নীল মূর্তি রহস্য
অনেকদিন ধরে বইয়ের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। আরে বউ না,বইয়ের কথা বলেছি।যদিও এখনো বউয়ের সাথেও সম্পর্ক টা হল না।যাই হোক আফসোস করে আর কি হবে।তো যেটা বলছিলাম,অনেকদিন থেকে বই পড়া হয়না ব্যস্ততার কারনে। আজ থেকে সব টিউশনে ঈদের ছুটি।তাই হাতে অফুরন্ত সময়। তাই দুপুরে পড়তে বসলাম। দুপুর বেলা রহস্য উপন্যাস টাই ভাল জমে।তাই কাকাবাবু সমগ্র নিয়ে বসে পড়লাম। আজ সেই গল্পটিই শেয়ার করব আপনাদের সাথে।
সংক্ষিপ্ত বর্ণনা
বইয়ের নাম | কাকাবাবু সমগ্র |
---|---|
গল্পের নাম | নীলমূর্তি রহস্য |
লেখক | সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় |
জনরা | কিশোর রহস্য উপন্যাস |
রেটিং | ৪/৫ |
কাকাবাবুর আসল নাম রাজা রায় চৌধুরি।উনি ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগে কাজ করতেন।আফগানিস্তানে গিয়ে একটি দুর্ঘটনায় তার একটি পা নষ্ট হয়ে যায়। তিনিও চাকুরী থেকে অবসর নেন। কিন্তু এখনো বিভিন্ন প্রত্নবস্তুর খোজে উনি ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এমনকি বিদেশেও ঘুরে বেড়ান। তার সাথে থাকে তার বড় ভাইয়ের ছেলে সুনন্দ রায় চৌধুরি যার ডাকনাম সন্তু।কাকাবাবুর অ্যাডভেঞ্চার এর গল্প গুলো সন্তুর লেখনীতে লেখা,তাই এখানে গল্পে রাজা রায় চৌধুরী কে কাকা বাবু নামেই উল্লেখ করা হয়েছে।
সন্তুর বন্ধু জোজো। জোজো একটু গুলবাজ ছেলে। সব সময়েই সে গুল মারতে ভালবাসে। তো একদিন সে সন্তুদের সাথে বাজি ধরে একজায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে তার পিসেমশায় এর বাড়ি। তাই ফেরার পথে সে পিসেমশায়ের সাথে সন্তুদের দেখা করানোর জন্য নিয়ে যায়। এখানে বলে রাখা ভাল জোজোর পিসেমশায় একজন বিজ্ঞানী। তিনি অনেক কিছুই আবিষ্কার করেছেন। পরিচয়ের একপর্যায়ে সন্তুর মুখে কাকাবাবুর কথা শুনে জোজোর পিসে সন্তুকে বলেন তোমার কাকাবাবু আমার সব থেকে বড় শত্রু।
সন্তু বাড়ি ফিরে কাকাবাবুকে পুরো ঘটনা জানায়। কাকাবাবু অবশ্যমনেই করতে পারলেন না। তবে পরের দিন থেকেই তাদের বাসায় আশ্চর্য বাক্স আসতে থাকে,সেগুলোতে থাকত অদ্ভূত কিছু জিনিস। যেমন:কয়েকগাছা চুল,আলুরদম। অনেকচিন্তার পর কাকাবাবু চিনতে পারেন। জোজোর পিসেমশায় কে কাকাবাবু এর আগে একবার শাস্তি দিয়েছিলেন।সেটাই উনি এখনো ভুলতে পারেন নি।
এর মাঝেই কাকাবাবুর কাছে একটি কেস আসে। কেস টা একটু অদ্ভূত। একজন জমিদার এসে জানায় তাদের বংশগত একটি অনেক দামি মূর্তি চুরি গেছে। তবে চুরি গেছে সেটা কয়েক প্রজন্ম আগে।সেই মূর্তি সাম্প্রতিক কালে খুজে পাওয়া গেছে দূর্গম পাহাড়ি আঞ্চলে। এই পাহাড়ি অঞ্চলে কাকাবাবু একবার ঘুরে এসেছিলেন,তাই এরা এসেছে কাকাবাবুর কাছে যদি কাকাবাবু উদ্ধার করে দিতে পারেন সেই মূর্তি। কাকাবাবু তাদের থেকে প্রমাণ চান যে এই মূর্তি সত্যই তাদের। কিন্তু তারা কোন প্রমাণ দেখাতে পারে নি।
তাই কাকাবাবু তাদের প্রস্তাবে রাজি হন নি। তাদের কড়া কিছু কথা বলে তাড়িয়ে দেন। সেই লোকগুলো কাকাবাবুকে চ্যালেঞ্জ জানায়।তখন কাকাবাবুও জানান তাদের চুরি ঠেকাতে তার সাধ্যমত চেষ্টা উনি করবেন। এরপর লোকগুলো চলে যায়। কিন্তু সেদিনই কাকাবাবু দূর্ঘটনায় পতিত হয়েছেন বলে সন্তুকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যাওয়া হয়। আর সন্তুকে আঘাত করার ভয় দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কাকাবাবুকে।
গিয়ে দেখেন এরা সেই মূর্তির কেস নিয়ে আসা লোকগুলো। আর তাদের সাথে যোগ দিয়েছেন জোজোর কাকাবাবু। সন্তুর সাথে জোজোকেও আনা হয়েছে৷ কাকাবাবুর কাছে থেকে প্রত্যাখ্যাত হবার পর সেই লোকগুলো গিয়েছিল জোজোর পিসেমশায়ের কাছে। উনি এই কাজ করতে রাজি হন।তবে শর্ত হিসেবে উনি চান কাকাবাবুকেও তার সাথে দেওয়া হোক। কিন্তু কাকাবাবু আবারো জানান উনি তাদের সাহায্য তো করবেনই না,উলটো তাদের বাধা দেবেন। কিন্তু সন্তুর ক্ষতির কথা বলে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে কাজে বাধ্য করতে থাকে তারা। কিন্তু কাকাবাবু, সন্তু আর জোজো সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায় এবং পরিকল্পনা করেন মূর্তিচোরদের আটকানোর।
কাকাবাবু কি পারবেন মূর্তিচুরি ঠেকিয়ে চোরদের শাস্তি দিতে? নাকি ব্যর্থ হবেন? উনি কি পারবেন জোজোর পিসেমশায় কে আবার শাস্তি দিতে? জানতে হলে পড়ে ফেলুন গল্পটি।
ব্যক্তিগত অভিমত
গল্পটি বেশ সুন্দর। খুব খুতখুতে না হলে গল্পটি উপভোগ করেবন। তবে আমার অভ্যাস হল মনে মনে প্রশ্ন করা। আমার খালি মনে হচ্ছিল কাকাবাবুর মোটিভটা খুব দুর্বল।উনি চাইলেই উনার পরিচিত বড় কোন পুলিশ অফিসার কে জানিয়ে দিলেই উনাকে এত হাঙ্গামার মাঝে যেত হত না। তবে তারপরেও লেখকের রহস্য ধরে রাখার ক্ষমতার জন্য গল্পটি উপভোগ করেছি। সময় ও ভাল কেটেছে। হাতে ফাকা সময় আর রহস্য গল্প পড়ার শখ থাকলে পড়ে ফেলতে পারেন কাকা বাবু সন্তুর রহস্য এডভেঞ্চার টি।
OR
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
টুইটার লিংক
কাকাবাবু সন্তুর বেশ কয়েকটা গল্প আমার পড়া আছে। কিন্তু মূর্তি রহস্য টা পড়া হয়নি। এটার মধ্যে বেশ একটা থ্রিলিং ভাব আছে। তবে শেষ পর্যন্ত ঐ মূর্তি চোরা কারবারি দের কে কাকাবাবু ধরবেন এবং শাস্তি দিবেন এটা নিশ্চিত। তবে ভাই কতদিন আর বউ থেকে দূরে থাকবেন বলেন। ইয়ে মানে বই থেকে। এটা থাকা তো সম্ভব না তাই না।
হাহাহাহা৷ বইয়ের কাছে যখন গেছি বউয়ের কাছেও শীঘ্রই যাব।দোয়া করেন। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আমি মনে করি, কাকাবাবু অবশ্যই মূর্তি চুরি ঠেকাতে পারবে এবং তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করবে। তাছাড়া জোজোর পিসেমশায় কে আবারও একবার শাস্তি দেওয়ার দরকার আছে, আশা করি সেটাও দেবে। এই ধরনের অ্যাডভেঞ্চারাস গল্প আমার অনেক ভালো লাগে।
ঠিক আছে ভাই, চেষ্টা করবো কাকা বাবু সন্তুর রহস্য এডভেঞ্চার টি পড়ার জন্য।