নববর্ষের সন্ধ্যা
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। নববর্ষের দিনের আরো একটি প্রশ্ন নিয়ে হাজির হয়েছে আজকে। গতকাল আপনাদের বলেছিলাম নববর্ষের দিনের সকাল আর দুপুরটা কেমন কেটেছিল , শুরু করছি বিকেলের মূহুর্ত দিয়ে।
আমার বাবা বেশি ভিড় পছন্দ করে না। তাই পুজোর সময় ভিড়ের মধ্যে ঠাকুর দেখতেও বার হতে চায় না। ভিড় যেখানে আছে আমার বাবা সেই জায়গায় যাবেই না। পহেলা বৈশাখের সন্ধ্যেবেলাটা মার্কেটের যা অবস্থা থাকে তা আপনারা না দেখলে বুঝতে পারবেন না।। এতটা পরিমাণে ভিড় থাকে যে রাস্তায় রীতিমতো ট্রাফিক পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকে কিছুটা দূরত্ব পরপর। যেহেতু সব সেই সময় সকলেই হালখাতা করতে বার হয়। আমাদের গোটা মার্কেট টার নাম হলো হাইস্ট্রিট।
ওখানে সব রকমের দোকান আছে। মার্কেটটা বেশ অনেক বড় জায়গা জুড়ে রয়েছে। সোনার দোকান থেকে শুরু করে জামা কাপড়ের দোকান আরো যাবতীয় স্টেশনারির দোকান নানান ধরনের দোকান রয়েছে ওখানে। তাই পয়লা বৈশাখে দিন কৃষ্ণনগরে অন্য কোথাও না ভিড় হলেও মার্কেটের মধ্যে প্রচন্ড ভিড় হয়। কৃষ্ণনগরের সবাই যেন সেদিনকে এসে হাজির হয় মার্কেটে।
আমার বাবা শুধু নয় কোন মানুষই ঠিকভাবে বাইক নিয়ে ঢুকতে পারে না। টোটো আর বাইক নিয়ে কেউ যদি ওই সময় মার্কেটে ঢুকেছে তাহলে আর তার রক্ষে নেই। চার চাকার প্রশ্ন তো আসছেই না। আর মানুষ এতই বেয়াদব ওই ভিড়ের মধ্যে টোটো আর বাইক নিয়ে ঢুকবেই। আর সেই মতো জ্যামে আটকে যায়। এইসব জেনে বুঝেই আমার বাবা কোনদিনই পয়লা বৈশাখের সন্ধ্যেবেলায় মার্কেটের দিকে যায় না। তবে এবছর একটু উল্টো ঘটনাই ঘটলো। আমার বাবার বন্ধুর দোকান মা লক্ষ্মী জুয়েলার্স সোনার দোকান। ওরা নিমন্ত্রণ করাতে বাবাকেও কিন্তু সন্ধ্যেবেলাতে যেতে হয়েছিল।
উত্তম জেঠু আমার বাবার খুব কাছের বন্ধু তাই বন্ধু যেহেতু নিমন্ত্রণ করেছে বাবা না করতে পারেনি সন্ধ্যেবেলার দিকে আমি আর ঈশান রেডি হয়ে নিলাম তারপর বাবার সাথে বেরিয়ে পড়লাম জেঠুর দোকানের উদ্দেশ্যে। ঠিক হলো যে বাবা ওখানে বসে গল্প করবে আর যেখানে যেখানে হালখাতা করার আমি আর ঈশান গিয়ে করব। এর সাথে এড হয়ে যাবে আমার পার্টনার, ওর দাদা বৌদি। আর বাবার সাথে অ্যাড হবে আমার পার্টনারের বাবা মা।
সন্ধ্যার মুহুর্ত |
---|
এরমকই একটা প্ল্যান নিয়ে আমরা পৌঁছে গেলাম উত্তম জেঠুর দোকানে। উত্তম জেঠুর বড় মেয়ে অর্থাৎ পূজাও এসেছে। ওদের দোকানে সকালেই পুজো হয়ে গেছে। আর উত্তম জেঠুর ছোট মেয়ে নেহা পড়াশোনার কারণে কলকাতা থেকে আসতে পারেনি। পূজা আর নেহা আমারও অনেক ভালো বন্ধু হয়। পূজাকে দেখে তাই বেশ ভালো লাগলো। যাকে শাড়িতে খুব সুন্দর লাগছিল সেদিন, একদম মা লক্ষ্মীর মত।
ওখানে গল্প করতে করতে, বাবা আর উত্তম যে চুল কমন ফ্রেন্ড আরো একটা কাকা তার ফ্যামিলি নিয়ে এসে হাজির। গল্পে সবাই মজে গেলাম। সাথে পূজা আমাদের হাতে কোলড্রিংস দিল। ওই কাকার দুই ছেলে মেয়ে, ওরা আবার ঈশানের খুব ভালো বন্ধু। আসলে বাবার বন্ধুদের ছেলে মেয়েরাও আমাদের বন্ধু হয়। এটাই স্বাভাবিক।
ওখানে বেশ গল্প হওয়ার পরে চলে গেলাম আমি আর ঈশান । আমরা বেরিয়ে পড়লাম আর একটা সোনার দোকানের উদ্দেশ্যে।। আমরা হেঁটে হেঁটেই গিয়েছি যেহেতু কয়েকটা দোকানের পরেই ওই দোকানটা। যাওয়ার সাথে সাথে আমাদের হাতে আইসক্রিম ধরিয়ে দিল কাকু। এর সাথে দিয়ে দিল মিষ্টির প্যাকেট। যেহেতু কোন রকম বকেয়া টাকা ছিল না, তাই কোন কিছু দিতে হলো না। অতিরিক্ত কোন টাকাও আমি দিইনি সেদিন। দোকান থেকে বেরিয়ে যখন রাস্তার দিকে তাকালাম ভিড় দেখে আমার মাথা ঘুরে উঠলো।
সবার ভেতরে একটাই উত্তেজনা, কে আগে যাবে, সবাই আগে যেতে চায়। আর জ্যাম ওখানেই বেঁধে যায়। লাইনে লাইনে ঠিকভাবে গেলেই জ্যাম ছেড়ে যেত। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ অতিরিক্ত বুদ্ধিমান, ভুলভাল জায়গায় ঢুকিয়ে দিয়েই রাস্তা জ্যাম করে ফেলে। আমি কোন রকমের টপকে টপকে কিছুটা সামনে এগিয়ে আসলাম। আর একটা দোকানে হালখাতা করতে যাব বলে। সেটাও ছিল একটা সোনার দোকান। সেখানে আমি অতিরিক্ত ৫০০ টাকা মতো জমা করলাম।
তারপর ওখান থেকে মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে বেরিয়ে আবার আর এক দোকানের দিকে রওনা হলাম। সে নিয়ে পরের দিন পোস্টে শেয়ার করব। আজ এখানেই শেষ করছি।
Congratulations
This post has been curated by
Team #5
@mikitaly
Jam yang sibuk dan penuh kemacetan,