বিজ্ঞানমেলায় বিচারকের ভূমিকায় কিছুক্ষণ।
বিজ্ঞান মেলায় বিচারকের ভূমিকায় কিছুক্ষণ
🙏 সকলকে স্বাগত জানাই 🙏
আজ জাজমেন্টের জন্য পৌঁছে গিয়েছিলাম যুক্তিমন সংস্থা আয়োজিত বিজ্ঞান মেলায়। এই মেলায় বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে ছাত্রছাত্রীরা তাদের বানানো বিভিন্ন মডেল নিয়ে অংশগ্রহণ করেছিল। আমাকে কর্তৃপক্ষ তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বিচারক হিসেবে সমস্ত সায়েন্স মডেলের বিচার করে দেওয়ার জন্য। আমি ছাড়াও আরো দু'একজন বিচারক উপস্থিত ছিলেন বিচার করবার জন্য। আমি বিভিন্ন বিভাগে নম্বর দিয়ে সেই কাগজ তুলে দিলাম কর্তৃপক্ষের হাতে।
প্রথমেই এই বিজ্ঞান মেলা নিয়ে বিচারের কথা বলি। বিজ্ঞান মেলাটি আয়োজন করে থাকে যুক্তিমন। অর্থাৎ কোন্নগরের এই সংস্থাটি বিজ্ঞান এবং মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বাস্তবিক সচেতনতার প্রচার ও প্রসার নিয়ে কাজ করে। এদের বিভিন্ন ধরনের কার্যকলাপ ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে এবং বিশেষ করে সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিজ্ঞানভিত্তিক ধারণার জন্ম দেয়। এই যুক্তিমন আয়োজিত বিজ্ঞান মেলা ও প্রদর্শনী এবারে আয়োজন হয়েছে মোট তিন দিন। আমাকে বিচারক হবার অনুরোধ এর আগেই করেছিল তারা। আমি তাদেরকে কথা দিয়েছিলাম যে আমি ২৫ তারিখে সবকটি সাইন্স মডেলের বিচার করতে পৌঁছে যাব প্রদর্শনী প্রাঙ্গনে। তাই কথামতো সঠিক সময় পৌঁছে গেলাম প্রদর্শনীর জায়গায়। সেখানে গিয়ে প্রায় ৪০ টি মডেল ভালো করে দেখে তারমধ্যে বিভিন্ন বিভাগে নম্বর প্রদান করলাম। মূলত তিনটি বিভাগ ভালো করে যাচাই করতে হয়েছিল। প্রথমটি হল মডেল, দ্বিতীয়টি হল উপস্থাপনা এবং তৃতীয়টি হল বিষয় ভিত্তিক ধারণা। এই তিনটি বিষয় নিয়ে মূলত বিচার হয়। তার উপর প্রত্যেক বিভাগে নম্বর প্রদান করে আমি সেই কাগজ তুলে দিলাম কর্তৃপক্ষের হাতে। তারা আমাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে তাদের কাজ শেষ করল।
সম্পূর্ণ আয়োজনটি আমার দুর্দান্ত লেগেছে। জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে প্রচুর মানুষের সামনে আজ যে সুযোগ ছাত্রছাত্রীরা পাচ্ছিল, তা সত্যিই এক সুন্দর আয়োজন। এখানে প্রচুর মানুষের সামনে তারা তাদের নিজস্ব মডেল বর্ণনা করছিল এবং তার সুবিধা ও অসুবিধা গুলি ব্যাখ্যা করছিল। তারমধ্যে অ্যাসিড রেইন মডেল, রেইন ওয়াটার মডেল, বিভিন্ন রকমের সেন্সর নিয়ে কাজকর্ম আমার বিশেষভাবে ভালো লেগেছে। তাই যে সমস্ত মডেল ভবিষ্যতে সমাজের উন্নতি করবে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে মনে করেছি, তাদেরকেই আমার তরফ থেকে বেশি নম্বর দিয়েছি।
এই ধরনের সুন্দর একটি বিজ্ঞান প্রদর্শনীতে গিয়ে আমার খুব সুন্দর সময় কাটলো। বেশ কিছুক্ষণ সময় সেই সব ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে কাটানোর সুযোগ পেলাম যারা বিভিন্ন রকম আধুনিক মডেল তৈরি করে উপস্থাপনা করেছে আমাদের সামনে। তাদের উপস্থাপনা দেওয়ার ভঙ্গিমাও ছিল অসাধারণ। তাদের তৈরি করা মডেলটির উপর আধুনিক বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব লাগিয়ে তারা পরিবেশন করলো অনায়াসে। আমি দেখলাম তারা কত সুন্দর করে তাদের মডেল এবং প্রদর্শনী বর্ণনা সহ তুলে ধরল আমাদের সামনে। আজকের এই বিজ্ঞান প্রদর্শনী আমার তো দারুন লেগেছে।। এই প্রতিবেদন পড়ে এবং ছবিগুলি দেখে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে নিশ্চয় কমেন্টের মাধ্যমে আমাকে জানাবেন।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
Daily tasks-
https://x.com/KausikChak1234/status/1883224876464705623?t=DtKMZItJ00t3Qydi3LwfrQ&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বিজ্ঞান মেলায় আপনার বিচারকের ভূমিকা পালন সম্পর্কে জানতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আসলে এরকম বিজ্ঞান মেলার মাধ্যমে ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের সৃজনশীলতাকে বিকশিত করার সুযোগ পায়। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই। এই ধরনের বিজ্ঞান মেলা গুলিতে উৎসাহী বালক বালিকার অংশগ্রহণ করে বলে দেখতে খুব ভালো লাগে। সুন্দর মন্তব্যটি করবার জন্য ধন্যবাদ।
কলকাতায় বা শহরতলী অঞ্চলগুলোতে নানান ধরনের মেলা হয় তবে এই বিজ্ঞান প্রদর্শনীর মেলা সব থেকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল নানান ধরনের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা বৈজ্ঞানিক ব্যাপার-স্যাপার গুলোর মডেল তৈরি করে উপস্থাপন করে। এবং সমস্ত দর্শকদের একে একে বুঝিয়েও বলে। এর সবথেকে ভালো দিক হল inovation এর পাশাপাশি তারা ভালো বক্তা হয়ে ওঠার ও সুযোগ পায়। ইংরেজি মিডিয়াম স্কুল গুলোতে কেউ এসব হয়েই থাকে তবে বাংলা মিডিয়াম স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা এই ধরনের মেলার ফলে অনেক ভালো সুযোগ পায়।
এটা একদম ঠিক কথা বলেছিস। বাংলা মিডিয়াম স্কুল গুলোর পারফরম্যান্স দেখে আমি অবাক হয়ে গেছি। ভীষণ ছোট স্কুল গুলোর ছাত্রছাত্রীরাও খুব সুন্দর করে তাদের প্রজেক্ট দেখালো। সত্যিই এরা দেশের ভবিষ্যৎ হিসেবেই গড়ে উঠছে।।
চমৎকার একটি মেলার সাক্ষী হয়ে গেলেন আপনি। সেই সাথে আবার বিচারকের পদে ছিলেন। তার মানে তো বিশাল বড় ভূমিকায় ছিলেন আপনি। খুদে খুদে ছেলেমেয়েরা দুর্দান্ত বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার গুলো নিয়ে তারা এই মেলাগুলোতে অংশগ্রহণ করে। বোঝাই যায় সে সকল ক্ষুদে বিজ্ঞানী গুলির মধ্যে দুর্দান্ত ক্রিয়েটিভিটি রয়েছে। এরকম ক্রিয়েটিভ একটি মেলার মধ্যে বিচারক এর দায়িত্ব পাওয়া কিন্তু চাট্টিখানি কথা নয়। যাই হোক বিজ্ঞানমেলায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাই।
হ্যাঁ ভাই। বিচারকের ভূমিকা পেয়ে সত্যিই যেন নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়েছিল। কারণ শিশুরা এত সুন্দর করে আমাকে বোঝাচ্ছিল যে বারবার মনে হচ্ছিল আমিও যেন তাদের একটি অংশ হতে পেরেছি। অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য শেয়ার করবার জন্য।