গীতা পাঠ

in Incredible India2 days ago

নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি খুবই সুন্দর কিছু মুহূর্ত। বেশ কিছুদিন আগে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম তুলসী মঞ্চের সামনের চাতালটা কিভাবে আমি ডিজাইন করেছি, তার প্রত্যেকটা ধাপ ।

জানিয়েছিলাম যে মৌসুমী বৌদির বাড়িতে তুলসী মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে এবং খুব সুন্দর করে সেটা লাল রং করা হয়েছিল। আর আমি নিজে থেকেই নিজের ইচ্ছাতে তুলসী মঞ্চের ওই চাতালটাতে সুন্দর করে আলপনা দিয়েছিলাম। এখনো ছাদ থেকে যখন আমি চাতালটার দিকে তাকাই ,আমার দেখলে মন ভরে যায় ।দূর থেকে জায়গাটা আরো সুন্দর দেখতে লাগে ।

20250212_185435.jpg

সেদিনকে বিকেল বেলাতেই ছিল গীতা পাঠ ।সাধারণত গীতা পাঠ নিজের বাড়িতে করলেও নাকি অপরের বাড়িতে করতে নেই ।যারা দীক্ষা নিয়ে থাকেন ,তারাই করতে পারেন অথবা ব্রাহ্মণ কিংবা বোষ্টমকে দিয়ে করাতে হয়। এগুলো আমার শোনা কথা।তাই এই নিয়ে আমি কোনো তর্ক করতে চাইনা।

20250212_194852.jpg

যদিও এ ব্যাপারে অনেকে বিশ্বাসী নয় ।এসব অনেকেই বিশ্বাস করেন না ।গতবারেও যখন মৌসুমী বৌদিদের বাড়িতে গীতা পাঠ এর আয়োজন করা হয়েছিল, তখন আমাকে গীতা পাঠ করতে বলা হয়েছিল ।আমি গীতা পাঠ করেছিলাম খুব সুন্দর করে। সমস্ত কিছু নিয়ম মাফিক হয়েছিল। কিন্তু পরে যখন আমাদের বাড়িতে যে ব্রাহ্মণ পূজা করে, তার সাথে এই বিষয়টি আলোচনা করি আনন্দসহকারে। সে কথা শোনা মাত্রই নিষেধ করে যে, আমি যেন এই কাজ না করি ।

20250212_184427.jpg

এমনকি আরো অনেক জনকে আমি কথাটা শেয়ার করেছিলাম যখন, তারাও বারণ করেছিল। কিন্তু মৌসুমী বৌদির শাশুড়ি অর্থাৎ জেঠির আবদার আমি কখনোই ফেলতে পারিনি। তাই আমি রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু বলেছিলাম ব্রাহ্মণ বা বৈষ্ণবকে গীতা পাঠ করার পর, যেভাবে দক্ষিণা কিংবা সিদে দেওয়া হয়, সেটা যেন না দেয়। শুধুমাত্র তুলসী মঞ্চে প্রসাদ ভোগ হিসাবে ফল ,মিষ্টি যেমন দেওয়া হয়, সেটাই যেন দেওয়া হয় থাকে।

20250212_194926.jpg

এই প্ল্যান মাফিক বিকেলবেলা থেকে সমস্ত কিছু ওরা শুরু করে দিয়েছিল। যেহেতু সারাটা দুপুর আমি আলপনা দিয়ে একেবারে ক্লান্ত ।তাই আমার কিছুটা পরিমাণে রেস্ট দরকার হয়েছিল। কিন্তু আমি রেস্ট নিতে পারিনি। সন্ধে লাগা মাত্রই নিজের বাড়িতে সন্ধ্যে পুজো দিয়ে ওদের বাড়িতে চলে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি সমস্ত কিছু জোগাড় হলেও তুলসী মঞ্চ ঠিকভাবে সাজানো হয়নি। তাই আবারও পাশের বাড়ির ভাইকে দিয়ে ফুলের মালা কিনতে পাঠালাম ।মোমবাতি জোগাড় করে চারিদিকে সুন্দর করে মোমবাতি জ্বেলে দিলাম। আর এই মোমবাতির আলোতে তুলসী মঞ্চ আরো ফুটে উঠলো।

20250212_184434.jpg

তারপর আমরা গীতা পাঠের দিকে অগ্রসর হলাম। আমি গীতা বই প্রণাম করে গীতার একটি অধ্যায় পড়া শুরু করলাম ।সাধারণত যতবার আমি পাঠ করি, ততবার কর্মযোগ - অধ্যায়টি পড়ে থাকি। কারণ এই অধ্যায় আমার খুবই পছন্দ। কিন্তু সেদিনকে জেঠির আবদারে আমি জ্ঞানযোগ পড়েছিলাম এবং সবশেষে মোক্ষযোগ পড়ে শেষ করেছি।

20250212_194913.jpg

অধ্যায় দুটি শেষ করে আমি গীতার মাহাত্ম্য বললাম। এরপর সবাই মিলে তুলসী মন্দিরে আরতী করলাম ।তারপর তুলসী মন্দিরের চারিদিকে সাত পাক ঘোরা হলো। সবাই মিলে হরিনাম সংকীর্তন করতে করতে ঠাকুরের আরাধনা করা হলো। আমি, আমার বাড়ির সবাই, মৌসুমী বৌদির বাড়ির সবাই এবং আমার পাশের বাড়ির কাকিমারা উপস্থিত ছিল।

20250212_185446.jpg

সব মিলিয়ে খুব সুন্দর ভাবে সেদিনকে সন্ধ্যেটা কেটেছে। সাথে বাড়িতে থাকা কর্তালও আমরা বাজিয়েছি ।সবাই মিলে অনেক অনেক কৃষ্ণ নাম করেছি এবং গান গেয়েছি। হরিনাম এ একটা আলাদা শান্তি পাওয়া যায়। আর সেই শান্তি ওই সময় আমরা উপস্থিত সকলে অনুভব করছিলাম। গীতা পাঠের এই মুহূর্তগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে অনেক ভালো লাগলো ,অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাদের।

Sort:  
Loading...
Loading...