প্রশ্নফাঁসে শিক্ষামন্ত্রীর সব উদ্যোগ ব্যর্থ
চলতি বছরের এসএসসিতে যে সাতটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে এর সবকটিরই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। পরীক্ষার আগে প্রশ্ন ছড়িয়ে দেওয়া হয় ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। প্রশ্নফাঁসের আগে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয় ফেসবুকে। প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে সরকার সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সব উদ্যোগ বিফলে গেছে।
শিক্ষামন্ত্রীর সর্বশেষ থেরাপি হচ্ছে পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে কারও কাছে মোবাইল ফোন পেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। এর আগে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণাসহ অনেক পদক্ষেপ নেন শিক্ষামন্ত্রী। পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে না পারায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকে বলেছে শিক্ষমন্ত্রী এখন পর্যন্ত সাত বিষয়ে ফেল করেছেন।সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হচ্ছে- পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে কেউ মোবাইল ফোন নিয়ে এলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।
এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।ওই নির্দেশনায় আবারও মনে করিয়ে দেওয়া হয়, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কোনো পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না।এর আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের ধরিয়ে দিলে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়াসহ আরও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ হয়নি। বরং ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই পরীক্ষার সাতটি বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে।
সর্বশেষ গত রোববার পরীক্ষার দিন আড়াই ঘণ্টা ইন্টারনেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অবশ্য গতকাল সকালে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার।এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে গত রোববার ‘জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত’ এক আদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (মাউশি) সব বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের এই নির্দেশ পাঠানো হয়।এসএসসিতে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে করণীয় নির্ধারণে গত ৪ ফেব্রুয়ারি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরকে প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়।
গত রোববার ওই কমিটির প্রথম সভায় আলমগীর জানান, প্রশ্নফাঁসে ব্যবহৃত ৩০০ মোবাইল ফোন নম্বর চিহ্নিত করে সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এসব মোবাইল নম্বরের মালিকদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযানেও নেমেছে।জানা গেছে, এবার প্রথম পরীক্ষা ছিল বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা। এদিন পরীক্ষার ২৪ মিনিট আগে পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়। দ্বিতীয় দিন ৪৫ মিনিট আগে প্রশ্ন পাওয়া যায় ফেসবুকে। পরে ইংরেজি প্রথম পত্রের প্রশ্ন ছড়িয়ে দেওয়া হয় হোয়াটসঅ্যাপে পরীক্ষার দুই ঘণ্টা আগে। ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই সকাল ৯টা ২০ মিনিট থেকে ৯টা ২৪ মিনিটের মধ্যে একাধিক ফেসবুক গ্রুপে ‘খ’ সেটের প্রশ্নফাঁস হয়। ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষার প্রশ্নফাঁস হয় পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে। প্রশ্নফাঁসের ধারাবাহিকতায় গণিতের প্রশ্নপত্রও ফাঁস হয়।
টাঙ্গাইলটাইমস