শ্রাবণের প্রথম ও দ্বিতীয় সোমবার
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি শ্রাবণ মাসের প্রথম এবং দ্বিতীয় সোমবারের কিছু মুহূর্ত।
হিন্দু ধর্মে শ্রাবণ মাসকে শিবের জন্ম মাস বলা হয়ে থাকে। এই অনুযায়ী প্রত্যেক হিন্দু মহাদেব এর পুজো অর্চনায় লিপ্ত হয়ে থাকে গোটা শ্রাবণ মাস জুড়ে। বিশেষ করে শ্রাবণের চারটে সোমবার সকলেই ব্রত পালন করে থাকে ।বাড়ির মা ,কাকিমারা থেকে শুরু করে বাড়ির বাচ্চারা পর্যন্ত শ্রাবণ মাসের সোমবারের ব্রত পালন করে থাকে। এমনকি ছেলেদেরও এই ব্রত পালন করতে দেখতে পাওয়া যায়।।
মহাদেবের আরাধনায় সকলকে এভাবে নিমগ্ন হতে দেখে সত্যিই ভালো লাগে। যিনি আদিযোগী ,শ্রাবণ মাসেই তার জন্ম। হিন্দু ধর্মে জন্ম শতবার্ষিকী উৎসব পালন করার একটা নিয়ম রয়েছে। যেমন কৃষ্ণের জন্ম তিথি অর্থাৎ জন্মাষ্টমী পালনেরও কিছু পোস্ট আপনাদের সাথে আমি অলরেডি শেয়ার করেছি। এর সাথে রাধা অষ্টমী অর্থাৎ রাধার জন্মের শতবার্ষিকী ,সেটাও পালন করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন দেবদেবীর জন্ম শতবার্ষিকী পালন করার একটা নিয়ম আছেই।ঠিক সেভাবেই শ্রাবণ মাসের চারটে সোমবার পালন করা হয়।।
আমাদের বাড়ির খুব কাছেই রয়েছে শিব তলা। সেখানে বাবা জলেশ্বর এর মূর্তি স্থাপিত রয়েছে। যোগীরাজ বাবা শ্যামাচরণ লাহিড়ী এই স্থাপনা করেছিলেন ।আজ থেকে বহু বহু বছর আগে। তারপর থেকেই এই লিঙ্গ পূজিত হয়ে আসছে। আমাদের মন্দিরের এই মহাদেবের লিঙ্গটি বহু পুরনো ।মানুষের বহু বিশ্বাস এনার সাথে জড়িত রয়েছে। তাই শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবারে মন্দিরে প্রচন্ড পরিমাণে ভিড় হয়েছিল।। আমি সকাল বেলায় স্নান সেরে উঠে সমস্ত কিছু গুছিয়ে নিয়ে চলে গিয়েছিলাম মন্দিরে পুজো দিতে।
প্রত্যেক সোমবার করে শ্রাবণ মাসে অনেকেই পুরোপুরি নির্জলা ব্রত পালন করে, আবার অনেকে শুধুমাত্র ফল খেয়ে থাকে, কেউ কেউ আবার সাগু রান্না করে থাকে। আবার যারা পারেনা ,তারা জল ঢেলে এসে নিরামিষ খাওয়া দাওয়া অথবা আতপ চালের ভাত রান্না করে খায়। শ্রাবণ মাসের সময় আমি একদম লাস্টের নিয়ম এ ছিলাম। বাবার মাথায় জল ঢেলে এসে চরণামৃত খেয়ে ভাত খেয়ে নিতাম। শ্রাবণ মাসে সোমবার গুলোতে বাড়িতে নিরামিষই রান্না হতো।।
প্রথম দিন ভিড় হওয়াটাই স্বাভাবিক। যারা চারটে সোমবার ঠিকভাবে নিয়ম পালন করতে পারে না ।তারা বেশিরভাগ সময় প্রথম সোমবার অথবা শেষ সোমবার করে থাকে কিংবা কেউ কেউ শুধুমাত্র দুটো সোমবার পালন করে থাকে।। ভগবানের আশীর্বাদে এবার আমি চারটে সোমবারই ব্রত পালন করতে পেরেছিলাম।
তবে এবারে আমার মা কোন সোমবারেই ব্রত পালন করেনি। বাড়ির একজন করলেই হল ।আর তাছাড়া ঈশানের স্কুল চলতে থাকে ,অত সকাল বেলায় বাড়ির পুজো সেরে সমস্ত জোগাড় করে, আবার মন্দিরে যাওয়া, বাড়ি এসে রান্না করে আবার ঈশানকে স্কুলে পাঠানো একটা বিশাল চাপে হয়ে যায়।
তাই মা পুজোর দায়িত্বটা আমার ওপর ছেড়ে দেয়।
শ্রাবণের প্রথম এবং দ্বিতীয় সোমবারের মুহূর্তগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে ভালো লাগলো। আজকে এখানেই শেষ করছি।
curated by: @ahsansharif