একটু মুখোরোচক
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। তবে এই বিগত দুদিন ধরে আমি ভীষণ অসুস্থ। কিভাবে যে এই হঠাৎ করে ঠান্ডা লেগে গেল ভগবান জানে। গত পরশু সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে দেখি গলায় ব্যথা করছে।
আর এই গলা ব্যথা এভাবে কিন্তু হুট করেই হয়। এর আগেও যতবার এরকম শুরু হয়েছে সকালবেলাতে উঠেই বুঝতে পেরেছি। আমি তৎক্ষণাৎ বুঝে নিয়েছিলাম যে আমার জ্বর আসতে চলেছে এক দু দিনের মধ্যে।। তাই হলো। গত পরশুদিন বেশ জ্বর চলে এসেছিল দুপুর হতে হতেই। জলে স্নান করার সময় মনে হচ্ছিল কারেন্ট লাগছে জল এতটা ঠাণ্ডা লাগছিল। মানুষ গরমে ঘেমে যাচ্ছে। আর আমি শীতের চোটে ফ্যান বন্ধ করে এক ঘরে চুপ করে ছিলাম।
জ্বরের তাপমাত্রা বেশি উঠেনি। তবে গা-হাত-পা প্রচন্ড পরিমাণে কামড়াচ্ছিল। চোখ কিছুতেই খুলে থাকতে পারছিলাম না। আর কি পরিমান যে ঘুমিয়েছি তার ধারণার বাইরে। সেদিন সকালবেলায় সামান্য দু তিন চামচ মত ভাত খেয়েছিলাম।। দুপুরবেলাতেও তাই। এইভাবে শরীর অসুস্থ হয়ে যায়। মুখে কোন রকম স্বাদ পাচ্ছিলাম না। কিভাবে কি খাব।
গত পরশুদিন প্রচন্ড অসুবিধা হয়েছে শরীরে। প্রথমে আমি বুঝতে পারছিলাম না কি থেকে ঠান্ডাটা লাগলো। মা বারবার বলছিল অতিরিক্ত এসি চালানোর কারণে। কিন্তু সত্যি বলতে আমি সারারাত এসি চালিয়েও রাখি না। ঘর ঠান্ডা হয়ে গেল, বন্ধ করে দিই। তাই এসির কারণে ঠান্ডা লেগেছে এটা একেবারেই ভুল ধারণা। বরং বিগত চার-পাঁচ দিন হল প্রচন্ড পরিমাণে সকাল থেকে ঘামছিলাম কাজ করে ওঠার পর।। বাড়ির বিভিন্ন ধরনের কাজ থাকে। সেই কাজগুলো টুকটাক নিজে থেকেও করতে হয়। আমি বুঝতে পারছিলাম অতিরিক্ত ঘাম হচ্ছে। আর সেই ঘাম অবস্থায় সোজা স্নান করতে চলে যেতাম। আর এখান থেকে এই ঠান্ডা গরম টা লেগেছে।
তারপর যেদিন জ্বর এসেছে তার আগের দিন আমি দুপুর বেলার দিকে ফ্রিজ থেকে বার করেই দই খেয়ে নিয়েছিলাম। আমার হঠাৎ দই খেতে এতটা ইচ্ছা করছিল। হতে পারে সেখান থেকেও গলা ব্যথাটা শুরু হয়। ফ্রিজ থেকে ডাইরেক্ট কোন কিছু বের করে কখনোই খাওয়া উচিত না। কিন্তু মাঝেমধ্যে লোভ সামলাতে না পেরে আমি ছোটবেলাতে ফ্রিজ থেকে বার করে ডাইরেক্ট এটা ওটা খেতাম। এখন বড় হয়ে অতটা করি না। তবে মাঝেমধ্যে সেটাও হয়ে যায়। আর লোভে পাপ পাপে মৃত্যু।
যাইহোক এই চলছে দুদিন হল। গতকালকে শরীরের কন্ডিশন একটু বেটার হলেও। শরীর প্রচন্ড পরিমাণে ক্লান্ত। গতকাল দুপুরবেলা মোটামুটি বারোটা থেকে আড়াইটা অব্দি টানা ঘুমালাম। সকালবেলাতেও ৮:৩০ টা অব্দি ঘুমিয়ে ছিলাম। কিছুতেই চোখ খুলে থাকতে পারছিলাম না। আর কোন রকম কাজ তো দূরের কথা গায়ে কিছুতেই জোর পাচ্ছিলাম না। মাথা তোলা যাচ্ছিল না বিছানা থেকে। খাওয়া-দাওয়ার দিকেও সেরকম অবস্থা ছিল। একেবারে অল্প পরিমাণে খেতে পারছিলাম। গত কালকে মা তিল আর থোর ভাজা করেছিল। ওই দিয়ে যা একটু ভাত খেয়েছি।
চোখের সামনে থেকে আম কাঁঠাল সকলে খাচ্ছে। আর এই দুদিন মা আমাকে আম কাঁঠাল খেতে দেয়নি। জ্বরের অবস্থাতে এসব নাকি খেতে নেই, খেলে নাকি পেট গরম হয়ে যায়। তাই গতকাল সন্ধ্যা বেলা থেকে যখন প্রচন্ড পরিমাণে ক্ষিদে পাচ্ছিল ঠিক করলাম কিছু একটা তৈরি করব। শরীরে কোনরকম এনার্জি নেই যে উঠে বসে দাঁড়িয়ে থেকে কোন কিছু রান্না করার। তাই তৈরি করার প্ল্যানিং বাতিল করলাম। ঠিক করলাম অর্ডার দিয়ে নেব।
ফটাফট অর্ডার করে নিলাম আমার পছন্দের চাইনিজ রেসিপি গুলো। যা যা অর্ডার করেছিলাম সেগুলো নিচে লিস্ট করে দিয়ে দিলাম।
নং | খাবার | ভারতীয় দাম | Steem সংখ্যা appox |
---|---|---|---|
১ | ভেজ স্টিম মোমো | ৫৯ টাকা | ৬ steem |
২ | প্যান ফ্রায়েড চিকেন মোমো | ১১৯ টাকা | ১১ steem |
৩ | ভেজ হাক্কা নুডলস | ৯৫ টাকা | ৯ steem |
৪ | ভেজ Manchow সুপ | ৮৫ টাকা | ৮ steem |
১.ভেজ স্টিম মোমো
যেহেতু মা চিকেন একেবারেই খায় না। তাই আমি ভেজ আনিয়েছিলাম । আসলে একা একা খেতে কখনোই ভালো লাগেনা। বাড়িতে যখন অর্ডার করছিস স্বাভাবিকভাবেই সবার জন্য করব। এ কারণেই ভেজ মোমো আনানো। এই মোমো , আমি কৃষ্ণনগরের একটি রেস্টুরেন্ট কাম ক্যাফে mommozi থেকে অর্ডার করেছিলাম।
এটাও সেম দোকান থেকে অর্ডার করা। ওদের দোকানে মোমো ভীষণ ভালো করে। তবে এটা আমি চিকেন নিয়েছিলাম। এটা একটু সসেজ ছিল। মা স্টিম মোমো খেতে ভালোবাসে। প্যান ফ্রায়েড অতটা পছন্দ করেনা। তাই এটা আমাদের জন্য ছিল।
৩. ভেজ হাক্কা নুডুলস
দাম অনুযায়ী পরিমাণটা বেশ ভালই ছিল। আমরা সবাই ভাগ করে খেয়েছি। আমার ভেজ হাক্কা নুডলস খেতে খুব ভালো লাগে। এ কারণেই এটা অর্ডার করা। আমি এটা আমাদের কৃষ্ণনগরের ফেমাস রেস্টুরেন্ট মাদার্স হাট থেকে অর্ডার করেছিলাম।
৪. Manchow soup
সর্দি কাশি হলে গরম গরম জিনিস খেতে খুব ভালো লাগে। সুপ খাওয়া শরীরের পক্ষে খুব ভালো। শীত প্রধান দেশে সুপ মানুষ বেশি খেয়ে থাকে। আমারও সুপ খেতে ভালো লাগে। তবে সেটা শীতকালে, অথবা আমার শরীর এরকম খারাপ থাকলে। আমি সাধারণত চিকেন সুপ বেশি পছন্দ করি। কিন্তু মা খেতে পারবে না বলে আমি ভেজ অর্ডার করেছিলাম। এটাও আমি mothers hut থেকে অর্ডার করেছিলাম।
প্রথম দুটো যে দোকান থেকে অর্ডার করেছিলাম ওরা ডেলিভারি চার্জ নিয়েছিল ৩৫ টাকা মতো। তবে পরবর্তী রেস্টুরেন্ট থেকে কোন রকম ডেলিভারি চার্জ নেয় নি। যাই হোক, আজকে আমি অনেকটাই সুস্থ আছি। গতকালকে রাতে পোস্ট করব বলে, শরীরের অসুস্থতার কারণে করা হয়নি। প্রচন্ড পরিমাণে কাশি হচ্ছে আপাতত। জলের ভেপার, গার্গেল, গরম জল খাওয়া, সমস্ত কিছুই চলছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি আবার সুস্থ হয়ে যাব।
আপনারা সকলে সাবধানে থাকবেন। এই ওয়েদারটা খুবই খারাপ সকলের জন্য। ঠান্ডা গরম সকলেরই লাগছে। আজকে এখানেই শেষ করলাম।
গত কয়েক দিন ধরে যে পরিমাণে গরম পরছে সকলের ঘাম বসে প্রায় ঘরে ঘরেই জল সর্দি কাশি দেখা যাচ্ছে। তোমার মত আমাদের বাড়িতে আমার শ্বশুরমশাই সর্দি, কাশি শুরু হয়ে গেছে। তবে জ্বরের মুখে এটা ওটা একটু ঝাল ঝাল জিনিস খেতে ইচ্ছা করে। তুমিও তোমার পছন্দমত খাবার অর্ডার করে দিয়েছিলে সেগুলোই সকলে মিলে খেয়েছো। সুন্দর সুন্দর খাবার শেয়ার করেছ। তোমার সুস্থতা কামনা করি।