ক্ষুধার্ত 🥲

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

#হ্যালো

আমার বাংলা ব্লগ বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করছি ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি আপনাদের আশীর্বাদ ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায়।

আমি @shapladatta বাংলাদেশ থেকে। আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাই নিয়মিত ইউজার। আমি গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সঙ্গে যুক্ত আছি।

IMG_20250212_152124.jpg

আজ আমি অপনাদের সাথে ভাগ করে নেবে গল্প ক্ষুধার্ত নামক সত্যি গল্প।

শক্রবার সকাল সাতটা ঘুমিয়ে আছি।মেয়েকে নিয়ে প্রতিদিন স্কুল নিয়ে যেতে হয় জন্য সকালে আরাম করে ঘুমাতে পারি না।শুক্রবার তাই ঘুমানোর সুযোগ হয়েছে তবে সকালে প্রতিদিন তারাতাড়ি ওঠার কারনে শুক্রবারেও জাগা পেয়ে গিয়েছিলাম।

চুপচাপ শুয়ে ছিলাম তবে হঠাৎ কেউ একজন কথা বলছে শুনলাম এবং তখনি দিদি আমার রুমে এসে বল্লো একটা লোক এসে বলছে আমি কিচ্ছু চাই না আমি খুব ক্ষুধার্ত আমাকে একটু খেতে দাও।আমাদের বাড়িতে সকালে ভাত শুধু বাচ্চারাই খায় আমরা খাই না আর সেজন্য সকালে কোন তরকারি রান্না হয় না। বাচ্চাদের সকালের খাওয়ার রুটিন ডিম সিদ্ধ, আলু ভর্তাও ঘি।

আমার মেয়েলে যদি বিরিয়ানি ও দেয়া হয় সে বলবে সকালে কি কেউ মাছ মাংস খায়।আসলে ছোট থেকে অভ্যাস্ত এই খাবারে তাই সে আর অন্য কিছু মুখে তোলে না।আমাদের বাড়িতে এমন ভাবে ভাত রান্না করা হয় যে এক,দুজন ব্যাক্তি হওয়া ভাতেই খেতে পারবে।

যাই হোক লোকটিকে ভাত খেতে দেওয়া হলো ডিম ভাজা ও মোয়া মাছের চচ্চড়ি।রাতের রান্না করা চচ্চড়ি ছিলো আর সেগুলো গরম করে ডিম ভেজে খেতে দেয়া হলো।পরম তৃপ্তি নিয়ে লোকটি ভাত খেলো তবে খুব বেশি খেতে পারলো না মাত্র এক প্লেট ভাতেই খেলো। আমি দেখছিলাম আর ভাবছিলাম কতোটা ক্ষুধার্ত হলে এতোটুকু ভাতের জন্য চেয়ে খেতে হয়।
আমি একটা জিনিস লক্ষ করলাম লোকটি ভাত খাচ্ছে খুব লজ্জিত ভাবে।ভাত টুকু চেয়ে যেন খুব লজ্জা পাচ্ছে তাই ওনার সামন থেকে চলে এসেছি।
আসলে গ্রামে অনেক উচ্চবিত্ত পরিবার আছে যারা আজ ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ নিঃস্ব হয়ে গেছ আর সেই পরিবারের মানুষ গুলো মানুষের কাছে কিছু চাইতে গেলে দশবার ভাবে এবং চাইলেও কাচুমাচু হয়ে চায় এবং লজ্জা পায়।

সৃষ্টিকর্তা চাইলে সব পারে অট্টালিকা থেকে কুঁড়েঘর এবং কুঁড়েঘর থেকে অট্টালিকার বাসিন্দা করতে পারে।

ইদানীং খুবই ক্ষুধার্ত মানুষ গ্রামে দেখতে পাওয়া যায়।আগে পরিচিত ভিখারি ছিলো যাদের কে চেনা হয়ে যেতো কিন্তুু ইদানিং অপরিচিত ভিখারির আনাগোনা বেড়ে গেছে। এদের কে দেখলে ভয়ও লাগে মাঝে মাঝে নিউজ হয় যে ভিখারি এসে সব লুটতরাজ করে নিয়ে গেছে একজন খুব সাবধানের সাথে থাকতে হয়।

কিছুদিন আগে একটি পাগল এসে খেতে চাইলে তাকে খেতে দিয়েছিলো আমার সামনের বাড়ির এক ভাবি। আবোলতাবোল বকছিলো সম্ভবত পাগল।দেখতে ভয়ংকর। একা আমি বাড়িতে থাকলে তার সামনে যাওয়ার সাহস করতাম না।তিনিও খেতেই চাইলো শুধু।আসলে মানুষ পৃথিবীতে যতো কষ্ট করে যতো চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই সব খাওয়া পড়াও ভালো থাকার জন্য।

খারাপ কাজ করে কখনো ভালো থাকা সম্ভব নয় আবার ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে খারাপ সময় কার কখন আসবে তা বলা সম্ভব নয়।মৃত্যু যেমন কখনে বলে কয়ে আসে না সেরকম বিপদ খারাপ সময়, দারিদ্র্যতা কখনো বলে আসে না।

অসহায় মানুষের জায়গায় নিজেকে দাঁড় করে দেখলে কতোটা ভয়ংকরী তাদের জীবন তা বোঝা সম্ভব। সৃষ্টিকর্তা সব মানুষের ক্ষুধা নিবারন করুন সেই কামনা করি সব সময়। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।আবারও দেখা হবে অন্যকোন নতুন পোস্টের মাধ্যমে।
সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।

টাটা

পোস্টবিবরণ
পোস্ট তৈরি@shapladatta
শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসOppoA95
লোকেশনবাংলাদেশ

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20230826_182241.jpg

আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



IMG_20250123_234044.png

IMG_20250202_194120.png

Sort:  
 3 months ago 

Screenshot_2025-02-12-15-29-35-63_0b2fce7a16bf2b728d6ffa28c8d60efb.jpg

Screenshot_2025-02-12-15-25-59-47_40deb401b9ffe8e1df2f1cc5ba480b12.jpg

Screenshot_2025-02-12-15-25-28-81_40deb401b9ffe8e1df2f1cc5ba480b12.jpg

Screenshot_2025-02-12-15-24-22-80_6604d2525654b46e33aa2968a0a78870.jpg

 3 months ago 

আপু আপনার লেখাটা পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। সত্যিকথার অর্থে কোন ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে খাওয়া দেওয়া এটা যে কত পূণ্যের কাজ যদি আমরা বুঝতে পারতাম তাহলে আমরা প্রত্যেকদিন একটা ক্ষুধার্ত মানুষকে খাবার দিতাম। আপনার এই বিষয়টি আমার কাছে ভীষণ ভীষণ ভালো লেগেছে।

 3 months ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 3 months ago 

এই সমস্যাটা আমারও হতো শহরের থাকতে সকালে রান্না করতাম না।অনেক সময় ক্ষুধার্ত ব্যক্তি খাবার চাইতো খুব একটা দিতে পারতাম না তখন টাকা দিতাম বেশি করে যাতে হোটেলে গিয়ে খেতে পারে। এই অসহায় লোকগুলোকে দেখলে খুবই মায়া কাজ করে। তবে এনাদের খাওয়াতে পারলে মনে আলাদা প্রশান্তি পাওয়া যায়।