বাবার জন্মদিন - ২য় পর্ব

in Incredible India6 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। গতকাল বাবার জন্মদিনের মুহূর্ত নিয়ে কিছু কথা লিখেছিলাম। আজকে তার পর থেকে লেখা শুরু করছি।

1000180289.jpg

যাই হোক প্রতিবারের মতো এ বছরও বাবার জন্মদিন নিয়ে ভেবে রেখেছিলাম। তাই জন্মদিনের দিন সকাল থেকেই কেক তৈরি করতে বসে গিয়েছিলাম। সেদিন নিরামিষ ছিল। এ কারণে মা আমিষ কোন রান্না করতে পারেনি। সাথে সকলের শরীর অসুস্থ থাকায় বাড়িতে রান্নাবান্না সেরকম ভাবে হয়নি। কিন্তু আমার কেক দিয়েই জন্মদিনটা বেশ ভালোভাবে পালন করা হয়েছে।

1000190105.jpg

আমি যখন দুপুরবেলায় গানের রিহার্সেলের জন্য বাইরে। তখনই বাবা একবার ফোন করে আমাকে বলল, জানিস কারখানায় সবাই কি শুরু করেছে! সাথে আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে একটা ছবিও দিল। দেখলাম কারখানার সকল স্টাফ মিলে বাবার জন্য একটা সারপ্রাইজ বার্থডে আয়োজন করেছে। চারিদিকে বেলুন লাগিয়ে কেক কিনে নিয়ে এসে সবাই মিলে আনন্দ করেছে। বাবা কারখানায় ঢুকে পুরোপুরি অবাক।

1000190102.jpg

বাবা আনন্দ পেয়েছে দেখে আমিও খুব খুশি হয়েছি। জন্মদিন মনে রেখে কারখানার সকল স্টাফ মিলে বাবার জন্য এরকম ছোট্ট খাটো একটা জন্মদিন আয়োজন করেছে ভেবেও ভালো লাগছিল। তারপর দুপুর বেলা ফিরে এসে কেক তৈরি করা শুরু করে দিয়েছিলাম। কেক হয়ে যাবার পর, বাবাকে ফোন করলাম। যেহেতু সবাই মিলে অত কিছু আয়োজন করেছিল তাই কারখানাতে বাবা সবাইকে ট্রিট দিচ্ছিল। মানে ওখানেই রান্নাবান্না হচ্ছিল।

1000190123.jpg

ওখানে কিছুক্ষণ ঠেকিয়ে দিয়ে বাবা চলে আসলো বাড়িতে। ততক্ষণে আমি বেশ সুন্দর করে টেবিলটা সাজিয়ে ফেলেছি। আর তারপরে আমি মা ভাই সবাই মিলে বাবার জন্মদিন সেলিব্রেট করলাম। এরমধ্যেই যখন বাবা কেক কাটছে। আমার জেঠু এসে হাজির। জেঠু বলতে আমার বাবার খুব কাছের বন্ধু। ছোটবেলা থেকে জেঠু বলতে আমি এনাকেই চিনি। আমার নিজের জেঠুর থেকেও আমাদের সাথে ক্লোজ এই জেঠু।

1000190098.jpg

প্রত্যেক বছর বাবার জন্মদিনের দিন জেঠু কোন না কোন সময় এসে বাবাকে এরকম সারপ্রাইজ দেয়। সাথে কেক মিষ্টি, নানান ধরনের খাবার গিফট নিয়ে আসে। সেদিনকেও আমি ভেবে রেখেছিলাম জেঠু ঠিক একটা টাইমে আসবে। আর ঠিক কেক কাটার সময় জেঠু এসে হাজির। যাকগে মুহূর্তটা আরো জমে গেল। জেঠু থাকল আমাদের সাথে সেলিব্রেট করার সময়। আমরা অনেক ছবি তুললাম। অনেক আনন্দ করলাম।

1000190114.jpg

সবার সাথে এত সুন্দর মুহূর্ত ভাগ করে নিতে পেরে বাবা অনেক খুশি হল। এইতো এই ভাবেই দিনটিকে স্মৃতি দিয়ে ভরিয়ে তোলা হলো। এই ছোটখাটো আয়োজনগুলোই এখনকার জীবনে অনেক ভূমিকা রাখে। সব সময় যে মানুষজন অত্যাধিক নিয়ে জন্মদিন করতে হবে এমন কোন মানে নেই। প্রিয় মানুষদের জন্মদিনে এই ছোটখাটো আয়োজন এইটুকুই যথেষ্ট।

1000190095.jpg

আপনাদের সকলের সাথে মুহূর্তগুলো ভাগ করে নিতে পেরে আমারও খুব ভালো লাগলো। সকলে ভালো থাকবেন। সকলকে নিয়ে থাকবেন। আর সব সময় খেয়াল রাখবেন পরিবারের। আমাদের জীবনে পরিবার ছাড়া আর কিছু নেই। যাদের পরিবার নেই যারা একা তারা এই পরিবারের অনুপস্থিতি কতটা বেদনাদায়ক, তা সবচেয়ে বেশি টের পায়। এই কথাগুলো বলার পিছনে একটাই কারণ, এখন মানুষ নিজের বাবা মাকে ভুলে যায়। বাইরের জগত নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকে। সব মিলিয়ে চলতে পারার ক্ষমতা, আজকালকার মানুষের কম। সবাইকে নিয়ে চলতে পারাটাই একটা বিরাট বড় ব্যাপার।

Sort:  
 6 days ago 

এত সুন্দর একটি আনন্দ মুহূর্ত, আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ! সত্যিই জন্মদিনে যদি এরকম সারপ্রাইজ বাবা তার মেয়ের কাছ থেকে পেয়ে থাকে। সে বাবা খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়, যা আপনার পোস্টের মাধ্যমে খুবই সুন্দরভাবে বোঝা গিয়েছিল। আপনার অনেক পোস্টে আমি জেনেছি। আপনি খুব সুন্দর ভাবে কেক তৈরি করতে পারেন। আপনার পোস্টে আরেকটি বিষয় জানতে পারলাম! আঙ্কেল যখন ওনার ফ্যাক্টরিতে গিয়েছিল, তখন ফ্যাক্টরি সবাই তাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য একটা অনুষ্ঠান করেছিল। এটাই তো একটা মানুষের প্রাপ্তি যা সকলের কাছ থেকে ভালোবাসা পাওয়া !মানুষ তো চিরকাল বাঁচবে না কিন্তু তার স্মৃতি গুলো আমাদের মাঝে সব সময় রয়ে যাবে।

TEAM 5 Congratulations! This post has been voted through steemcurator07. We support quality posts, good comments anywhere and any tags.

Picsart_24-12-31_15-00-29-616.jpg

Curated By @memamun

 5 days ago (edited)

Thank you so much @memamun Sir for supporting me.💕

Loading...

TEAM 5 Congratulations! This post has been voted through steemcurator07. We support quality posts, good comments anywhere and any tags.

Picsart_24-12-31_15-00-29-616.jpg

Curated By @memamun

Loading...
 3 days ago 

আসলেই পৃথিবীতে বাবা নামক বটগাছ সবার জীবনে সঠিক সময় থাকে না তবে যাদের জীবনে থাকে তারা বাবাকে সর্বদাই চেষ্টা করে নতুন কিছু উপহার দেয়ার জন্য আপনিও ঠিক তাই করেছেন আপনার বাবার অফিসের সবাই মিলে তার জন্য আবার কেক নিয়ে এসেছে এটা খুবই ভাগ্যের একটা বিষয় আপনি শেষে একটা কথা বলেছেন সবাইকে নিয়ে চলতে পারাটাই হচ্ছে বড় একটা ব্যাপার এটা একেবারেই বাস্তব সবাই কিন্তু সবার মনের মত হতে পারে না তবে যে একবার মনের মত হয়ে যায় তাকে নিয়ে বাকিটা জীবন কাটিয়ে নেয়াটা খুব সহজ হয়ে যায় অসংখ্য ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।