মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে স্বরচিত কবিতা||~~
স্বরচিত -কবিতা-
সকলকে বিজয় মাসের রক্তিম শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন,এটাই প্রত্যাশা করি।
অনুভূতির
এই কবিতাটি লিখতে গিয়ে আমার চোখের সামনে বারবার ভেসে উঠেছে সেই ত্যাগ, সেই সংগ্রাম, যা আমাদের আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ এনে দিয়েছে। আমি ভাবছিলাম, স্বাধীনতা মানে কি শুধু ২৬ মার্চের আনুষ্ঠানিকতা? না, এটি এক দীর্ঘ লড়াইয়ের ফসল, যেখানে প্রতিটি রক্তবিন্দুর মূল্য আছে।
আমি চেয়েছিলাম এমন একটি কবিতা লিখতে, যা শুধু অতীত স্মরণ করবে না, বরং বর্তমানের দায়িত্বও মনে করিয়ে দেবে। কারণ, স্বাধীনতা শুধু একবার পাওয়ার বিষয় নয়, এটিকে টিকিয়ে রাখাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই কবিতার প্রতিটি লাইনে আমি শুধু বিজয়ের নয়, বরং শপথের কথাও রেখেছি— যাতে আমরা ভুলে না যাই, এই দেশ শুধু যুদ্ধ করে পাওয়া নয়, এটি আগলে রাখারও দায়িত্ব।
আমার মনে পড়ছিল একাত্তরের সেই সাহসী মানুষগুলোর কথা, যারা রাইফেলের বিপরীতে লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়েছিল, বুকের ভেতর আগুন নিয়ে শত্রুর মুখোমুখি হয়েছিল। আমি ভাবছিলাম, তারা কীভাবে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিল, কীভাবে মৃত্যুকেও হাসিমুখে বরণ করেছিল।
এবং আজ?
আমরা কি সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে পেরেছি?
এই প্রশ্নটাই কবিতার গভীরে ছুঁয়ে আছে।
আমি চেয়েছি এই কবিতাটি শুধু পড়ার জন্য নয়, অনুভব করার জন্য হোক। যেন প্রতিটি পাঠক, প্রতিটি মানুষ নিজের ভেতরে একবার প্রশ্ন তোলে— আমরা সত্যিই স্বাধীনতার মর্যাদা রাখতে পেরেছি তো? যদি পারি, তবে সেটাই আমাদের শ্রদ্ধা; আর যদি না পারি, তবে এটাই আমাদের নতুন লড়াইয়ের শুরু।
রক্তের নদী পেরিয়ে এসেছি,
আগুনের শিখা ছুঁয়ে দাঁড়িয়েছি স্বাধীন মাটিতে।
এই মাটি আমার, এই আকাশ আমার,
এই বাতাসে আমার পূর্বপুরুষের শ্বাস মিশে আছে,
যারা জীবনের মূল্য চুকিয়ে কিনে এনেছিলো
একটি লাল-সবুজের পতাকা!
শোনো, বাতাসে এখনো ভাসে সেই স্লোগান—
"জয় বাংলা!"
যা ছিলো একেকটি বিদ্রোহী হৃদয়ের স্পন্দন,
যা ছিলো একেকটি বুলেটের জবাব,
যা ছিলো মৃত্যুকে তুচ্ছ করে
স্বাধীনতার শপথ নেওয়া একেকজন বীরের লড়াই!
কে বলে স্বাধীনতা শুধু একদিনের উৎসব?
স্বাধীনতা মানে প্রতিটি মুহূর্তের সংগ্রাম,
অধিকার রক্ষার দাবী,
সত্যের পথে অবিচল থাকা এক প্রতিজ্ঞা,
নির্যাতিতের পক্ষে দাঁড়ানো এক প্রতিরোধ!
এই মাটির প্রতিটি ধূলিকণা জানে,
আমরা পরাজিত নই,
আমরা আর বন্দী হবো না অন্যায়ের শৃঙ্খলে।
স্বাধীনতা মানে শুধু ভূখণ্ড নয়,
স্বাধীনতা মানে মুক্ত চিন্তা,
স্বাধীনতা মানে সাহস,
স্বাধীনতা মানে আত্মসম্মান,
স্বাধীনতা মানে সত্যের জন্য লড়াই!
আসো,
আজকের এই দিনে শপথ নিই—
স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করবো,
দেশকে ভালোবাসবো প্রাণের চেয়েও বেশি,
শহীদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়বো
সততা, ন্যায় আর আদর্শের ভিত্তিতে।
২৬ মার্চ, তুমি শুধুই এক তারিখ নও,
তুমি আমাদের পরিচয়,
তুমি আমাদের অস্তিত্বের শিকড়,
তুমি এক বিস্ফোরিত চেতনার নাম—
বাংলাদেশ!🇧🇩
বন্ধুরা আমার আজকের কবিতটি, নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর কবিতা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব, আমি সেলিনা সাথী...
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দারুন একটি কবিতা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। অনেক দিন পর আপু আপনার কবিতা পড়লাম।আপনার কবিতাগুলো আমার বরাবরই ভালো লাগে। তবে কিছুদিন মিস করেছি। ধন্যবাদ আপু অসাধারণ একটি কবিতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।