সকলের ভরসা - বিহারীর হোটেল

in Incredible India2 months ago

নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি একটি রাতের মুহূর্ত যেদিন আমাদের নিমন্ত্রণ ছিল।

20250419_223750.jpg

এপ্রিল মাসের ১৯ তারিখে আমার বাবার বন্ধুর বাড়িতে আমাদের সকলের নিমন্ত্রণ ছিল । আমাদের বাবার কমন ফ্রেন্ড এবং তাদের ফ্যামিলি সকলে ইভেন আমার পার্টনারের মা বাবাও সেখানে উপস্থিত থাকবে, এটাই কথা ছিল। আসলে ওদের বাড়িতে সেদিন নারায়ণ পূজো প্লাস বারের পুজো দেওয়া হয়েছিল । তাই সকাল থেকেই ওরা আমাদের যাওয়ার জন্য রিকোয়েস্ট করেছিল।

1000242697.jpg

সমস্ত কাজ সারা হয়ে যাবার পর রাত যখন মোটামুটি সাড়ে আটটা বাজে আমরা রেডি হয়ে আমাদের গাড়ি নিয়ে চলে গেলাম উত্তম জেঠুর বাড়িতে। উত্তম জেঠুর বাড়ি আমার বাড়ি থেকে মোটামুটি ১৩-১৪ কিলোমিটার দূরে ।তার বেশি হবে। এর আগেও আমি উত্তম জেঠুর কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি ।আমার বাবা গাড়ি ড্রাইভ করে সকলকে নিয়ে গেল জেঠুর বাড়ি।

20250505_234150.jpg

ওখানে পৌঁছে গিয়ে দেখি যে পুজো হয়ে গিয়েছে এবং এর সাথে দেখতে পেলাম আমার পার্টনারের মা-বাবাও সেখানে উপস্থিত। আমরা সবাই এক এক করে জড়ো হতে লাগলাম ,আর মহলটা একদম চেঞ্জ হতে থাকলো। বন্ধুবান্ধব সব এক জায়গায় হলে সত্যিই শান্ত মহল দুরন্ত হয়ে যায়।

আমি দুপুরবেলায় না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম ,তাই সন্ধে বেলা থেকে ভীষণ খিদে পেয়েছিল, ভাবলাম ওখানে গিয়ে প্রসাদটাই প্রথমে খাব। তাই বাড়ি থেকে কিছুই খেয়ে যাইনি। গিয়ে দেখি ওদের ওখানে রান্নার আয়োজন সেরকম কিছু করা শুরু হয়নি। হয়তো বারের পূজোতে বেশি লোক হয় না বলে, ওরা বুঝে উঠতে পারছিল না কতজন এর রান্না করবে ,আর আমরা যে কজন কাছের মানুষজন ছিলাম ,তাদেরকেই বলা হয়েছে। আমাদের সবাই যখন উপস্থিত হলো, সেই বুঝেই ওরা খিচুড়ি বসালো।

20250419_220835.jpg

তার আগে ফল প্রসাদ এবং সত্যনারায়ণের প্রসাদ দেয়া হচ্ছিল ।উত্তম জেঠুর দুই মেয়ে পূজা এবং নেহা দুজন মিলেই সমস্ত কাজ করছিল। আর এছাড়া বাড়িতে কাজের লোকজন তো ছিলই। খিদের চোটে আমি টপাটপ দুটো মিষ্টি খেয়ে নিলাম ।

20250419_220838.jpg

ওদিকে দেখতে দেখতে সবারই এক এক করে খিদে পেতে লাগলো। ওদিকে খিচুড়ি রান্না কিছুতেই সম্পূর্ণ হয় না। সামান্য একটা খিচুড়ি করতে এত দেরি হচ্ছে । আমরা ভেবেই কুল পাচ্ছিলাম না।

20250419_223655.jpg

উত্তম জেঠুর বাড়িতে বেশ বড় করে ধুমধাম করে লক্ষ্মী পূজা হয়, কোনদিনও এরকম অবস্থা দেখিনি। আসলে সেদিনকে পরপর দুটো পুজো, উত্তম জেঠুর শরীরটাও ঠিক নেই। তাই হয়তো পেরে উঠতে পারেনি। যে লোকটাকে রান্নার জন্য রাখা হয়েছিল, সেই লোকটা ঠিকমতো রান্নাই করতে পারছিল না ।এদিকে দশটা পার হয়ে যাচ্ছিল ।তাও খিচুড়ি হয় না ।আমরা কখন থেকে বসে থাকতে থাকতে আমি ,আমার বাবা ,ঈশান ,আমার পার্টনারের বাবা, সহেলি দি ,আমার বাবার বন্ধুর আরো দুই ছেলে-মেয়ে সবাই চলে গেলাম বিহারী হোটেলে।

20250419_225308.jpg

এই বিহারী হোটেল সম্পর্কে আমি পোস্টে আগেও লিখেছি। ওই জায়গা আমাদের একমাত্র জায়গা যেখানে আমরা খাবার পেয়ে থাকি ,যদি রাস্তায় আমাদের খাবার না জোটে।যতক্ষণ খিদে পাচ্ছে ততক্ষণ এ যদি একটা করে রুটিও খেয়ে নেয়া যায়, খিদেটা মিটে যায় ।কারণ বাচ্চারা সাথে ছিল এবং আমিও দুপুর থেকে কিছু খাইনি।

20250419_231041.jpg

তাই চলে গিয়েছিলাম সেখানে ।প্রসাদ খেতে এসে সেই বিয়ে বাড়ির মতন ঘটনা ঘটলো। সেদিন বিয়ে বাড়ি খেতে এসে যেমন আমরা বিহারীর হোটেলে রুটি তড়কা খেয়েছি। সেদিন কেও তাই হল ।আমরা প্রসাদ খেতে এসে খিচুড়ি হতে দেরি হচ্ছে দেখে, খিদের চোটে বিহারী হোটেলের রুটি তরকা খেতে চলে গেলাম।।

উত্তম জেঠুর বাড়ি থেকে বিহারীর হোটেল গাড়িতে খুব জোর তিন মিনিট। পৌঁছে গিয়ে সাথে সাথে রুটি আর তরকা অর্ডার করে দেয়া হলো।। আমরা সকলে মিলে তৃপ্তি করে খাওয়া-দাওয়া করলাম। আমার পার্টনারের বাবা বেশ অন্যরকম একজন মানুষ। ওনার সাথে আমার মজা করতে বেশ ভালই লাগে। আমি মজা করে জিজ্ঞেস করলাম জেঠু, তুমি ভুত দেখেছো ?

20250505_234234.jpg

আসলে আমরা কদম গাছের তলায় খোলা আকাশের নিচেই সেদিনকে খাওয়া দাওয়া করছিলাম ।বাবাই বলেছিল চেয়ার টেবিলটা বাইরে দিয়ে যেতে। তাই ওরা আমাদের জন্য খাবার ব্যবস্থা বাইরে করেছিল। আর সেদিনকে ছিল শনিবার। যখনই জিজ্ঞেস করলাম ভূত দেখেছে কিনা। জেঠু সাথে সাথে গল্প জুড়ে দিল। জেঠুর গল্প শুনতে শুনতে খাবারের মজা নিতে নিতে আমাদের পেট পুজো হয়ে গেল।জেঠু কি ভূতের গল্প বলেছিল, সেটা আপনাদের অন্যদিন বলব।

20250419_231231.jpg

আমাদের খাওয়াও শেষ ।ওদিকে উত্তম জেঠুর বাড়ি থেকে ফোন আসতে লাগল। আমার মা আমাদের সকলের ফোনে ফোন করছিল, বলতে লাগলো খিচুড়ি হয়ে গেছে, তোরা শিগগিরই আয়। এদিকে আমাদের পেট তো পুরো লোড। রাত দুপুরে আবার খিচুড়ি ,আমি তো ভেবেই নিয়েছিলাম আমি আর কিচ্ছু খাব না।। যাইহোক বাবা আবার গাড়ি চালিয়ে উত্তম-জঠুর বাড়িতে ঢুকলো, গিয়ে দেখি সবাই অলরেডি খেতে বসে গেছে।। আর এর সাথে গরম গরম খিচুড়ি সার্ভ করা হচ্ছে।

এর পরের মুহূর্তগুলো ভীষণ হাস্যকর। পরের দিন পোস্টে শেয়ার করব ,আজকে এইটুকুনি রাখছি।।

Sort:  
Loading...
Loading...
 2 months ago 

@isha.ish এমনি কি আর বলে শুরু পেতে গরু ধরে!😜
আরো একবার প্রমাণিত হয়ে গেলো, এদিকে মেয়ে কমেন্ট করতে পারে না, ভোট দেয় না কাউকে, লেখাতে গিয়ে কালঘাম ছুটে যায়, অন্যদিকে তরকা রুটি, হিন্দু, বিহারী, উড়িয়া, খ্রিস্টান কোনো হোটেল ঘুরতে বাকি নেই।

এরপর যেনো ভোটিং সিএসআই বৃদ্ধি পায়, সেটাও তোমার স্বার্থেই বলছি।
কথা শুনবে নিশ্চই।

 2 months ago 

সকলের সাথে মজা করার জন্য হুটহাট করে বেরিয়ে পড়ো। উত্তম জেঠুর বাড়িতে পুজোর নেমন্তন্ন ছিল সেখানেই সকলে মিলে উপস্থিত হয়েছিলে। সেখানে সকলে খুব মজা আনন্দ করে দিনটি কাটিয়েছো। উত্তম জেঠুর বাড়ি থেকে আবার বিহারী হোটেলে রুটি তড়কা খেতে চলে গিয়েছিলে পার্টনারের সাথে ভালোই ঘুরে বেড়াচ্ছে সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।