রাত দুপুরে চমক
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন ।আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি এক সারপ্রাইজের মুহূর্ত।।
১লা মে আমার মা-বাবার ৩০ তম বিবাহ বার্ষিকী ছিল। বিবাহ বার্ষিকী পালনের কোনো রকমই প্ল্যান আমাদের ছিল না। কারণ 12 ই মে আমাদের বাড়ির পুজো অর্থাৎ বুদ্ধ পূর্ণিমা সাথে বাড়ির দোতলার ঘরে গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠান এর আয়োজন জোর কদমে চলছিল।। এর সাথে ১২ই মে ঈশান এর জন্মদিন, তাই বলতে গেলে ১২ই মে একটা বড় অনুষ্ঠান হতে চলেছে। সেটার আয়োজন এর জন্যই আমরা সকলেই ব্যস্ত ছিলাম।
১২ তারিখের আগেই বাড়ির সমস্ত কাজ কমপ্লিট করতে হবে স্বাভাবিকভাবে। এই কারণে বাড়িতে প্রচুর পরিমাণে মিস্ত্রি কাজ করছিল একসাথে। বাবা মা প্রত্যেকদিন মিস্ত্রিদের পেছনে ছোটাছুটি করতে করতে এতটা পরিমাণে ক্লান্ত হয়ে যেত, যে এই সমস্ত নিয়ে ভাবার কোনরকম সময় ছিল না।। শুধুমাত্র আমার মাথাটা ছিল যে, আমার মা বাবার অ্যানিভার্সারির দিন আমি একটু স্পেশাল করে কেক এনে সেলিব্রেট করব। তার আগেই একটা অবিশ্বাস্য সারপ্রাইজ সকলেই পেয়ে গেলাম। আজকে সেই গল্পই শেয়ার করছি।
রাত তখন মোটামুটি পোনে বারোটা বাজে । এপ্রিল ৩১ এর। আমি ঈশান ঘুমিয়ে গেছি ততক্ষণে। বাড়ি হওয়ার পর থেকে মা-বাবা উপরে থাকতো ।আমি আর ভাই নিচে। যদি ওই বিষয়টি এখন উল্টে গেছে। যাইহোক মা-বাবা উপরের অর্থাৎ তিন তলার ঘরের ঘুমোচ্ছিল। আমি আর ঈশান এক তলাতে ছিলাম। নিচের ঘরগুলো একদম রাস্তার ধারে, রাস্তাতে কি হচ্ছে অথবা কারা যাতায়াত করছে ,সমস্ত কিছুই শোনা যায় ।কেউ যদি জানলায় ধাক্কা দেয় ,সেটাও স্পষ্টভাবে আওয়াজ আসে যেহেতু রাস্তার পাশেই জানলা।।
হঠাৎ করে আমার কেন জানি না মনে হল কেউ যেন ফিসফিস করছে ।যেহেতু আমি যেখানে শুয়ে থাকি তার ডানদিকেই জানলা। আমি হঠাৎ করে আঁতকে উঠলাম আর ভাবতে লাগলাম অনেক কিছু। হতেই পারে রাস্তার লোকজন ।আসলে আমাদের পাড়াতে অনেক রাত অব্দি মানুষজন জেগে থাকে। আর পাড়াতে ক্লাবের ছেলেরাও রয়েছে তারাও রাতের বেলায় হাঁটাচলা করে। এ কারণে বিষয়টা নিয়ে আমি অতটা গুরুত্ব দিলাম না। তারপরে শুয়ে পড়লাম।
এবার আবার যখন চোখটা বুঝি ,দমদম করে জানলায় ধাক্কা মারতে থাকলো। আমি তখন সত্যি সত্যি ভয় পেয়ে গেছি। আমি ভাবছি কে এত রাতে এরকম ডাকাডাকি করছে। তারপর মৌসুমী বৌদির গলার আওয়াজ পাওয়া গেল। বৌদি কাকে যেন বলছে ,কাকু কাকিমা এই ঘরে থাকে না। ওরা তিনতলার ঘরে শুয়ে। এই ঘরে তো ঈশা আর ঈশান শুয়ে আছে।
তখন আমি বুঝলাম বাবার বন্ধুরা এসেছে। আমি সাথে সাথে রেডি হয়ে ঠিকঠাকভাবে দরজা খুলে দিলাম আর হৈ-হুল্লোড় করতে করতে বাবার বন্ধুরা এবং কাকিমারা সবাই বাড়ির ভেতর ঢুকলো। ততক্ষণে জানতে পারলাম বাবাকেও ফোন করে বলা হয়েছে , সঞ্জয় দা শুভ বিবাহ বার্ষিকী। দরজাটা খুলুন। আমরা সবাই আপনার গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। বাবা নাকি প্রথমত কথাটা শুনে একেবারে ভেবেছিল ওরা সবাই মজা করছে।। যখন গেট খোলার আওয়াজ পেল ,তখন মা আর বাবা তাড়াতাড়ি নিচে নেমে আসলো।
তারপরে কি কি হল তা অন্যদিন শেয়ার করব। সারপ্রাইজটুকু আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিলাম আজ। এরকম অবাক করার সারপ্রাইজগুলো মাঝেমধ্যে বেশ আনন্দ দেয়। সেদিন এর আমরা সবাই কোনোদিন ভুলবো না।আজকে এখানেই শেষ করছি ।সকলে ভালো থাকুন।
You have been supported by the team:
Curated by: @adeljose
বেশ কিছু বছর আমরা নিজেরা নিজেরা কাকু কাকিমা বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি আর নিজেরাই খাওয়া দাওয়া করেছি। এ বছর যেহেতু ৩০ বছরের বিবাহ বার্ষিকী ছিল তাই খুব ধুমধাম করেই পালন করা হলো। কিন্তু সেদিন রাত্রিবেলা আমি তো ছাদ থেকেই সমস্ত ঘটনা দেখেছি। অত রাত্রিবেলা বলে আর তোমাদের বাড়িতে যায়নি। তাই ভিতরে কি হয়েছিল সেটা নিজের চোখে দেখিনি ছবিগুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে ওরা রাত দুপুরে এসে কি কান্ড ঘটিয়েছিল। কথাবার্তা হইচই সবকিছুই আমি ছাদ থেকে শুনছিলাম। সেদিন বেশ মজার ঘটনায় ঘটেছিল। এইসব স্মৃতি গুলোই আমাদের জীবনে ফ্রেম বন্দী হয়ে থেকে যাবে। ওরা এই ভাবেই যেন সারা জীবন সুস্থ থাকে আর ভালো থাকে এই কামনাই করি।