হঠাৎ করেই একটি গদ্য লিখলাম। নাম - উইকেন্ড।
হঠাৎ একটি গদ্য লিখলাম। নাম - উইকেন্ড
🙏 সকলকে স্বাগত জানাই 🙏
বাঙালির উইকেন্ডগুলো আজকাল শুধু দেখি খুব কাছ থেকে। নিজেকে সেইসব উল্লাসের ভাগীদার না করে কিকরে সবটা শুধু তাকিয়ে দেখতে হয়, তা বুঝি। চারপাশে কত ডেস্টিনেশন। দু চারদিনের ছুটি পেলেই সবাই ছুটছে৷ উদ্দেশ্য পরিবার নিয়ে কিঞ্চিৎ আনন্দ। এতে ভুল তো কিছু নেই৷ ভীষণ প্রাসঙ্গিক এই জীবনযাপন। সময় পেলেই সবাই ছুটে যায় প্রিয়জনদের সাথে নিয়ে। ছোট ছোট বেড়ানোয় কেটে যায় সপ্তাহের শেষ দু তিনটি দিন। কত সুন্দর না? আমি নিজে কোথাও যেতে পারি না। আমার পরিবার নেই৷ আমার মানুষ নেই৷ আমি উইকেন্ড কাটাই একা। কেবল নিজের সাথে। যেখানে আমি ঘুরতে যাই নিজেকে সঙ্গে নিয়ে৷ সেখানে আর কেউ নেই। নেই কোনো কোলাহল। কেমন একটু একটু করে কেটে যায় এই ছুটির দিনগুলো। চারপাশে কত ভিড়৷ ছুটি পড়লেই আগে থেকে ঘোরবার আয়োজন।
আমি সেই সময় আয়নার সামনে দাঁড়াই৷ নিজেকে জিজ্ঞাসা করি নিজের কথা৷ কেউ উত্তর দেয় খুব সন্তর্পণে। চুপি চুপি উড়ে এসে কাঁধে বসে গঙ্গাফড়িং। তার সবুজ ডানায় আমি খুঁজে দেখি উইকেন্ড ডেস্টিনেশন। দুদিন আগেই নিজের একাকিত্বের ঘোষণা করেছিলাম সদর্পে। কাছ থেকে দেখা পারিবারিক জীবনগুলোয় তরতর করে বেড়ে উঠতে দেখি ঘাসফুল৷ আমার খালি হাতে জোয়ারের জল। আর দুকূল ছাপানো একলা উইকেন্ড। এভাবেই কেটে যায় আমার সপ্তাহান্ত। ভাবি, কাউকে আঁকড়ে আমিও হাসব নদীপথে। ভেসে যাবার আগে কোমরে বাঁধব কলোনিয়াল দুপুর। এই ঝলসে যাওয়া উইকেন্ডগুলোয় আমি পাঁচিল গাঁথি একা। ঝড় ওঠার আগে আরও কার্নিশে এসে দাঁড়াই। আমায় বাঁচাবে কে? শহরের অন্য প্রান্তে তখন বেঁচে ওঠার রোশনাই। অথচ চোখের আড়ালে ফুলে ওঠে খড়কুটো। দাম বাড়ছে দুপুরের। কাচের গ্লাসে ভিজে যাচ্ছে আমার নিজস্বীরা। যেখানে মোবাইল ক্যামেরায় একটার পর একটা সেলফি ওঠে উইকেন্ডের। ফ্রেমে কেবল আমি আর আমার অতলান্তিক রাজপথ। আবার সকাল হবে। ছুটে যাব কর্মক্ষেত্রে। কাজের চাপে ভুলে যাব নির্জন উইকেন্ডের সবটুকু সুখ। শুধু একটা একটা করে দিন গুনব আবার। এক সপ্তাহ পরে আবার ফিরে আসবে সেই বহু প্রতীক্ষিত একলা উইকেন্ড। আবার আয়নার সামনে নতুন প্রশ্ন। রাতের আড়ালে উঁকি মারা একাকিত্বের সৃজন।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/KausikChak1234/status/1913997922196402239?t=at6XgvYs-HsUvlMdTeXbWg&s=19
https://x.com/KausikChak1234/status/1914329114263318745?t=XXIQT3SzSHsIqMQXt856Pw&s=19
https://x.com/KausikChak1234/status/1914330428971815180?t=EgB8KgFBsAGvQH8MVH6UEw&s=19
https://x.com/KausikChak1234/status/1914330995030884852?t=lJwhVPzMH4CBkhHyzKJFvA&s=19
নিজের সঙ্গে নিজে কাটানোর সৌভাগ্য সকলের হয় না। নিজের সাথে নিজে কাটালে সব থেকে বেনিফিট হল নিজেকে অনেক বেশি চেনা যায়। ফলে দোষের বিচার করে সেইগুলোকে যেমন শোধরানোও যায় তেমনি গুনের বিচার করে সেইগুলিকে ধারালোও করা যায়। একদিন এক বন্ধুর সাথে আলোচনা হচ্ছিল, জীবনে একাকীত্বের কতখানি প্রয়োজন। জানো জীবনে একা না হলে সৃষ্টি হয় না৷ আর সেই কারণেই হয়তো সৃষ্টিশীল মানুষরা একা থাকেন।
একাকীত্বকেও যদি পজিটিভলি নেওয়া যায় তবে তারও অনেক সুন্দর দিক আছে।
যদিও এ আমার ব্যক্তিগত মতামত। তোমার চিন্তার সাথে হয়তো মিলবে না৷ যাইহোক গদ্যটা ভালো লাগল।