ছোট গল্প হাবিবের জীবন (পর্ব-০৮)।

in আমার বাংলা ব্লগ7 days ago

সপ্তম পর্বের পরে আবার অষ্টম পর্ব তুলে ধরার জন্য লিখতে বসলাম। একজন ধনী ব্যক্তি মোটামুটি হাবিবের জামা কাপড় থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে দিত। এমনকি হাবিব মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় হাবিবকে অনেক ভালোবাসতো। এভাবে সবার সহযোগিতা আর ভালোবাসায় হাবিবের দিনকাল বেশ ভালোই কাটতে থাকে সেই সাথে সময় পেরিয়ে যায় আর হাবিব আরো সবকিছু ভালোভাবে অনুধাবন করতে থাকে অর্থাৎ বয়সের সাথে সাথে হাবিবের বোধগান কিছুটা সবল হয়। কিন্তু হাবিবের বয়স বাড়তে থাকলেও হাবিবের বাবা দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ে। বয়স বেড়ে যাওয়ার কারণে আর সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না।

দিনের পর দিন যায় মাসের পর মাস যায় হাবিবের জীবন বেশ ভালোই কাটতে থাকে কিন্তু হাবিবের বাবার সংসারে অভাব অনটন শুরু হয়। হাবিবের অন্যান্য ভাই গুলো দরিদ্র তাই অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে নিজেদের সংসার চালিয়ে দিন পার করলেও হাবিবের বাবা-মা আর হাবিব যেন আলাদাভাবে টিকে থাকতে কষ্ট হচ্ছিল। হাবিবের বাবা আর কাজ করতে পারে না হাবিবের মা টুকটাক অন্যের বাড়িতে কাজ করে দিন পার করে। হাবিবের বাবা-মা শুধু একটা কথাই বলে তাদের অবর্তমানে এই মানসিক ভারসাম্যহীন হাবিবকে কারা দেখাশোনা করবে? যদিও হাবিবের ভাই এবং বোনেরা হাবিবকে বেশ ভালোবাসে। কয়েক বছর পরে হাবিবের বাবা হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর ঠিক মত আগের মত কাজ করতে পারে না অন্যের সহযোগিতায় চলাফেরা করতে হয়।

এমন অবস্থা পরিণত হয় হাবিবের বড় ভাইয়েরা হাবিবের বাবা-মার দেখাশোনার দায়িত্ব নেয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হাবিবের বাবা আর খুব বেশিদিন পৃথিবীতে থাকতে পারেনা হঠাৎ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যায়। হাবিব তার বড় ভাইয়ের মৃত্যুর পরে যেরকম শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিল ঠিক একইভাবে হঠাৎ হাবিবের বাবার মৃত্যুর পরে হাবিব যেন আবার বদলে যেতে শুরু করল। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে হাবিব দেখতে পেল তার মা কান্নাকাটি করছে আর কাঁথা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে তার বাবাকে। হাবিব তার মায়ের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করছে আম্মু আব্বুর কি হয়েছে?? এমন প্রশ্নে হাবিবের মা হাবিবকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে।

হাবিব তখন বুঝতে পারে তার বাবা আর বেঁচে নেই। হাবিব চুপচাপ বসে আছে আর তার দুই চোখ দিয়ে পানি ঝরছে। বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের লোকজন আসছে সবাই হাবিবের বাবাকে দেখছে আর হাবিবের দিকে তাকাচ্ছে হাবিব চুপচাপ বসে আছে কারো সাথে কোন কথা বলছে না। যখন হাবিবের বাবাকে গোসলে নিয়ে যাওয়া হল তখন হাবিব নিজে নিজেই গামছা নিয়ে পুকুরে গোসল করতে গেল। গোসল শেষ করে হাবিব ঘরে এসে জামা কাপড় পড়ে মাথায় টুপি নিয়ে তার বাবার লাশের কাছে গিয়ে বসলো। হঠাৎ হাবিবের এমন পরিবর্তন দেখে সবাই কিছুটা অবাক হল। হাবিব সবাইকে ইশারা করে বলছিল তার বাবার জন্য যেন দোয়া করে।

বিকেল বেলায় হাবিবের বাবার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় তার বাবাকে শেষ বিদায় জানাতে হাবিব জানাজার নামাজের সর্বপ্রথম কাতারে দাঁড়িয়ে গেল। জানাযার নামাজ শেষে যখন কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে , হাবিব সবাই সামনে হাঁটছে। হাবিব সবাইকে ইশারায় বোঝাতে লাগলো হাবিবের বাবাকে আল্লাহ তায়ালা নিয়ে গিয়েছেন। হাবিবের বাবা এখন ঘুমিয়ে আছে সেটা বারবার ইশারায় হাবিব নিজেই সবাইকে বোঝাচ্ছে আর এমন দৃশ্য দেখে সবাই আরো কান্না করছে। কবরস্থান থেকে ফিরে আসার পরে হাবিব বাড়িতে এসে দেখল তার মা বসে কান্নাকাটি করছে হাবিব নিজে থেকেই তার মায়ের কাছে গিয়ে বসলো আর হাবিবের মা হাবিবকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছিল। হঠাৎ করেই হাবিব তার মায়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিল হাবিবের এই সমস্ত কার্যক্রম দেখে বোঝার উপায় নেই এই ছেলেটা মানসিক ভারসাম্যহীন।

kids-8769532_1280.jpg



IMG_20220926_174120.png

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy


20240320_225328_0000.png



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


Polish_20240825_125322804.png

Sort:  
 5 days ago 

আসলে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের যদি গার্জিয়ান বা বাবা মারা যায় সে ক্ষেত্রে সে কতটা অসহায় হয়ে পড়ে সেটা নতুন করে আর বলতে হয় না। গল্পের হাবিবের জন্য বেশ খারাপ লাগছে।

 6 days ago 

মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে-মেয়েদের একনমাত্র ভরসা তার বাব-মা। তবে দুঃখের বিষয় গল্পে হাবিবের বাবা মারা যায়। এখন হাবিবের ভাইয়েরা তার সাথে কি আচরন করবে সেটাই দেখার পালা।

 6 days ago 

হাবিবের মধ্যে দিনে দিনে অনুভূতি গুলো সচল হচ্ছে। বাবা মারা যাওয়াতে এখন আরো বেশী অসহায় হয়ে পরল হাবিব ও তার মা।এরপরে কিভাবে দিন কাটে তাই ই জানার অপেক্ষায়।

@rex-sumon, this installment of Habib's story is truly moving! The way you've depicted his emotional journey, especially his reaction to his father's passing, is incredibly poignant. It's amazing how you capture the nuances of his character and the complex relationships he has with his family.

The narrative keeps me hooked, eager to know what unfolds next for Habib. Your storytelling is captivating, and the images you've chosen complement the text perfectly, adding another layer of depth to the story.

Keep up the fantastic work! I'm sure many others are as invested in Habib's life as I am. What challenges do you foresee for Habib in the coming chapters? I'd love to hear your thoughts!

 3 days ago 

হাবিবের বাবা মারা গিয়েছে, জেনে খুব খারাপ লাগলো। তবে হাবিব এখন অনেক কিছুই বুঝতে শিখেছে, এটা খুব ভালো লাগছে। আশা করি হাবিব ধীরে ধীরে একেবারে স্বাভাবিক হয়ে যাবে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।