ছোট গল্প হাবিবের জীবন (পর্ব-১০ - শেষ)।
আজকে হাবিবের জীবনের গল্পের নবম পর্বের পর শেষ পর্ব অর্থাৎ দশম পর্ব আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে যাচ্ছি। হাবিবের বাবার মৃত্যুর পর থেকে হাবিবের মধ্যে আশ্চর্যজনক এক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় আগে হাবিব মানসিক ভারসাম্যহীন ভাবে চলাফেরা করতো নিজেকে অগোছালোভাবে রাখতো তবে হাবিবের বাবার মৃত্যুর পরে হাবিবের মাঝে পরিবর্তন আসে সে তার মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে সবসময় তার মায়ের সেবা যত্নে ব্যস্ত থাকে আর এভাবেই দিনের পর দিন হাবিবের মধ্যে আশ্চর্যজনক পরিবর্তন শুরু হয়। প্রথম অবস্থায় হাবিবের বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে হাবিবের মা কিছুটা টেনশনে ছিল তার মানসিক ভারসাম্যহীন সন্তানের দেখভাল করবে কে?? তার অন্যান্য সন্তানেরা অনেকটাই দরিদ্র তাই তাদের সাধ্য ছিল না হাবিবের খরচ বহন করা।
কিন্তু হাবিব ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করে যার দৌলাতে হাবিবের মা কিছুটা স্বস্তিতে জীবন যাপন শুরু করলো। সময়ের সাথে সাথে যেন হাবিবের পরিবর্তন আরো বাড়তে শুরু করে হাবিব তার নিজের খাদ্য এবং তার মায়ের খাবার-দাবারের ব্যবস্থা নিজেই করে তাছাড়া হাবিবের জীবন সম্পর্কে আশপাশের গ্রামের সবাই কম বেশি জানত তাই ঈদের সময় বা কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আগে হাবিবকে কম বেশি সাহায্য করত। বাজারে যে সমস্ত দোকানদার আছে তারা প্রতিনিয়ত হাবিবকে সাহায্য করত আর তাদের সাহায্য পেয়ে হাবিব সবসময় বাজারের দিকেই বেশি সময় কাটাতো। বাজার কমিটি থেকে কোথাও ঘুরতে গেলে হাবিবকে সঙ্গে করে নিয়ে যেত আর হাবিবের মা ধীরে ধীরে হাবিবকে নিয়ে আর তেমন কোন টেনশন করত না।
ধীরে ধীরে হাবিবের বয়স বাড়তে থাকে আরো প্রখর হতে থাকে। হাবিবের বড় ভাই বিদেশে পাড়ি জমায় তার মেজ ভাই এলাকার কয়েকজন মানুষের জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করতে থাকেন এভাবেই ধীরে ধীরে হাবিবের বড় ভাইদের জীবন ধীরে ধীরে পরিবর্তন হতে থাকে তারা স্বাবলম্বী হয়ে যায় আর হাবিবের মায়ের অভাব অনটন ধীরে ধীরে দূর হয়ে যায়। তাছাড়া হাবিবের বড় ভাই গুলোর সন্তানগুলো বাবার সঙ্গে কাজ শুরু করে যার ফলে তাদের সংসারটা খুব দ্রুতই স্বাবলম্বী হয়ে যায় আর তখন থেকেই তারা হাবিব এবং হাবিবের মাকে কম বেশি সাহায্য করা শুরু করে দেয়। হাবিবের মা হাবিবকে নিয়ে যে টেনশন করত একপর্যায়ে এসে এই টেনশন দূর হয়ে যায়।
হাবিব মায়ের টেনশন দূর হয়ে যায় হাবিব স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। হাবিব মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হলেও এখন সে অনেক কিছুই বুঝতে পারে ঠিকমতো নিজের খেয়াল রাখতে পারে সে ক্ষেত্রে হাবিবের মা আর হাবিবকে নিয়ে তেমন বাড়তি কোন টেনশন করে না শেষ বয়সে এসে হাবিবের মা তার নাতি নাতনিদের সাথে সুন্দর সময় পার করছে। একসময় অভাব অনটন আর দুঃখের সময় পেরিয়ে এখন সুখের দিন গুনছে। শুধু হাবিবের বাবাকে না পাওয়ার বেদনাই কিছুটা দুঃখ দেয়। তাছাড়া হাবিবের মায়ের এখন আর তেমন কোন দুঃখ নেই। সব মিলিয়ে সুখে-দুখে তাদের সুন্দর সময় পার হচ্ছিল।
বন্ধুরা এতদিন ধরে আপনাদের সঙ্গে হাবিবের জীবনের যে গল্পটা শেয়ার করলাম এটা ছিল সম্পূর্ণ বাস্তবকেন্দ্রিক একটা গল্প কাহিনী।। হাবিব নামের একটা ছেলের জীবন বৃত্তান্ত এই গল্পের আলাদা আলাদা পড়বে পর্যায়ক্রমে তুলে ধরেছি। একটা ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে জন্মগ্রহণের পর তার পরিবার তাকে নিয়ে কতটা চাপের মধ্যে থাকে তাকে নিয়ে তার পরিবার কতটা টেনশন করে আর তার জীবনযাত্রা কেমন হয় তার আঙ্গিকে এই গল্পের আলাদা আলাদা ১০ টি পর্ব শেয়ার করা হয়েছে। হাবিবের ছোট থেকে বড় হয়ে ওঠার প্রতিটা বাস্তব জীবনের অংশগুলো এই গল্পে তুলে ধরা। এই ছিল বন্ধুরা, গল্পের পর্ব ইতি টেনে আপনাদের মাঝে থেকে বিদায় নিচ্ছি।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

হাবিবের জীবনের গল্পটা পড়ে বেশ ভালো লেগেছে। মূলত হাবিবের বাস্তব জীবনের অংশটা এই গল্পের মাধ্যমে আলাদা আলাদা পর্বে তুলে ধরেছেন সবগুলো পর্ব পড়েছি বেশ ভালো লেগেছে।
এই বাস্তব গল্পের প্রতিটি পর্বই পড়া হয়েছে আমার।অপেক্ষায় ছিলাম আসলে কি হয়।গল্পের শেষটা ভীষণ সুন্দর। সমাজের প্রতিটি মানুষ এমন ভাবেই স্বাভাবিক জীবন পাবে এই প্রত্যাশা।এজন্য ঘরে বাইরে সবার সহযোগিতা ভীষণ দরকার।সাহায্য সহযোগিতা না পেলে গল্পটা অন্য রকম হয়ে যেতো। হাবিব ও হাবিবের মতো সব মানুষের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে এটাই আমি মনে করি।ধন্যবাদ ভাইয়া গল্পটি সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
হাবিব যে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পেরেছে আর ভালোভাবে জীবন পার করছে জেনে ভালো লাগলো।কম বেশি আপনার লেখা অনেক পর্ব-ই পড়া হয়েছে, ধন্যবাদ দাদা।
পুরো গল্পটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লেগেছে। হাবিব স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে এবং সংসারের দায়িত্ব নিয়েছে, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। এতে করে হাবিবের মায়ের দুশ্চিন্তা অনেকটাই দূর হয়ে গিয়েছে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।