গঙ্গা স্নানের অভিজ্ঞতা

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

বন্ধুরা ,

সবাই তোমরা কেমন আছো ? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছো।

বেশ কয়েকদিন ধরে আমার শরীর তো বেশ খারাপই ছিল। আজ থেকে শরীরটা একটু ভালো লাগছে। আজ সরস্বতী পুজোর দিন ছিল কিন্তু অসুস্থতার কারণে বাইরে যাওয়ার কথা ভাবতেই পারিনি। পুজোর দিনটা বাড়িতে বসেই কাটিয়ে দিলাম। অন্যান্য বছর এই দিনটাতে বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়াই, খাওয়া-দাওয়া সব কিছু বাইরেই হয়। যেসব স্কুলে আমি অনেক আগে পড়ে এসেছি সেই সব জায়গাগুলোতে এই দিনটাতে আমি ঘুরতে যাই সেখানকার পুজো গুলো দেখার জন্য। আজ কোন জায়গায়ই না যেতে পেরে বেশ আফসোস লাগছিল কিন্তু কোন কিছু করার ছিল না। আজ সারাদিন বাড়িতে বসেই বন্ধুদের হোয়াটসঅ্যাপ ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাস দেখে পুজোর আপডেটগুলো পেয়েছি এবং ফোনের মাধ্যমে ইনজয় করার চেষ্টা করেছি ।

20220813_150112.jpg

20220813_150129.jpg

যাইহোক আজকের নতুন একটি ব্লগে তোমাদের সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি। আজকের ব্লগে তোমাদের সাথে আমার গঙ্গা স্নানের অভিজ্ঞতা নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করব। ঘটনাটি কয়েক মাস আগের একটি ঘটনা। আমার এক বন্ধুর বাড়ি ব্যারাকপুরের কাছেই ছিল। তার বাড়িটা এমন পজিশনে ছিল তার বাড়ি থেকে হেঁটে গঙ্গার একটি ঘাট পর্যন্ত যেতে মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মত সময় লাগে। এতটা বাড়ির পাশে গঙ্গা সেটা বেশ সারপ্রাইজিং একটা বিষয় ছিল আমাদের জন্য । বন্ধুর বাড়ির পাশের গঙ্গার কথা আমরা অনেক আগে থেকেই জানতাম এবং মাঝে মাঝে তার বাড়িতেও আমরা এই গঙ্গার পাড়ে বসে হাওয়া উপভোগ করার জন্য গেছি। কয়েক মাস আগে পুনরায় এমন উদ্দেশ্য নিয়ে গেছিলাম তাদের বাড়িতে কয়েকজন বন্ধুরা মিলে।

তাদের বাড়ি যাওয়াটা আমাদের জন্য একটু জটিল ছিল। তারপরও ভালো কিছু সময় সেখানে কাটানোর আশা থাকলে একটু কষ্ট করে সেখানে যাওয়া লাগবেই। বেশি দূরত্বের পথ না, কিন্তু ভেঙ্গে ভেঙ্গে যেতে হয়। তিন থেকে চারবার টোটো বা অটো চেঞ্জ করতে হয়, এই জন্যই যা একটু জটিল লাগে। যাইহোক দুপুরের দিকেই তাদের বাড়ি পৌছে গেছিলাম আমরা কয়েকজন বন্ধুরা মিলে। যাওয়ার সাথে সাথে বন্ধুর মা বলে, "তোমরা বাড়ি থেকে স্নান না করে আসলে আজ গঙ্গায় গিয়ে স্নান করে আসতে পারো"। বন্ধুর মায়ের কথায় একদিকে খুশি হয়েছিলাম অন্যদিকে গঙ্গায় স্নান করতে একটু ভয় ভয়ও লাগছিল ।তারপরও বন্ধুরা সবাই মিলে আলোচনা করে চলে গেলাম গঙ্গার পাড়ে, সাথে করে নিয়ে গেছিলাম সবার জন্য একটি করে গামছা এবং একটি করে শর্ট প্যান্ট।

20220813_150135.jpg

20220813_150054.jpg

সেখানে গিয়ে দেখি গঙ্গার ঘাটে অনেক মানুষ স্নান করছে। খোলা জায়গায় আমাদের স্নান করার অভ্যাস না থাকায় একটু অ্যাকওয়ার্ড লাগছিল আমাদের। যাওয়ার সাথে সাথেই যাদের বাড়িতে গেছিলাম সেই বন্ধুটি গঙ্গায় স্নান করতে নেমে যায়। তারপর বন্ধুর স্নান করা দেখে আমরাও নেমে পড়লাম স্নান করার উদ্দেশ্যে। প্রথমে ঘাট থেকে নেমে বেশি দূর আমরা যাচ্ছিলামই না কারণ এই গঙ্গায় ডুবে যাওয়ার ভয় থাকতে পারে সাঁতার জানা থাকলেও। অনেক সময় দেখা গেছে স্রোতের সাথে অনেকে দূরে চলে যায় । আমরা ঘাট থেকে খুব একটা দূরে যায়নি, ঘাটের কাছে থেকে সাঁতার কেটে বেশ আনন্দ করে স্নান করেছিলাম । আমরা বন্ধুরা সবাই একসাথে ছিলাম বলেই এত আনন্দ হচ্ছিল। যদি একা স্নান করতে যেতাম তাহলে হয়তো এমন মজা করতে পারতাম না।

বন্ধুরা একসাথে ছিলাম দেখেই একটা আলাদা পরিবেশ তৈরি হয়েছিল উপভোগ করার। প্রায় ৩০ মিনিটের মত সময় আমরা ঝাঁপাঝপি করি, সাঁতার কাটি কিন্তু সাঁতার কেটে বেশি দূর যায়নি। সামান্য একটু দূরে গিয়ে আবার ঘাটে ফিরে আসি, এইভাবেই স্নান করেছিলাম। আমার বন্ধু তার বাড়ি থেকে একটি বড় খালি তেলের বোতল নিয়ে গেছিল সেটা ধরে ধরেও আমরা সাঁতার কাটছিলাম। সবাই মিলে মজা করে ঝাঁপাঝপি এবং সাঁতার কাটা কমপ্লিট করে সেখান থেকে আমরা আবার পুনরায় বন্ধুর বাড়ি চলে আসি। সেখানে এসে আমরা দুপুরের খাওয়া দাওয়া করি।

20220813_150216.jpg
ক্যামেরা: স্যামসাং
মডেল: SM-M317F
ফটোগ্রাফার: @ronggin
অবস্থান: ব্যারাকপুর ,ওয়েস্ট বেঙ্গল।

গঙ্গা স্নানের অভিজ্ঞতা নিয়ে শেয়ার করা আজকের ব্লগটি তোমাদের কেমন লাগলো কমেন্ট করার মাধ্যমে জানিও । সবাই ভালো থাকো, সুস্থ থাকো , সুন্দর থাকো ,হাসিখুশি থাকো , নিজের পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকো , সবার জন্য এই শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  
 2 years ago 

আপনি যে অসুস্থ সেটা আপনার সাথে ডি এ কথা বলে জানতে পেরেছি। এখন কিছুটা সুস্থ্য জেনে ভাল লাগল। আপনি এবং বন্ধুরা অনেক কষ্ট করে অবশেষে বন্ধুর বাড়ি গিয়েছেন এবং গঙ্গা স্নান করেছেন। গঙ্গা স্নানের কথা অনেক শুনেছি। আজ আপনার পোস্টের মাধ্যমে গঙ্গায় গোসল করাও দেখতে পেলাম। যারা শহরে থাকে তাদের জন্য হঠাৎ নদীর ধরে লোকজনের সামনে গোসল করাটা কিছুটা অসস্তির বেপার বটে। আপনার ছবিগুলো ভাল হয়েছে। ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই হঠাৎ করে নদীর ঘাটে লোকজনের সামনে স্নান করার ব্যাপারটা বেশ একটু প্রবলেমের ছিল তারপরও কোনরকম করেছিলাম আর কি।