পিসির বাড়ি, মধুর হাঁড়ি 😋

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

হ্যাল্লো বন্ধুরা

|| আজ ১ ফেব্রুয়ারি || শনিবার ||


প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি আপনারা সকলে সব দিক থেকে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় পরিবার সহ যেমন আছি, বেশ ভালো আছি। আজ বরাবরের মতো আবারো আপনাদের মাঝে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করবো আমার পোস্ট টি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে। এবং আপনারা আপনাদের মূল্যবান মতামত শেয়ার করবেন। তো আর কথা না বাড়িয়ে সরাসরি চলে যাই মূল পোস্ট এ।

GridArt_20250201_214022164.jpg


সারাজীবন তো শুনে এসেছি " মামার বাড়ি, মধুর হাঁড়ি! " কিংবা জামাইদের জন্য " শ্বশুড়বাড়ি মধুর হাঁড়ি!" । বাকি রা কী দোষটা করলো শুনি! আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি " পিসির বাড়ি, মধুর হাঁড়ি " 😁। আমার ছোটপিসির বাড়ি থেকে অভিজ্ঞতা আর কি!

IMG20250107135538.jpg


খাওয়া দাওয়া নিয়ে আমি বরাবরই ভীষণ সিম্পল ধাঁচের ঘরোয়া খাবার দাবার ই পছন্দ করি। আমার রেসিপি পোস্ট গুলোও খেয়াল করলে দেখবেন একদম ঘরোয়া, সাধারণ নিত্যদিনকার খাবার দাবার ই আমি পোস্ট করি বেশি। সাথে কিছুটা বরং সেকেলে ভাব ই থাকে। ছোট পিসির বাড়িতে এত্ত বছর পর গিয়েছি আমি, পিসির আপ্যায়ন এ আমি তো মোটামুটি অত্যাচারিতই বলতে পারেন।কোনো মেহমানদারি স্টাইল নয়, একেবারে ঘরের মানুষের মতো স্টিলের প্লেটে খাবার। তারই মাঝে রয়েছে অনেক অনেক ভালোবাসা- সেটাও নিশ্চয় বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রথমেই যে খাবার টির ছবি দেখেও আমি মিস করা শুরু করেছি, তা হচ্ছে- " বক ফুলের বড়া এবং শিউলি পাতার বড়া " । বক ফুলের নাম শোনা ছিলো বটে আমার, তবে কখনো খাওয়ার সৌভাগ্য হয় নি আগে। ওদিকে শিউলি পাতার বড়াও প্রথম বার বহু বছর আগে এই ছোট পিসির বাসাতেই খেয়েছিলাম। ২য় বারও সেই ছোট পিসির বাসাতেই খাওয়া হলো। ছোটবেলায় দেখেছিলাম পিসির বাড়িতে উঠোনেই একটি শিউলি ফুলের গাছ রয়েছে। এবারে আমি তো পিসির বাসায় যাওয়ার আগেই পিসতুতো ভাই কে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে শিউলি গাছ টা এখনো আছে কি না! শিউলি ফুল আমার ভীষণ পছন্দের কি না, তাই আলাদাই একটা টান কাজ করে। সেই গাছের ই পাতা ছিড়ে এনে সেই পিসতুতো ভাই ই বড়া বানিয়ে খাইয়েছে। বক ফুলের বড়াও খাওয়া হয়েছে তার ই সুবাদে! পিসেমশায় কে কি জানি একটা দিতে দুপুরে বের হয়েছিলো। সেখানেই রাস্তায় বক ফুল বিক্রি করতে দেখে কিনে নিয়ে এসেছিলো আমাদের জন্য । এভাবেই বহু বছর পর শিউলি পাতার বড়া এবং জীবনে প্রথম বার বক ফুলের বড়া খাওয়া হলো।

IMG20250106205510.jpg


এরপর আসি " কলাই রুটি আর বেগুন ভর্তা " র কথায়। এটারও এত্ত নাম শুনেছি যে কী বলবো! এবং এই বেগুন ভর্তা দিয়ে গরম গরম কলাই রুটিও আমার ছোট পিসির বাসাতে গিয়েই জীবনে প্রথম বার খাওয়ার অভিজ্ঞতা হলো। সেটাও পিসতুতো ভাই বাপ্পীর ক্রেডিট। নাটোরে নাকি এখন বেশ অনেকগুলো দোকান বসে এই বেগুন ভর্তা আর কলাই রুটির।কোন দোকানের টা সবচেয়ে ভালো স্বাদের, সেটিই নিয়ে এসেছিলো আমাদের জন্য। আমি মোটামুটি ঝাল ভালোই খেতে পারি। কিন্তু বেগুন ভর্তাটা এত্ত বেশি পরিমাণ ঝাল ছিলো যে কান-মুখ দিয়ে রীতিমতো ধোঁয়া বের হবার মতো পরিস্থিতি। কিন্তু তবুও গরম গরম কলাই রুটি দিয়ে খেতে এত্ত মনার লাগছিলো, আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না! আমার তো সেই স্বাদ চিন্তা করেই আবারো জিভে জল চলে এলো অটোমেটিক! 😋

IMG20250107213914.jpg


এছাড়াও পিসির বাসাতে গিয়েই দুই দিন ই গরম গরম ভাপা পিঠা খাওয়া হয়েছে। মানে ছিলাম ই দুই দিন, দুই দিন ই ভাপা পিঠা খেয়েছি। ওখানকার ভাপা পিঠার স্বাদ টা এত্ত মজার!! ঢাকায় কোত্থাও আমি ভাপা পিঠা খেয়ে তেমন মজার ভাপা পিঠা খাই নি! নাটোরে অবশ্য ভাপা পিঠাকে ধুঁপি পিঠা বলে। এই নাম আমি অন্য কোথাও শুনি নি। ওদিকে রাতে আবার পিসি ফুলকপির পোলাও করে বসেছিলো! ওদিকে, দুপুরে করা টাকি মাছের ভর্তা আমি বেশ মজা করে খেয়েছিলাম বলে সেই ফুলকপির পোলাও এর সাথেও আবারো দিয়েছিলো আমাকে! কী কম্বিনেশন একবার চিন্তা করুন 😂 ! তবুও, তাদের যেনো খাওয়াতে পারাতেই প্রশান্তি! পরের দিন আমরা গিয়েছিলাম গ্রীন ভ্যালি পার্কে ঘুরতে। সেখানেও পিসির বাসায়ই বানানো কাচ্চি বিরিয়ানি নিয়ে গিয়েছিলাম সাথে করে। সে গল্প না হয় আরেকদিন করবো।এছাড়াও মিষ্টির কথা তো বললাম ই না! তো, আজ আর কথা বাড়াচ্ছি না। আজকের পোষ্ট " পিসির বাড়ি মধুর হাঁড়ি " এ পর্যন্তই থাকলো।

এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে
🌼 ধন্যবাদ 🌼

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovZPhyQZF46Jzu1RHsqJAYaFK79KURRYTTDCfs83L9hXVyhHVVfQHR1BRxtCJby4EjZZkEPu8kTbt3hCBMQWS3cpN.png

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
@rme as your proxy
witness_vote.png

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20211205_182705.jpg

আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শিক্ষগত যোগ্যতায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। দীর্ঘ ৬ বছর চাকরির পর বর্তমানে পুরোদমে একজন গৃহিণী। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।



Sort:  
 2 months ago 

Screenshot_2025-02-01-22-58-23-48_40deb401b9ffe8e1df2f1cc5ba480b12.jpg

Screenshot_2025-02-01-22-57-58-99_40deb401b9ffe8e1df2f1cc5ba480b12.jpg

Screenshot_2025-02-01-22-57-37-01_40deb401b9ffe8e1df2f1cc5ba480b12.jpg

Screenshot_2025-02-01-22-56-51-48_40deb401b9ffe8e1df2f1cc5ba480b12.jpg

Screenshot_2025-02-01-22-55-55-20_40deb401b9ffe8e1df2f1cc5ba480b12.jpg

Screenshot_2025-02-01-22-55-38-82_40deb401b9ffe8e1df2f1cc5ba480b12.jpg

Screenshot_2025-02-01-22-53-39-79_0b2fce7a16bf2b728d6ffa28c8d60efb.jpg

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

বক ফুলের বড়া এবং শিউলি পাতার বড়া।

এগুলো নাম পড়ে যেনো সবকিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছিলো হা হা হা। এ সকল জিনিসগুলো খাওয়াও হয়নি এমনকি নামও শুনিনি। তাতে কি! আপনার পোস্ট থেকে তো বিবরণ সহ জানতে পারলাম। তবে মামার বাড়ি মধুর হাড়ি এই বিষয়টা মোটামুটি জানলেও শ্বশুরবাড়ি মধুর হাড়ি এইটা জানার সৌভাগ্য হয়ে ওঠেনি এখনো। কেননা এই কপালে তা জোটেনি এখনো হা হা হা। যাই হোক আপনার পিসির বাড়িতে দেখতেছি খুবই আনন্দ করে সময় কাটিয়েছেন। গরম গরম ভাপা পিঠা সহ আরো অন্যান্য অনেক জিনিসই খেয়েছেন দেখতেছি। ভালোই লাগলো পড়ে।

 2 months ago 

শ্বশুড়বাড়ি মধুর হাড়ির সাথে আজ না হলেও সামনে ঠিকই পরিচিত হয়েই যাবেন ভাই! 😃

 2 months ago 

আপনার ছোট পিসির বাড়িতে যাওয়ার খুব সুন্দর অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন আপু। শিউলি পাতার বড়া এবং বক ফুলের বড়া খাওয়া এগুলো কখনোই খাওয়া হয়নি। আমি জানতামও না এগুলো তৈরি করা যায়। বেশ ভালো লাগলো আপনার আজকের পোস্ট দেখে। দারুন মুহূর্ত কাটিয়েছেন পিসির বাড়িতে। সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 months ago 

অসাধারণ মুহুর্ত কাটিয়েছি পুরো সময় টুকুই আপু। ভীষণ মেমোরেবল দুইটা দিন গিয়েছে পিসির বাড়িতে। আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ আপু।