হঠাৎ বেরোনো

in Incredible India4 months ago

নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি ঘোরাঘুরির কিছু মুহূর্ত। আসলে মাঝেমধ্যেই রাতের দিকে শখ করে গাড়ি নিয়ে বার হওয়া হয়। আমাদের ফ্যামিলি এবং আমার বাবার বন্ধুদের ফ্যামিলি একসাথে বার হই।

20250104_204807.jpg

বেশিরভাগ সময়ে ওরা বেরোয়, কারণ সত্যি বলতে প্রত্যেকদিন ওইভাবে বেরোতে ভালো লাগে না আমারও। সপ্তাহে একদিন অথবা দুদিন ঠিক আছে। তবে ওরা প্রত্যেকদিনই গাড়ি নিয়ে রাতে বের হয়। জেঠু কারখানা থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফিরলে, সাড়ে নটার পর ওরা সাড়ে দশটা অবধি এদিক ওদিক একটু ঘুরে আসে। আবার কখনো কখনো সেটা সন্ধ্যা নাগাদ হয় অর্থাৎ সন্ধ্যা দেওয়া হয়ে যাওয়ার পরে রেডি হয়ে ওরা মাঝেমধ্যে বার হয়।

20250104_204848.jpg

জেঠু যেহেতু গাড়ি চালাতে পারে তাই অসুবিধা হয় না।। তবে আমরা যখন বার হই ,তখন আমাদের ড্রাইভার নিতে হয়। যাইহোক বাবা আর জেঠু যখন সময় না পায়, তখন আমাদের যে পাথরের কারিগর অর্থাৎ পাথরের কাজ যে কারিগর করে, সে যেহেতু ভালো ড্রাইভ করে তাকে নিয়ে বার হওয়া হয়।

20250104_210059.jpg

আমি আজকে জানুয়ারি মাসের একটি সন্ধ্যেবেলার কথা বলছি। সেদিন হঠাৎ করে সন্ধ্যার দিকে প্ল্যান করা হলো আর আমরা ঠিক করলাম একটু বেরোনো হবে।সেদিনকে শনিবার ছিল, পৌষ মাস । আমরা আগে থেকেই জানতাম রাস্তায় বেরিয়ে কিছু খাব না। খেলেও সেটা নিরামিষ, কারণ শনিবারে আমি আমিষ খাই না এবং আমার বাড়ির সবাই এটা পালন করে।

20250104_211709.jpg

সেই কথা মত বের হওয়ার কথা ঠিক হলো। বাবা,জেঠু কাজে ভীষণ ব্যস্ত ছিল ওই সময় ,তাই ওরা দুজনাই যেতে পারছিল না। অবশেষে আমাদের পাথরের যিনি কারিগর অর্থাৎ বিজয় কাকা, ওকে নিয়ে আমরা বার হলাম। আমরা বলতে আমি, আমার মা ,ভাই, জেঠিন আর দিদি।
গাড়িতে উঠেই কাকা জিজ্ঞেস করল, কোথায় যাবে বলো।আমরা সাথে সাথে বললাম, তোমার যেদিকে দুচোখ মনে চায়, সেদিকে নিয়ে চলো। আমাদের ঘোরা নিয়ে কথা।। বিজয় কাকা কিছু না বুঝতে পেরে হাইরোড এর দিকে গাড়ির টার্ন নিল।

20250104_213414.jpg

রাস্তায় যেতে যেতে মার্কেটের পাশ দিয়ে যখন যাচ্ছিলাম ,দেখলাম অনেক জায়গায় কালীপুজো হচ্ছে। তখন বুঝলাম যে পৌষ কালী পুজো চলছে। এরকম ভাবেই আমাদের কৃষ্ণনগরের সিদ্ধেশ্বরী কালী বাড়ির কাছেই একটি জায়গায় খুব সুন্দর করে পৌষ কালী পূজা হচ্ছিল। সেটা দেখতে পেলাম গাড়ি থেকে। এর সাথে লোকজনও খাচ্ছিল খিচুড়ি। আমরা যখন দেখতে দেখতে যাচ্ছি ,তখন মা আর জেঠিন বারবার সেখানে নেমে পুজো দেখার এবং খিচুড়ি খাবার কথা বলছিল। কিন্তু আমি আর দিদি বললাম আগে ঘুরে আসি ,তারপর এসে খাবো।

20250104_213556.jpg

20250104_212433.jpg

গাড়ির মধ্যেই রীতিমতো ঝগড়া বেঁধে গেল, যে ফিরে এসে যদি আর খিচুড়ি না পাই, যদি পুজো শেষ হয়ে যায়। কিন্তু আমি আর দিদি মিলে শুনলাম না। বললাম যদি ঠাকুর কপালে লিখে রাখে, তাহলে অবশ্যই ঠাকুরের প্রসাদ পাব। এই বলে আমরা সোজা হাই রোডের দিকে উঠলাম। মোটামুটি ধুবুলিয়ার দিকে আমরা চলে গিয়েছিলাম। তারপর গাড়ি একটা রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়ালো। রেস্টুরেন্ট কাম ধাবা বলা যেতে পারে জায়গাটা। রাস্তায় নেমে তখন খুব ঠান্ডা ,আর ঠান্ডা ওয়েদারে মনও ভালো হয়ে যাচ্ছিল।

20250104_212541.jpg

20250104_213405.jpg

সাথে সাথে আমাদের সবার জন্য কফি অর্ডার করা হলো। এর সাথে আমি এক প্লেট চাওমিন নিলাম, আর দিদি যেহেতু নিয়ম মানছে না ,তাই দিদি চিকেনের একটা আইটেম নিল। আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না চাওমিনটা এত মারাত্মক খেতে ছিল। আমি সত্যিই ওদের চাওমিন এর ভক্ত হয়ে গেছি সেদিন। যে জায়গায় বিজয় কাকা আমাদের সেদিনকে নিয়ে গেছিল, এর আগে কখনো ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আমরা ওই ধাবাতে দাঁড়ায়নি।

20250104_212815.jpg

20250104_212940.jpg

ধুবুলিয়ার ওপর দিয়েই আমাকে মামার বাড়ি যেতে হয়। কারণ আমার মামার বাড়ি উত্তরবঙ্গে। কিন্তু কখনো ওই ধাবাতে ঢুকে চা, কফি কিংবা হালকা স্নাক্স কখনো ট্রাই করিনি। সেদিনকে ওই যে চিনে ফেললাম ,তার পরে কিন্তু আবারো গিয়েছিলাম একবার।

20250104_213203.jpg

20250104_212426.jpg

সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া, গল্প আড্ডা। কিছুক্ষণ ওখানে সময় কাটিয়ে আবার গাড়িতে উঠে পড়লাম।। আর বাড়ির দিকে রওনা হলাম। আর মাথার মধ্যে এটাই কাজ করছিল যে, ওই সময় যেখানে আমরা দাঁড়াতে চেয়েছি, যে কালীপুজোর জায়গায়, সেখানে আমরা প্রসাদ পাব কিনা আর পূজো দেখতে পাব কিনা।
যাইহোক পরে পোস্টে এর পরের ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আজকে এখানেই শেষ করছি।

Sort:  
Loading...

Sepertinya makanan yang anda tunjukkan sangat lezat sekali, Oia yang ada lidinya itu makanan apa dan sayuran itu apakah acar? Saya jadi penasaran temanku 🙏

Loading...
 4 months ago 

এমন হঠাৎ করে বেরোনো সবসময়ই এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে, খিচুড়ির প্রসাদ তো একে অপরকে নিয়ে আরও সুন্দর হয়েছে। আপনার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য। আপনার জন্য সব সময় শুভকামনা রইল!

 4 months ago 

সব সময় সব জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার মধ্যে কিন্তু আনন্দ নেই হঠাৎ করে যখন প্রিয় মানুষগুলোর সাথে অর্থাৎ পরিবারের মানুষগুলোর সাথে কথা বলতে যাওয়া হয় তখন আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে আপনার বাবা এবং আপনার জেঠু বের হতে পারেনি কিন্তু আপনি পরিবারের বাকি সদস্যদের কে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছেন এবং ওখানে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ ঘুরতে যাওয়ার আনন্দঘন মুহূর্তটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।