আমার নিজের লেখা গল্প।। মায়ের নিঃস্বার্থ ত্যাগ ও ভালোবাসা।। পর্ব-৩৬
প্রিয়, পাঠকগণ,
অফিসার তার ফরসা হাতের রোগা রোগা আঙুলগুলো দিয়ে তাড়াতাড়ি বই তোলে একটার পর একটা। নিপুণ হাতে পাতা উল্টে-উল্টে একদিকে ছুড়ে ফেলে। কোনো কোনো বই মাটিতে ধপ করে পড়ে যায়। কারো মুখে কথা নেই। ঘর্মাক্ত পুলিশেরা হাঁপাতে থাকে। শোনা যায় শুধু তাদের হাঁপানোর শব্দ আরে রেকাবের ঠকঠকানি। আর মাঝে মাঝে প্রশ্ন:
'ওদিকে দেখা হয়েছে?'
পাভেলের পাশেই দেয়ালের কাছে দাঁড়িয়ে আছে মা; ছেলের মতোই বুকের ওপর হাত আড় করে রাখা। তারি মতো তাকিয়ে আছে অফিসারের দিকে। হাঁটুদুটো কেঁপে ওঠে। চোখের সামনে সব ঝাপসা। হঠাৎ ঘরের স্তব্ধতা ভেঙে যায়। কর্কশ গলায় নিকলাই বলে ওঠে:
'দেখবেন দেখুন, কিন্তু বইগুলো মাটিতে ফেলছেন কেন?'
মা চমকে ওঠে। ভেরিয়াকভের মাথাটা যেন হঠাৎ ধাক্কা খেয়ে নড়ে উঠল। রীবিন ঘোঁত ঘোঁত করে উঠে স্থিরদৃষ্টিতে তাকাল নিকলাইয়ের দিকে। অফিসার চোখ কুঁচকে নিকলাইয়ের বসন্তের দাগওলা পাথরের মতো কঠিন মুখটার দিকে একবার তীব্র দৃষ্টি হানল। আঙুলগুলো আরো তাড়াতাড়ি বইয়ের পাতা উল্টোতে আরম্ভ করে। মাঝে মাঝে বড় বড় কটা চোখগুলি এমন পাকায় যেন অসহ্য কী একটা ব্যথায় ওয় কলজেটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে, এক্ষুনি যেন রাগে চিৎকার করে উঠবে।
ভেসঙ্গিক আবার বলে, 'ওহে সেপাই, বই তুলে রাখো বলছি।'
পুলিশেবা ফিরে প্রথমে ওর দিকে তারপর অফিসারের দিকে চায়। অফিসার চওড়া-দেহ নিকলাইয়ের আপাদমস্তক দেখে নিয়ে নাকী-স্বরে টেনে মাথা তুলে টেনে বলে, 'হুঁ.... তুলে রাখ।' একজন পুলিশ নিচু হয়ে আড়চোখে ভেসঙ্গিকভের দিকে তাকিয়ে ছড়ানো বইগুলো কুড়োতে লাগল।
মা পাভেলের কানে চুপি চুপি বলে, 'নিকলাই চুপ করলেই ভালো হয়, বাবা।' পাভেল কাঁধ ঝাঁকানি দেয়। খখল মাথা নিচু করে। 'বাইবেল পড়ে কে?'
For work I use:
মোবাইল |
realme C25s |
ফটোগ্রাফার |
@dreamlife10 |
লোকেশন |
ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
মাঠে |
'আমি পড়ি।' পাভেল জবাব দেয়।
'বেশ।' বলে অফিসার চেয়ারে হেলান দিয়ে আরাম করে টেবিলের নিচে পা- দুটো ছড়িয়ে দিয়ে বসে রোগা রোগা হাতের আঙুল মক্কায়। তারপর গোঁফ
'এ সব বই কার?'
'আমার।' পাভেল বলে।
'তোমারই নাম আন্দ্রেই নাখদ্কা?'
ডুমরিয়ে বলে নিকলাইকে:
নিকলাই এগিয়ে এসে জবাব দেয়, 'হাঁ।
খখল হাত বাড়িয়ে ওকে পিছনে টেনে বলে:
'না, ওর ভুল হয়েছে, আমি আন্দ্রেই!...'
চলবে..........