আমার নিজের লেখা গল্প।। মায়ের নিঃস্বার্থ ত্যাগ ও ভালোবাসা।। পর্ব-৪৫
প্রিয়, পাঠকগণ,
দেখ, এখনকার অবস্থাটা নিয়েই কথা বল। পরে কী হবে না হবে তা আমরা জানি না। গোলামির শেকল যখন মানুষ ভাঙবে তখন নিজেদের ভালো-মন্দ নিজেরাই ঠিক করে নেবে। ওদের মগজগুলোতেও অনেক কিছু ঢোকনো হল, যে-সব কিছু ওরা চায় না তাও। ব্যস্, তারপর ওরা নিজেরাই ভেবে দেখুক। হয়তো পুরনো দিনের সবকিছুই ওরা ছুড়ে ফেলে দিতে চাইবে-মায় নিজেদের বিদ্যে-সাধ্যি-নিজেদের সবকিছু। হয়তো দেখবে সবকিছুকে ওদের বিরুদ্ধে লাগানো হয়েছে, গির্জেয় দেবতাটিকেও। মানুষগুলোর হাতে পুঁথিপত্তর তুলে দাও; দেখবে নিজেরাই সব হদিশ-ফিকির করে নেবে। বুঝলে? এই হল আসল
কথা।' পাভেল আর রীবিন একা থাকলে তক্ষুনি লাগে অন্তহীন তর্ক, তবে মেজাজ বিগড়য় না। মা ব্যগ্র হয়ে প্রত্যেকটি কথা শোনে। বুঝতে চায় এ তর্কের মর্ম কী। মাঝে মাঝে মনে হয়-এই চওড়া-কাঁধ, কালো-দাড়িওলা লোকটা আর নিজের ওই দীর্ঘ-দেহ সুগঠিত জোয়ান ছেলে দুজনেই যেন অন্ধ হয়ে গেছে। এদিক যায়, ওদিক যায়, বলিষ্ঠ কিন্তু অন্ধ-হাতে সবকিছু ধরে নাড়া দেয়, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঠেলে দেয়, জিনিসপত্র পড়ে যায় ঝনঝন্ করে, পায়ের তলায় পিষে যায়; তবু পায় না পথ। এটা ছুড়ে ফেলে, ওটা ছুঁড়ে ফেলে, ঠিক জিনিসটি কিছুতেই মেলে না। কিন্তু ওদের নিষ্ঠা বল, আশা বল, কিছুরই কমতি নেই...
মা এখন এ-সব কথা শুনতে শিখেছে। কথাগুলো যতই সাংঘাতিক হোক, যতই বে-আব্রু হোক, মনের মধ্যে গিয়ে আগের মতো আর ধাক্কা দেয় না। শুনতেও শিখেছে, ঝেড়ে ফেলতেও শিখেছে। ওরা যখন ঈশ্বরকে অস্বীকার করে, মা'র মাঝে মাঝে মনে হয় তার মধ্যেও কী একটা গভীর বিশ্বাস আছে। স্নিগ্ধ- শান্ত ক্ষমার হাসি হাসে মা। রীবিনকে ভালো লাগে না, কিন্তু আগের মতো
রাগও হয় না তার ওপর। প্রতি সপ্তাহে খখলের জন্য বই আর জামা-কাপড় নিয়ে জেলে যায় মা। এক দিন সাক্ষাতের অনুমতিও পাওয়া গেল। ফিরে এসে সস্নেহে বলল: 'ঠিক সেইরকমই আছে। সকলের সঙ্গে বেশ খাতির, খুব ঠাট্টা-মশকরা
করছে সবাই ওর সঙ্গে। খুব কষ্ট পাচ্ছে কিন্তু সে কি আর মুখ ফুটে বলবে!' 'ঠিকই করছে।' রীবিন বলে, 'দুঃখটা তো আমাদের চামড়ার মতো। রোজকার জল-ভাতের মতো দুঃখু ধান্দা, এ নিয়ে গুমর করার কী আছে? সক্কলকার চোখেই তো আর ঠুলি পরানো নেই। কেউ কেউ ইচ্ছে করে চোখ বন্ধ করে থাকে। লোকে যদি বেকুব হয়, তাহলে সহ্য করাই তার কপালে থাকে...'
For work I use:
মোবাইল |
realme C25s |
ফটোগ্রাফার |
@dreamlife10 |
লোকেশন |
ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
মাঠে |
ভ্লাসভদের ধূসর রঙের ছোট্ট বাড়িটার ওপর ক্রমশ বেশি করে বস্তির সকলের নজর পড়ছে। তাতে একদিকে যেমন প্রচুর সন্দিগ্ধ সাবধানতা আর অস্পষ্ট শত্রুতা, তেমনি অন্যদিকে একটা সরলবিশ্বাসী কৌতূহলও আছে। এক-একসময় হঠাৎ কেউ আসে, চুপি চুপি চারদিকে চেয়ে শুধোয় পাভেলকে:.......
চলবে..........