অন্যকে বোঝাতে পারবে। এর ফলে পরিবেশ সংক্রান্ত ব্যাপারেও এই হাতের কাজটি যুক্তিযুক্ত বলে আমি মনে করেছি।
বাচ্চারা এত সুন্দর ভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছে এবং সকলে এত সুন্দর ভাবে হাতের কাজটিকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হয়েছে, এ কারণে আমি অনেক খুশি। আপনাদের সাথে এত সুন্দর একটা মুহূর্ত শেয়ার করতে পেরে আমারও ভালো লাগলো। আজকে এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকবেন।
সত্যি আপু আপনার কার্যক্রমটি প্রশংসনীয় ও অনুপ্রণামূলক। ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের নিয়ে গ্লোবাল ওয়ামিং এর মত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং তার এই অংশ হিসেবে তাদের দিয়ে হাতে কলমে পেপার ব্যাগ তৈরি করানো নিঃসন্দেহে এক অসাধারণ উদ্যোগ। ধাপে ধাপে কাজের বিবরণ ও শিশুদের অংশগ্রহণ সত্যি মুগ্ধ করার মত। এমন সামাজিকভাবে উপযোগী কাজ শিশুদের চিন্তা ও দক্ষতা বিকাশে বড় ভূমিকা রাখবে। আপনার পরিশ্রম ও ভালোবাসা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। আপনার জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা।