পিজ্জা নন ডেট
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি গতকাল সন্ধ্যের মুহূর্ত।
গতকাল আমার আমার পার্টনারের সাথে পিজ্জা ডেট এর প্ল্যান ছিল। দুদিন ধরেই প্ল্যানটা হলেও গতকাল দুপুরবেলা এসে কিছুতেই আর বাড়ি থেকে বার হতে ইচ্ছা করছিল না। দুজনারই পড়াশোনা রয়েছে। ও ঠিকঠাকভাবে পড়তে পারলেও কিছুদিন ধরে আমার বাড়িতে খালি অনুষ্ঠানের পর অনুষ্ঠান হচ্ছে। লোকজনের খাওয়া-দাওয়া লেগে গেছে। এ কারণে আমি ঠিক ভাবে পড়তে বসতে পারছি না।
এ কারণে আমি কালকে ভাবছিলাম প্ল্যানটা ক্যান্সেল করে দেব। নেক্সট উইকে ওর ছুটির কোন একটা দিন দেখে আবার প্ল্যান করা যাবে। কিন্তু ও বেটা নাছোড়বান্দা। কিছুতেই ক্যান্সেল করলো না। বিকেলবেলা সাড়ে পাঁচটার পর আমাকে বার হতেই হল।। আমি বার হওয়ার পর যখন ওর সাথে দেখা করতে যাচ্ছি তখন হঠাৎ করেই ওর মায়ের ফোন আসে। যখন জানতে পারে আমরাও মার্কেটের দিকে যাচ্ছি। কাকিমা বারবার বলতে থাকে কাকিমার সাথে দেখা করার জন্য। আসলে কাকিমা ও সময় কাকুর সাথে মার্কেটে গিয়েছিল।
আমি কাকিমা মুখের ওপর না বলতে পারলাম না। তাই এক কাজ করতে গিয়ে আর এক কাজে ঢুকে যেতে হলো। প্ল্যান করছিলাম দুজন মিলে একটু আলাদাভাবে সময় কাটাবো আর পিজ্জা খাব। সে জায়গায় ভালোভাবেই জল ঢালা হয়ে গেল। আমি চললাম ওর মায়ের সাথে দেখা করতে । ওর মা আসলে কেনাকাটা করছিল। আর চাইছিল আমি যেন একটু সাজেশন দিয়ে দিই। তাই আমাকে বারবার মার্কেটের মধ্যেই একটি দোকান যশোরেশ্বরী বস্ত্রালয় , সেখানে ডাকছিল।
এই দোকানটার নাম আপনারা অনেকেই আমার পোস্টে অনেকবার পেয়েছেন।। আসলে আজ জামাইষষ্ঠী ছিল তাই গতকাল কাকু কাকিমা কেনাকাটা করতে গিয়েছিল। কাকু কাকিমা কে রেখে একটু অন্য কাজে চলে গিয়েছিল আর এদিকে কাকিমা কিছুতেই কি কিনবে বুঝতে পারছিল না।। কাকিমা চাইছিল আমি একটু পছন্দ করে দিই।
আমি কাকিমার সাথে দেখা করে সমস্ত ও জামা কাপড় পছন্দ করে দিলাম। আর ওখান থেকে বেরোনোর পরেই কাকিমা বলতে লাগলো, বলো কি খাবে। আমি কিছুতেই খেতে যাচ্ছিলাম না কারণ তখন মোটামুটি সাতটা বেজে গেছে। সন্ধ্যে সাতটা বেজে গেছে আর সন্ধ্যা সাতটার সময় আমার বাড়ি ফেরার কথা।। বাড়ি গিয়ে আমার পড়তে বসার কথা আর ওদিকে ওরও ওই টাইমে বাড়ি ফিরে যাবার কথা ছিল।
আসলে পড়াশোনার ক্ষেত্রে ঠিকভাবে রুটিন মেন্টেন না করতে পারলে, রুটিন ব্রেক করলে খুবই প্রবলেম হয়। তবে ওর থেকে বেশি আমার রুটিন ব্রেক হয়। ও যথেষ্ট স্ট্রিক্ট ওর রুটিনের ব্যাপারে। কাকিমা বারবার জেদ করাতে আমরা এক জায়গা থেকে আইসক্রিম খেলাম।। তারপরে পিজ্জা খেতে গেলাম। যেহেতু পিজ্জা খাওয়ার জন্যই বার হওয়া। তাই ব্যাপারটা আমরা দুজন কি করে মিস করি। অবশেষে কাকিমাকে সাথে করে নিয়েই যেতে হলো। কাকিমা না যেতে চাইলেও রাত যেহেতু অনেকটাই হচ্ছে, তাই আমরা কাকিমাকে সাথে করেই ডমিনোসে গেলাম।
ভেবেছিলাম দুজন একটু আলাদাভাবে সময় কাটাবো কিন্তু সেটা সম্ভব হলো না। সামনে থেকে ওইভাবে কাকিমাকে রেখে আলাদাভাবে পিজ্জা খেতে যাওয়া ঠিক হতো না। তাই কাকিমাকে সাথে করেই নিয়ে গিয়েছিলাম। Dominos এ পৌঁছে অর্ডার করে নিলাম। কাকিমা যেহেতু মাংস খান না। তাই ওনার জন্য অর্ডার করে নিয়েছিলাম ভেজ পিজ্জা ।নাম ছিল - Paneer capsicum with videshi hot sauce.
এটা ডোমিনোজ এর ওয়েবসাইটে পিজ্জা ম্যানিয়াতে পাওয়া যাবে।
আর আমার আর ওর জন্য নিয়ে নিয়েছিলাম Non veg supreme. আমাদেরটা রেগুলার সাইজ ছিল। অর্ডার করার পাঁচ ছয় মিনিটের মধ্যে পিজ্জা রেডি হয়ে গেল। আমরা হাতে পেয়ে সাথে সাথে অরিগ্যানো আর চিলিফ্লেক্স অ্যাড করে নিলাম। তারপরে খাওয়া শুরু করলাম। খুব সুন্দর ছিল পিজ্জা দুটো খেতে। বিল পেমেন্ট ওই করলো, ৬২১ টাকা বিল হয়েছিল। অর্থাৎ ৫১ steem.
খাওয়া দাওয়া করতে বেশি কোন সময় লাগালাম না। যেহেতু অনেকটাই সময় চলে গেছে বাড়ি ফিরতে হবে। বাড়ি থেকে অলরেডি তিন চার বার ফোন করা হয়ে গেছে।। তাই আমরা তাড়াতাড়ি রওনা হলাম। ফেরার পথে বাজার হয়ে ফিরতে হলো। কারণ মা আমাকে কয়েকটা জিনিস কিনতে বলে দিয়েছিল। কিনে নিয়েছিলাম জাম, তরমুজ,খেজুর।
এটা পিজ্জা ডেট তো হলই না। উল্টে সময় নষ্ট হল। বিগত কিছুদিন ধরে ও আর আমি অনেকটাই ব্যস্ত নিজেদের লাইফে। ঠিকভাবে দেখা-সাক্ষাৎ কিংবা কথা এক জায়গায় বসে সেটা সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাই ভেবেছিলাম একটু কথা বলা যাবে আর পিজ্জা খাওয়া যাবে।কিন্তু খাওয়া দাওয়া হলেও যেটা দরকারি কাজ সেটাই হলো না। তাই মনটা আর মেজাজটা খারাপ ছিল ফেরার পথে।
প্রত্যেকটা সম্পর্কে দেখা-সাক্ষাৎ করা, নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলা ,একেবারেই নিজেদের জন্য কিছুটা সময় বার করা অবশ্যই জরুরি। এই বিষয়টা যে কতটা প্রয়োজনীয় তা নিয়ে অন্য একদিন পোস্ট লিখব।আজ এখানেই শেষ করছি।