'সাজানো সংসার গল্পের চতুর্থ পর্ব'

in আমার বাংলা ব্লগ7 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে সাজানো সংসার গল্পের চতুর্থ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পের চতুর্থ পর্বটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-cottonbro-3171157.jpg
সোর্স


রাকেশ বাড়িতে প্রবেশ করে সবাইকে ডাক দিয়ে বাইরে আসতে পারে। রাকেশের গলা শুনে প্রদীপ ঘর থেকে ছুটে বের হয়ে আসে। প্রদীপ এসেই দেখতে পায় তার দাদার হাতে অনেক বাজার। সে সঙ্গে সঙ্গে তার দাদার হাত থেকে বাজারগুলো নামিয়ে বলে, দাদা এত বাজার করেছো কেন। রাকেশ প্রদীপ কে বলে, তুই আমার একমাত্র ভাই তুই এত ভালো রেজাল্ট করেছিস।আমি তো তোকে কিছুই দিতে পারেনি। তাই ভাবলাম আজ এই শুভ দিনটাতে সবাই মিলে একসঙ্গে একটু ভালো মন্দ খাবার খাব। তখন প্রদীপ রাকেশ কে বলে, দাদা এসবের কি দরকার ছিল এমনিতে তুমি এই সংসারের জন্য আমার জন্য অনেক কষ্ট করছো। শুধু শুধু অনেকগুলো টাকা নষ্ট না করলেই পারতে। রাকেশ বলে, পাগল ছেলে বলে কি কে বলেছে আমার কষ্ট হয়। দিনশেষে বাড়ি ফিরে যখন তোদের হাসি মুখ দেখি তখন আমার সব কষ্ট দূর হয়ে যায়। আজ এই শুভ দিন টা আর কখনো পাবো না তুই আর কথা বারাস না মাকে ডাক। প্রদীপ মাকে ডাক দেয় একটু পরে মা আসে। মা এসে রাকেশ কে বলে এত বাজার করেছিস কেন? রাকেশ হাসতে হাসতে বলে, তুমি কি ভুলে গিয়েছো? আমার ভাই আজ ফার্স্ট ডিভিশন পেয়ে পাস করেছে। আজ আমার খুব আনন্দের দিন আর এই দিনটাতে আমি ওর মুখে ডাল তুলে দিতে পারি না। মা তুমি আর দেরি করো না তাড়াতাড়ি যে মাংস ডিম মাছ রান্না করে ফেলে তো। রাতে আমরা সবাই একসঙ্গে বসে খাওয়া দাওয়া করব।


মা দেরি না করে রান্না করতে চলে যায়। রাকেশ স্নান করে রুমে বসে ছিল তখন প্রদীপ তার কাছে আসে। প্রদীপ কাছে এসে রাকেশের পাশে এসে বসে। রাকেশ বলে, কি হয়েছে ভাই কিছু বলবি? প্রদীপ বলে, দাদা ভাবছি তোমাকে একটা কথা বলব কিন্তু কিভাবে শুরু করব বুঝতে পারছি না। রাকেশ বলে, এত সংকোচ বোধ না করে বল দেখি। প্রদীপ বলে, মাধ্যমিক শেষ হল এখন কলেজে উঠতে হবে। রাকেশ বলে, এ তো খুব ভালো কথা কবে কলেজে ভর্তি হতে যাবি? প্রদীপ বলে, দাদা আমি বলছিলাম আমি কলেজে পড়তে চাই না। রাকেশ বলে, কেন কি হয়েছে? প্রদীপ বলে, কলেজে পড়তে গেলে অনেক টাকা লাগবে। রাকেশ বলে কত টাকা? প্রদীপ বলে, বন্ধুদের কাছে শুনলাম কলেজে ভর্তি হতে ৭০০০ টাকা লাগবে। তারপর কলেজে ভর্তি হবার পর বই কিনতে হবে টিউশনি পড়তে হবে এতে করে অনেক খরচ হবে দাদা তাই বলছিলাম। রাকেশ বলে, তাইলে কি পড়াশোনা করবি না। প্রদীপ বলে, হ্যাঁ দাদা। রাকেশ তখন বলে, এক চড়ে দাঁত সব করে ফেলে দেবো। তোকে বারবার করে বলেছি সংসার বিষয় তোর ভাবতে হবে না। এগুলো আমি সামলে নেব তোর কাজ শুধু পড়াশোনা করা। প্রদীপ বলে, দাদা তুমি আমার জন্য আর কত কষ্ট করবে? রাকেশ বলে, আমার সব কষ্ট উসুল হয়ে যাবে তুই যখন ভালো চাকরি করবি।আমি তখন বড় মুখ করে সবাইকে বলতে পারব আমার ভাই বড় অফিসার।


তাদের ভিতর কথাবার্তা চলতে চলতে তার মা ভাত খেতে ডাক দেয়। ভাত খেতে বসে রাকেশ তার মাকে বলে, প্রদীপ কে মাছের মাথাটা দেও। প্রদীপ বলে,না মা দাদাকে মাছের মাথাটা দেও দাদা অনেক কষ্ট করে দাদার খাওয়া দরকার। রাকেশ বলে, না ভাই তোর এখন ভালো ভালো খাওয়া দরকার তা না হলে পড়াশোনা করবি কি করে। এই বলে রাকেশ মাছের মাথাটা প্রদীপের থালায় উঠায় দেয়। প্রদীপ বলে, তুমি আমাকে এত কেন ভালোবাসো? রাকেশ বলে, তোকে ছাড়া কাকে ভালোবাসবো তুই আমার একমাত্র আদরের ছোট ভাই। তখন তার মা বলে, তোদের দুই ভাইয়ের ভালবাসা যেন এমন সারা জীবন থাকে। প্রদীপ কে তার মা বলে, তুই কোনদিন তোর দাদাকে কষ্ট দিবি না। তোর দাদা সব সহ্য করতে পারবে কিন্তু তোর দেওয়া কষ্ট সে কোনদিন সহ্য করতে পারবে না। প্রদীপ বলে, না মা আমার প্রাণের প্রিয় দাদাকে কোনদিন কষ্ট দিব না। আমি চাকরি করে দাদার সব কষ্ট দূর করব। রাকেশ বলে, মা তুমি এমন চুপ করো তো ভাইকে একটু ভাত খেতে দেও।

আজ গল্পের পর্বটি এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।