চৌধুরী বাড়ি। 🏰
"নমস্কার বন্ধুরা!"
আশা করি সবাই ঈশ্বরের কৃপায় ভালো আছেন। আজকে আপনাদের মাঝে আমি আবারও নতুন একটি গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন আর বেশি দেরি না করে শুরু করে দেই.......
চৌধুরী বাড়ির বড় ছেলে রাহুল। রাহুল ইতালির একটি বিশ্ববিদ্যালয় পড়তো। পড়ালেখা শেষে সে তার দেশে ফিরে আসে। কিন্তু দেশে ফিরে আসার সাথে সাথেই রাহুল একটি কান্ড ঘটিয়ে ফেলে। চৌধুরী বাড়ির সমস্ত মান সম্মান ডুবিয়ে রাহুল তার ভালোবাসার মানুষটির সাথে পালিয়ে বিয়ে করে তার বাড়ি নিয়ে আসে। রাহুলের সাথে সঙ্গ দিয়েছে বাড়ির ছোট ছেলে রোহান।
রাহুলের বাবা তাদেরকে দেখে খুব রেগে গেল। কেননা সে কোনদিনও ভাবিনি তার বড় ছেলে রাহুল এমনটা করবে। তিনি ক্রোধে ফুঁসছেন শুধু। লজ্জায় ওনার মাথা নিচু হয়ে আসে। অথচ তার দুই ছেলে বাড়ির চৌকাঠে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। যেন তারা কোনো মহৎ কাজ করে ফিরলো! এখন তাদের বরণ করা হবে। কিন্তু এটা কখনোই সম্ভব ছিল না।
চৌধুরী সাহেব রেগে তাদের মাকে বললো,"রুমি তোমার ছেলেদের বলে দাও তাদের জন্য আমি মরে গেছি"। এই বলে চৌধুরী সাহেব তার উপরের ঘরে চলে যায়। এই কথা শুনে তাদের মা পড়লেন বেশ বিপাকে। ছেলেদের এমন আচরণে তিনি নিজেও অনেক কষ্ট পেয়েছেন। তবে মায়ের মন বোধহয় পৃথিবীর সব থেকে নরম মন হয়ে থাকে। এজন্য তাদের মা তাদের বাবার মতো রাগ দেখাতে পারলেন না।
রাহুল এবং তার নতুন বিয়ে করে আনা বউ দরজার সামনে এখনো দাঁড়িয়ে আছে। চোখে হয়তো জল। কারোর মুখে কোন কথা নেই। রুমি তার বড় ছেলের দিকে তাকালেন। সে তার ছেলেকে দেখে অবাক। তার বদমেজাজি ছেলে আজকে তার বাবার সামনে কোন কথা না বলে দাঁড়িয়ে ছিল। এমনিতেই চৌধুরী সাহেব তার বড় ছেলে রাহুলের প্রতি ভীষণ রেগে ছিলেন।
তার মার এবার আশা ছিল ছেলেটা দেশে ফিরলে বাবা ছেলের দন্ডটি হয়তো মিটে যাবে। কিন্তু হিতে বিপরীত হয়ে পড়লো। এখন উপায় কি? তার ছেলে তো এখন আর কোন উপায় খোলা রাখেনি। কিছুক্ষণ পর তাদের মা তাদেরকে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করালো। রাহুলের বউ একরাশ মন খারাপ নিয়ে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করলো। তারপর তারা যে যার ঘরে চলে গেল।
এভাবেই চলতে থাকলে চৌধুরী বাড়ির কিছুদিন। চৌধুরী সাহেব তার দুই ছেলের সাথে কথা বলা প্রায় বন্ধ করে দিছে বললেই চলে। সে এখনও বিশ্বাস করতে পারে না যে, তার ছেলে এমন একটি ঘটনা ঘটাতে পারে। সে লজ্জায় বেশ কিছুদিন যাবত বাড়ির বাইরে কোথাও যায় না। লোকজন তার কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করলে সে কি উত্তর দিবে।
হঠাৎ একদিন তার বড় ছেলে রাহুল তার সাথে কথা বলার জন্য ঘরের দরজার সামনে এসে দাঁড়ালো। রাহুল দরজার সামনে এসে বললো,"ভিতরে আসবো, বাবা?" চৌধুরী সাহেব কোন উত্তর না দিয়ে নিজের কাজ করতে লাগলো। তারপর রাহুল একা একাই ঘরের ভেতর প্রবেশ করলো। এবং তার বাবার কাছে ক্ষমা চাইল তার কাজের জন্য। রাহুল তাকে বললো,"বাবা! আমার আর কোন উপায় ছিল না, পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করা ছাড়া।
কারণ আমি আমার ভালোবাসার মানুষটিকে কখনোই হারাতে চাইনি। যখন জানতে পারলাম তার পরিবারের লোক তার বিয়ে ঠিক করেছে তখন আমি রোহানকে সাথে নিয়ে আমার ভালোবাসার মানুষটিকে পালিয়ে বিয়ে করে আনলাম"। রাহুলের সব কথা শোনার পর চৌধুরী সাহেব কিছুটা ভিতর থেকে নরম হলো। আসলে সে বাবাতো,ছেলেদের সাথে এভাবে কথা না বলে থাকতে তার নিজেরও ভালো লাগেনা।
চৌধুরী সাহেব তার ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বললো,আমি তোর বিয়ে ওই মেয়েটার সাথে ধুমধাম করে দেব। পুরো গ্রামের মানুষ তোর বিয়েতে আমন্ত্রিত থাকবে। তোরা ভালো থাকলেই তো আমরা ভালো থাকবো। অবশেষে তাদের বাবা ছেলের অভিমানের গল্পের ইতি হলো। অনেকদিন পর চৌধুরী বাড়িতে আবারো আমেজ ফিরে আসলো। অনেক ধুমধাম করে সেই মেয়ের সাথে চৌধুরী সাহেব তার বড় ছেলের বিয়ে দিলো........
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
গল্পটা সত্যিই অসাধারণ আসলে আমি মনে করি নিজের ভালোবাসার মানুষকে কখনো ছেড়ে দেয়া উচিত নয় পরিবার হয়তোবা কিছুটা সময় রাগ করে থাকবে অভিমান করবে অভিযোগ প্রকাশ করবে বাড়ির মানুষ কি বলবে বাহিরের মানুষ কি বলবে এত কিছু চিন্তা করে কি লাভ ভাই বলেন আপনি কি আপনার প্রিয় মানুষটা হারিয়ে গেলে তাকে খুঁজে পাবেন তাই সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত রাহুলের মত যদি কাউকে ভালোবেসে থাকেন তাহলে তাকে মন থেকে ভালোবেসে ঘরে তোলার চেষ্টা করেন পরিবার একদিন হোক এক বছর হোক কিংবা এক যুগ অবশ্যই আপনাদেরকে মেনে নেবে ধন্যবাদ চমৎকার লেখা আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য ভালো থাকবেন।
আমি আপনার সাথে একমত, ভালেবাসার মানুষকে কখনো ছেড়ে যাওয়া উচিত নয়। কারণ আমাদের ভালোবাসার মানুষটি একবার হারিয়ে গেলে আমরা কখনোই আর ফিরে পাবো না। পরিবারের মতামত ছাড়া বিয়ে করলে প্রথমত তারা রাগ অভিমান করে থাকে, কিন্তু আমরা যখন আমাদের প্রিয় মানুষটির সাথে সুখে থাকি তখন তাদের সকল রাগ অভিমান ভেঙে যায়।
আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 1/6) Get profit votes with @tipU :)
গল্পটি সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। বাবা-ছেলের অভিমান, ভালোবাসা, এবং পরিবারের বন্ধন এত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যে পড়তে পড়তে মনে হলো চরিত্রগুলো একেবারে জীবন্ত। শেষের অংশটি বিশেষভাবে দারুণ, যেখানে বাবার রাগ ভালোবাসায় রূপ নেয়। ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুরো গল্পে একটি আনন্দময় মোড় এনেছে। লেখকের প্রতি কৃতজ্ঞতা, এমন সুন্দর গল্প উপহার দেওয়ার জন্য। ভালোবাসা ও পারিবারিক বন্ধনের এই গল্প সত্যিই অনুপ্রেরণামূলক।
আমি মনে করি, পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর ও পবিত্র ভালোবাসা হলো বাবা ছেলের ভালোবাসা। জীবনে চলার পথে আমাদের বাবার সাথে অনেক সময় রাগ অভিমান হয়৷ কিন্তু এই রাগ অভিমানের জন্য যে তাদের সাথে কথা বন্ধ করে দিবো, এটা কখনোই কাম্য নয়। বাবারা আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রতভাবে জড়িয়ে আছে।
আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
সন্তানদের প্রতি, পিতা মাতারা কখনো রাগ করে থাকতে পারে না। আপনার এই গল্পের মাধ্যমে আবার প্রকাশ পেল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা, এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।
দাদা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য। আপনি ঠিক কথায় বলেছেন, সন্তানদের প্রতি পিতা মাতার কখনোই রাগ থাকতে পারে না। তারা আমাদের ভালোর জন্য সবসময় চেষ্টা করেন। আমরা কখনো ভুল পথে গেলে তারাই প্রথমে আমাদেরকে সতর্ক করে দেয়। পিতা মাতা আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।
ভালো থাকবেন দাদা।