জেনারেল রাইটিংঃ শেয়ারিং (পর্ব-১)।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

শুভেচ্ছা সবাইকে।

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, কেমন আছেন? সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন,আশাকরি। সকলে ভালো থাকেন এই প্রত্যাশা করি। আজ ৭ মাঘ, শীতকাল,১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ২১ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রীস্টাব্দ।

s1.jpg

source

গত দুদিনের তুলনায় আজ শীত বেশি। হালকা বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। একারণে শীত অনুভব হচ্ছে বেশি। আবহাওয়াবিদরা অবশ্য বলছেন,সামনে কয়েকদিন শীত বাড়তে পারে।এই শীতে সমাজের প্রান্তিক মানুষ গুলো নিরাপদ হোক। তারা ভালো থাকুক। বন্ধুরা,আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিং এ আজ আমি একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। প্রতি সপ্তাহে চেষ্টা করি একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করতে।সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে আজকের পোস্ট। বন্ধুরা,আমার আজকের পোস্টের বিষয় শেয়ারিং। আশাকরি ভালো লাগবে আপনাদের।

বর্তমান সময়টা অস্থির। ছুটে চলছে সবাই।নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। নিজেকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে চারপাশের সবকিছু। অনেকটা সেই পুরনো কথার ধ্বনি নিজে বাঁচলে বাপের নাম।মানুষের মনোজগতের বিশাল এক পরিবর্তন। সে মনোজগতে শেয়ারিং বা ভাগ করে নেয়ার মনোবৃত্তি অনেক কম বা নেই বললেই চলে।অথচ শেয়ারিং বা ভাগ করে নেয়াতে যে আনন্দ আছে, তা ভুলতে বসেছে মানুষ। তবে লোক দেখানো কিছু ইভেন্টের মাধ্যমে মিলিত হওয়ার চেষ্টা করছে কেউ কেউ। সেখানে আন্তরিকতার চেয়ে দেখানোটাই মূখ্য হয়ে উঠে। অথচ শেয়ারিং বা ভাগ করে নেয়ার মনোভাব সবার থাকা খুব জরুরি। মনের প্রশান্তি ও অবসাদ মুক্তির জন্য শেয়ারিং অনবদ্য ঔষধ।


যখন কেউ কোন কিছু নিয়ে অস্থিরতা বা দুশ্চিন্তায় ভোগে।নিজে নিজে গুমরে গুমরে কূলকিনারা পায় না,,তখন সেই মানুষটি নিজেকে বড্ড একা ভাবে। অসহায় ভাবে। যে কোন দুর্ঘটনা ঘটাতে দ্বিধা করেনা। সেই মানুষ যদি জড়তা কাটিয়ে কারো সাথে বিষয়টি নিয়ে শেয়ার করেন,তাহলে নিজেকে ভারমুক্ত মনে করেন।ফুরফুরে মেজাজে থাকেন। আসলে শেয়ারিং বা ভাগ করে নেয়ার বিষয়টি অভ্যেসের ব্যাপার। হুট করে কেউ কিছু শেয়ার করতে পারে না।শেয়ারিং টা পরিবার থেকেই আসে। শেয়ারিং মনোবৃত্তি তৈরিতে পরিবারের ভূমিকা অনন্য। বিশেষ করে বাবা-মার ভূমিকা।

এখন ছোট ছোট পরিবার। আগের মত একান্নবর্তী পরিবার নেই বললেই চলে।একান্নবর্তী পরিবার গুলো ছিল শেয়ারিং এর পাঠশালা। একান্নবর্তী পরিবারে যে কোন কাজ করা,সিদ্ধান্ত নেয়া বা খাওয়া দাওয়া করা,খেলাধুলা করা ছিল শেয়ারিং সর্বোত্তম উদাহরণ। এছাড়া একক পরিবারে ভাই-বোনদের সংখ্যা আগে বেশি হওয়ায় শেয়ারিং এর আবহে বড় হত সবাই।বন্ডিংটা হত অনেক শক্ত। এক জনের বিপদে ঝাপিয়ে পড়ত, সবাই নিজের বিপদ মনে করে। এখন দিন পাল্টিয়েছে। বাবা-মা ব্যস্ত। একের অধিক সন্তান খুব কম পরিবারেই দেখা যায়। আপন চাচাত-ফুফাতো-মামাতো ভাই বোন দেরই দেখা হয়, কোন আয়োজনে,,অনুষ্ঠানে। একা একা বড় হচ্ছে সন্তান। যা কিছু পায় নিজে ভোগ করে।সবকিছুকে সে নিজের মনে করে। তার মনোজগতে স্থায়ী হয়ে যায় সবকিছু আমার। শুধু আমার, অন্যকারো নয়। অনেকটা আত্নকেন্দ্রীক হয়ে যায়।এক্ষেত্রে মা-বাবার সচেতন ভূমিকা না থাকলে শেয়ারিং মনোভাব তৈরি হওয়া খুব মুসকিল।

তাই শেয়ারিং মনোবৃত্তির জন্য পরিবারের শিক্ষা অগ্রগণ্য।কিভাবে আপনার সন্তানকে শেয়ারিং মনোবৃত্তি নিয়ে বড় করবেন? আগামীকাল এ বিষয়ে থাকবে আমার লেখা শেয়ারিং এর দ্বিতীয় পর্বে। আশাকরি আজকের লেখাটি আপনাদের ভালো লেগেছে।

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
পোস্ট তৈরি@selina75
তারিখ২১ জানুয়ারি ২০২৪
লোকেশনঢাকা,বাংলাদেশ

আমার পরিচয়

সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পাড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Sort:  
 2 years ago 

শেয়ারিংটা হয়তো এখন দেখা যায় না তবে এটা আগে সবথেকে বেশি দেখা যেত। কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া যেকোনো কিছুই করা হোক না কেন, সবাই এই বিষয়ে শেয়ারিং করত। একজনের বিপদকে সবাই সবার বিপদ মনে করত। আপনি একেবারে সত্য কথাগুলো তুলে ধরলেন কিন্তু। এরকম লেখাগুলো পড়তে সত্যিই অনেক বেশি ভালো লাগে আমার কাছে। ধন্যবাদ আপু আপনার লেখাগুলো ভাগ করে নেওয়ার জন্য।

 2 years ago 

জি আপু একক পরিবারের কারনে শেয়ারিং এর মনোভাব কমে এসেছে। কিন্তু শেয়ারিং ব্যক্তি জীবনে বেশ দরকার। ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

খুব সুন্দর একটি পোস্ট লিখেছেন আপনি। আপনার কাছ থেকে এই পোস্টটি পড়তে পেরে খুব ভালো লাগলো৷ আসলে শেয়ারিং বিষয়টি এখনকার সময় তেমন একটা দেখা যায় না৷ একটা সময় ছিল যে সকলে মিলে একটা বিষয় নিয়ে একে অপরের মতামত শেয়ার করতে এবং সে বিষয়ের উপর বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হতো৷ তবে এখন এগুলো দেখাই যায় না৷ খুব ভালোভাবে আপনি আপনার পোস্ট এর মধ্যে সবগুলো কথা ফুটিয়ে তুলেছেন৷

 2 years ago 

এখন পরিবার ছোট হওয়ায় শেয়ারিং তেমনভাবে দেখা যায় না। ফলে অনেকে মানসিক চাপের মধ্যে থাকে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

মানুষ যে কোন পরিস্থিতিতে তার মনের দুশ্চিন্তা যদি অন্য একটি মানুষের সাথে শেয়ার করে তাহলে অনেকটাই হালকা হয়ে যায়। এমন ও হয় অন্য কারো সাথে শেয়ার করলে তার সমাধান পাওয়া যায়।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আসলেই ঠিক বলেছেন আপু সন্তান সংখ্যা কমের কারণে কিংবা একমাত্র সন্তান হওয়ার কারণে জন্মথেকে সব একা একা ভোগ করার কারণে শেয়ারিং তাদের মাঝে একদম থাকে না।কোন এক সময়ে হয়তো মামাতো, ফুপাতো,চাচাতো ভাইবোনও আর থাকবে না। ধন্যবাদ সুন্দর একটি টপিক নিয়ে পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আমরা ক্রমশ একা হয়ে যাচ্ছি।ধন্যবাদ আপু মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

শেয়ারিং ব্যক্তি খুবই কম দেখা যায় এখন। এরকমটাও হতে পারে যে 1000 মানুষের ভেতর খুঁজলে একজনকে পাওয়া যাবে। মানুষের মন-মানসিকতা এখন একেবারে ভিন্ন হয়ে গিয়েছে আগের তুলনায়। সবাই নিজেদেরকে নিয়েই ব্যস্ত থাকে সারাক্ষণ। এটা ঠিক যে এখন একান্নবর্তী পরিবার নেই, যদিও থাকে তবে খুবই কম। আশা করছি দ্বিতীয় পর্বে আরো কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন আপনি। পরবর্তী পর্বটা পড়ার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

 2 years ago 

ঠিক তাই ভাইয়া একান্নবর্তি পরিবার এখন নেই বলেলেই চলে।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্যের জন্য।