বান্ধবীর জন্য গিফট কিনতে গিয়ে
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন।। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি গতকাল সন্ধ্যেবেলার মুহূর্তগুলো।
আসলে ৬ এপ্রিল আমার খুব কাছের বান্ধবীর জন্মদিন। পরপর এই তিনটে মাস জুড়ে জন্মদিন সবার লেগে রয়েছে। প্রথমে মধুমিতার জন্মদিন হল, তারপর অহনার জন্মদিন গেল ,এবার অনামিকার জন্মদিন আসছে। অনামিকার পরে আবার আমার আরো একটি বান্ধবী পর্ণবীর জন্মদিন আসবে। যাদের নাম করছি ,সবাই আমাদের গ্রুপের।
যাই হোক অনামিকার জন্মদিন উপলক্ষে কি কেনা হবে ,ভাবতে ভাবতে ঠিক করা হয়েছে কুর্তির কথা। যেহেতু সামনেই পহেলা বৈশাখ, আর পয়লা বৈশাখে নতুন জামা কাপড় আমরা সকলকে এমনিতেও উপহার দিয়ে থাকি ।তাই এটাই সবথেকে বেস্ট আইডিয়া বলে মনে হয়েছে।
তবে এর আগে মধুমিতা বার বার সফট টয়েস এর কথা বলছিল। আসলে অনামিকা ভীষণ পরিমাণে সফট টয়েজ পছন্দ করে ।ও ছোটখাটো সফট টয়েজ দেখলে নিজেকে সামলে রাখতে পারে না। আসলে প্রত্যেকটা মেয়েদেরই সফট টয়েজের প্রতি একটা দুর্বলতা রয়েছে।। মধুমিতার যেমন আবার গাছ খুব পছন্দ। ওকে কেউ যদি গাছ উপহার দেয়, ওর থেকে বড় উপহার ওর কাছে আর কিছু হয় না।
আমার আর মধুমিতার কথোপকথনের শেষে ডিসিশন নেয়া হলো যে আমরা কুর্তি কিনব। তাই সেই মতো বেরোনোর প্ল্যান হলো সন্ধ্যেবেলায়। বিকেল বেলায় প্রত্যেকদিন আমি ছাদের গাছগুলোতে জল দিতে যাই ।গতকালকেও গাছে জল দিতে গিয়ে দেখি, নয়নতারা ফুলগুলো সারা গাছ আলো করে রয়েছে। মনে হচ্ছে গাছে গোলাপি রঙের লাইট জ্বলছে। কাগজ ফুলের গাছটা দেখতে দেখতে কত বড় হয়ে গেছে, আর থোকা হয়ে কাগজ ফুল হচ্ছে।
বিকেল বেলায় ছাদে বেশ ঠান্ডা হাওয়া দেয়। আর তার মধ্যে গাছে জল দিতে খুবই ভালো লাগে। সারা সকালের গরমে গাছগুলো এত বিরক্ত হয়ে যায় ,একটু জলের ফোঁটা পেলে ওরাও যেন জেগে ওঠে, প্রাণ ফিরে পায়।। গাছে জল দেয়ার পর সত্যি গাছগুলোকে দেখতে আরো সুন্দর লাগে। কচি কচি পাতায় জল লেগে থাকলে ,আমার তো দৃশ্যটা দেখতে আরো বেশি ভালো লাগে।
যাইহোক গাছে জল দেয়া শেষ হয়ে যাওয়ার পর রেডি হয়ে নিলাম । মা তখন সন্ধ্যে দিচ্ছিল ,মা এর সন্ধ্যা দেওয়া হয়ে যাওয়ার পরেই আমি আর মধুমিতা বেরিয়ে পড়লাম হাইস্ট্রিটের দিকে। প্রথমে যে দোকানে গেলাম সে দোকানে আমাদের পছন্দ হলো না ।
তারপরে আমরা চলে গেলাম এক্সপ্রেস বাজারে। এখন চৈত্র সেল চলছে সব জায়গাতে, সেটা শপিংমল হোক বা যে কোন দোকান। এক্সপ্রেস বাজারে গিয়েও দেখি সবকিছুতেই বেশ অফার রয়েছে। ওর জন্য সুন্দর একটা কুর্তি কিনে নিলাম। তারপর আমাদের নিজেদের জন্যও আমরা টুকটাক জিনিস দেখছিলাম, তবে কিছু কিনি নি।
ওখান থেকে বেরিয়ে ওরই অপজিটে থাকা মোমোজিতে চলে গেলাম। মোমো খেতে আমি খুবই ভালোবাসি ।সেটা গরম হোক কিংবা শীত ।তবে শীতকালে মোমো খেতে বেশি ভালো লাগে। গরমের মধ্যে গরম গরম মোমো অতটাও আমি প্রেফার করি না ।তবে মোমো আমার ভালো লাগে খেতে। লোকে যেমন রাস্তায় বেরোলেই বলে ফুচকা খাব, আমার আবার মোমো হলে, আর কিছু লাগেনা।
ওখানকার মোমো আমাকে অনেকেই সাজেস্ট করেছে এর আগেও। কিন্তু আমি কখনো খেয়ে দেখিনি। মধুমিতা যখন বলল ,তখন আমি সাথে সাথে রাজি হয়ে গেলাম। কারণ আমিও এখানকার মোমো র বেশ প্রশংসা শুনেছি। সাথে সাথে অর্ডার করে ফেললাম স্টিম মোমো।তারপর আমরা দুজন মিলে বসে গল্প করছিলাম ।দেখতে দেখতে মোমো তৈরি হয়ে আমাদের হাতে প্লেট চলে আসলো।
ক্লাসিক চিকেন স্টিম মোমো আমরা নিয়েছিলাম। দাম ছিল ৭৫ টাকা করে প্লেট। মানে ৭/৮ স্টিম। দামটা বেশ ভালই ছিল। প্রথমবার ট্রাই করলাম। তাই অতটা গুরুত্ব দিইনি দামের দিকে। সত্যি বলতে মোমোটা অসাধারণ খেতেছিল। প্লেটে পাঁচটা করে দিচ্ছিল ,তবে বেশ বড় সাইজের।
আমার বেশিরভাগ সময় প্যানফ্রায়েড মোমো খেতে বেশি ভালো লাগে। কিন্তু সেদিনকে মধুমিতা বারবার বারণ করছিল বলে আর তেলেভাজা জাতীয় রিচ খাবার খেলাম না।। আসলে গরম পড়ছে পেট খারাপ করে যেতে পারে। ও আবার এসব ব্যাপারে বেশ সংযত ।আর ওর সাথে কেউ থাকলে তাকেও সংযত বানিয়ে তোলে।
মোমো খাওয়া দাওয়ার সাথে সাথে আমরা অনেক গল্পগুজব করছিলাম ।দেখতে দেখতে বেশ রাত হতে লাগলো ।তখন বাজে প্রায় আটটা ।বাড়ি থেকে ফোন না আসলেও ভয়ে ভয়ে ছিলাম যে ,এবার বকুনি খাবো বাড়ি গিয়ে। বাড়িতে বলেছিলাম যে যাওয়ার সময় চকলেট আইসক্রিম নিয়ে যাব। এছাড়াও দুপুর বেলা থেকে আমার চকলেট আইসক্রিম খেতে খুব ইচ্ছা করছিল। তাই তাড়াহুড়ো বাঁধলেও আমি কিন্তু আইসক্রিম কিনেই বাড়ি ঢুকেছি ।
সাথে কিনেছিলাম ঈশানের একটা বই ।এই বইটা ও স্কুলে হারিয়ে এসছে। তাই আবার কিনতে হল ।এর জন্য যদিও আমার কাছে বকাও খেয়েছে ।যে বইগুলো স্কুলে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না ,সেটা ওই বদমাশ ব্যাগ বোঝাই করে স্কুলে নিয়ে যায়। কি আর বলব। বেশি বকাঝকা করা যায় না। যাইহোক সবমিলিয়ে সমস্ত কাজ শেষ করে বাড়ি ঢুকলাম সাড়ে আটটা নাগাদ।
আমি অনেক আইসক্রিমের কৌটো খোঁজার চেষ্টা করেছি, প্রায় তিনটে দোকান ঘুরে আইসক্রিম ট্যাব গুলো পাইনি ।অবশেষে আমাকে কাগজের যে বার গুলো হয় ,সেটাই নিতে হয়েছিল। তাই বাড়িতে এসে সাথে সাথে কাগজের রেপ থেকে আইসক্রিম খুলে কৌটোর মধ্যে ঢেলে নিয়েছিলাম। আর তারপরে আমি, বাবা-মা ,ভাই সবাই মিলে আইসক্রিম খেলাম। কিন্তু সব থেকে বেশি আইসক্রিম আমি খেয়েছি। আজ এখানেই শেষ করছি ।সকলে ভালো থাকুন।।
আপনার বান্ধবীর জন্য গিফট কিনতে যাবেন তবে তার আগে আপনি আপনার গাছের পরিচর্যা করে নিয়েছেন জানতে পেরে অনেক ভালো লাগলো বর্তমান সময়ে যে পরিমাণ গরম পড়ছে গাছের মধ্যে সঠিকভাবে পানি দিতে হয় তা না হলে তাদের অবস্থা আরো বেশি খারাপ হয়ে যাবে যাই হোক আপনার বান্ধবীর জন্য গিফট কিনতে গিয়ে আপনারা ওখানে আবার খাওয়া দাওয়া করেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার আনন্দঘন মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য ভালো থাকবেন।