অবহেলা গল্পের শেষ পর্ব
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি অবহেলা গল্পের শেষ পর্বটি আপনাদের সবার মাঝে উপস্থাপন করছি। আশা করি, সবার ভালো লাগবে তাই লম্বা না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
দুর্জয় পায়েলের মার কাছ থেকে যে নাম্বারটি এনেছিল রাতে সেই নাম্বারে কল দেয়। দুর্জয়ের বুক ধরফর করছিল কারণ অনেকদিন পায়েলের সাথে সে কথা বলে না। এমন করে তার সাথে কথা বলতে হবে সে ভাবতে পারিনি তাই সে প্রথমে একটু ভয় পাচ্ছিল ।কি না কি বলবে পায়েল। অনেকক্ষণ ফোনে রিং হওয়ার পর পায়েল ফোনটি ধরে বলে।
পায়েল: হ্যালো, কে বলছেন?
(কাঁপাকাঁপা কন্ঠে )
দুর্জয়: আমি দুর্জয় বলছি। কেমন আছো পায়েল?
পায়েল: ও আমার দুর্জয় বাবু। এতদিন পর আমার কথা মনে পড়লো আপনার।
দুর্জয়: আমি তোমার কথা সব সময় মনে করি। তোমার সাথে দেখা করার জন্য তোমার বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানেই জানতে পারি তুমি পড়াশোনা করার জন্য বিদেশ চলে গিয়েছো। একটাবার আমাকে একটু বলে যেতে পারতে?
পায়েল: কি বলছেন দুর্জয় বাবু। আপনি আমার কথা মনে করেন নাটক করছেন না তো। আমি যখন আপনার কাছে ভালোবাসা ভিক্ষা চেয়েছিলাম।আপনি আমাকে দূর দূর করে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। আর আজ যখন আমি দূরে চলে এসেছি এখন আপনার। আমার প্রতি ভালোবাসা বেড়ে গেল।
দুর্জয়: আমি আর পারছি না পায়েল আমি তোমাকে বিবাহ করতে চাই। তোমার যত মান অভিমান আমি সবকিছু মেনে নেব তুমি প্লিজ বাড়িতে চলে এসো আমি আর তোমাকে ফিরাবো না।
পায়েল : এই কথাটা যদি কয়েক বছর আগে বলতেন তাহলে আমি আর বিদেশে চলে আসতাম না।
সেদিন থেকেই দুর্জয় এবং পায়েল তারা ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করত। তারা এখন মান-অভিমান ভেঙে একে অপরকে খুবই ভালবাসতে শুরু করল। দেখতে দেখতে প্রায় একটি বছর কেটে গেল পায়েলের ও পড়াশোনা শেষ হয়ে গেল পায়েল ও চলে এলো বাড়িতে । বাড়িতে এসেই কিছুদিন পরে পায়েল একটি চাকরি পেল। চাকরির ফাঁকে ফাঁকে দুর্জয় এবং পায়েল দুজন দুজনকে সময় দিত একদিন পায়েল বলে
পায়েল:দুর্জয় আমাদের এখন বিয়ে করা উচিত। তুমি তোমার বাবাকে আমাদের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসতে বল।
দুর্জয় : তুমি তো জানো পায়েল আমি ওই একটা কারণেই তোমার বাবার সামনে আমি এই কথাটি বলতে পারব না।
কথাটি শোনার পর পায়েল খুবই রেগে যায় আর রাগান্বিত ভাবেই দুর্জয় কে বলে।
পায়েল: দেখো দুর্জয় তুমি এখন ছোট নও তুমি এখন প্রতিষ্ঠিত একজন মানুষ আর এখন যদি তুমি আমার বাবার কাছে আমাদের বিয়ের কথা না বলতে পারো তাহলে কিন্তু আমি অন্য ছেলেকে বিয়ে করে ফেলব তখন তুমি একা একা থাকবে।
দুর্জয়: এ কেমন কথা বলছো তুমি। আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোমার বাবার কাছে যাব আর যে তোমার আমার বিয়ের কথা বলব।
আরো কিছু সময় সেখানে তারা ভালো একটি সময় কাটিয়ে যার যার বাড়িতে ফিরে যায়। পরের দিন দুর্জয় অফিস শেষ করে সোজা চলে আসে পায়েলের বাড়িতে আর এসেই দেখতে পায় পায়েলের বাবা-মা এবং পায়েল বসে আছে। দুর্জয় কে দেখেই পায়েলের বাবা বলে।
বাবা: কেমন আছো দুর্জয় এদিকে এসো অনেকদিন তোমাকে দেখিনা চাকরি পাওয়ার পর তুমি তো আমাকে ভুলেই গিয়েছো।
দুর্জয়: আমি ভালো আছি আঙ্কেল আপনাদের কথা সব সময় মনে করি। আপনার সাথে আমার কিছু কথা ছিল যদি একটু শুনতেন।
বাবা : কি কথা বল শুনছি।
তখন অপর দিক থেকে পায়েল বলে।
পায়েল: কি হলো দুর্জয় বাবু বাবাকে কি বলবেন বলুন। না আমরা পাশে রয়েছি বলে বলতে পারছেন না।
দুর্জয়: আসলে আঙ্কেল আমি পায়েলকে ভালোবাসি আর আমরা দুজন দুজনকে বিবাহ করতে চাই। আমি পায়েলকে প্রথম দিন দেখেই পছন্দ করে ফেলেছিলাম। আমি জানতাম না পায়েল আপনার মেয়ে। পায়েল আমাকে অনেকবারই বলেছে কিন্তু আমি বারবার আপনার কথাই বলেছিলাম। আপনি আমাকে বিপদের সময় সাহায্য করেছেন। আমি যদি আপনাকে পায়েলের কথা বলতাম তাহলে আপনি আমাকে খারাপ ভাবতেন এজন্য আমি কিছুই বলতে পারিনি। কিন্তু আঙ্কেল আমি আর নিজের সাথে যুদ্ধ করে পারছি না তাই আপনার কাছে আমি পায়েলকে ভিক্ষা চাচ্ছি। আমরা দুজন দুজনকে খুবই ভালোবাসি আপনাদের আশীর্বাদে আমরা দুজনেই খুব ভালো থাকব।
কথাগুলো শোনার পর পায়েলের বাবা চুপ হয়ে যায়। রাগান্বিত রূপে সে দাঁড়িয়ে পড়ে আর দুর্জয় দিকে তাকিয়ে থাকে। দুর্জয় পায়েলের বাবার রূপ দেখে খুব ভয় পেয়ে যায়। পায়েলের বাবা দুর্জয়ের কাছে এসে দুর্জয় কে বুকে জড়িয়ে ধরে বলে।
বাবা: আমি তো এমন ছেলেই চাই আমার মেয়ের জন্য যে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে আমার মেয়েকে বিয়ে করার কথা বলবে। দুর্জয় আমিও মনে মনে তোমাকে পছন্দ করে রেখেছিলাম। অনেকবার আমার পরিবারের সাথে এবং পায়েলকে তোমার কথা বলেছি। তখন পায়েল তোমার কথা বলে সে তোমাকে ভালোবাসে। একদিন হঠাৎ শুনতে পেলাম তুমি নাকি আমার মেয়েকে ভালোবাসো না। অনেক কান্নাকাটি করেছিল পায়েল তারপর ও বিদেশ চলে যায় তোমার উপর জেদ করে। কিন্তু ও আমাকে বলেছে তোমার কথা তুমি একদিন না একদিন ওকে তোমার ভালোবাসার কথাটা বলবে। যাই হোক আমি আজ অনেক খুশি তোমরা তোমাদের পছন্দের কথা আমাদেরকে বলেছে। তুমি তোমার মা-বাবাকে আমাদের বাড়িতে আসতে বল।
দুর্জয়: ঠিক আছে আঙ্কেল আজ আমি আসছি।
এই বলে দুর্জয় বিদায় জানিয়ে পায়েলের বাবাকে প্রণাম করে বাড়িতে চলে আসে। এসে দুর্জয়ের মা-বাবাকে সব কথা খুলে বলে দুর্জয়ের মা বাবাও খুব খুশি হয় কথাটি শোনার পর। কিছুদিন পরেই পায়েল ও দুর্জয়ের খুব বড় করে বিবাহ হয়। তারা আজ দুজনে খুব খুশি কারণ তারা ভালোবাসার মানুষটাকে জীবনসঙ্গী করে পেয়েছে। সত্যি ভালোবাসার মানুষ গুলোকে পেতে হলে খুব কষ্ট করতে হয় জীবনে।
ভাইয়া, আপনার এই গল্পের প্রথম পর্ব থেকেই আমি পড়ে আসছি। আজ আপনার গল্পের শেষ পর্যায়ে এসে দুর্জয় এবং পায়েলের মধ্যে শুভ বিবাহের কথাটি জানতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছে। খুবই চমৎকার একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ দাদা সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য।
অবহেলা গল্পটির শেষে এরকম একটা বিষয় থাকবে এটা একেবারে জানা ছিল না। দুর্জয় এবং পায়েলের শেষে মিলন হয়েছে এই বিষয়টা ভাবতেই ভালো লাগছে। এই গল্পটার বেশ কয়েকটা পর্ব আমি পড়েছিলাম, যার কারণে অনেক কিছুই বুঝতে পেরেছি। এত সুন্দর একটা গল্প পর্বের মাধ্যমে আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন দেখে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ দিদি এত ব্যস্ততার মাঝেও আমার পোস্টটি পড়ার জন্য এবং আপনার কিছু কথা আমাকে শেয়ার করার জন্য।
আসলে ভালোবাসার মানুষটাকে সারা জীবনের জন্য কাছে পেতে হলে অনেক কষ্ট করতে হয় এটা সত্যি বলেছেন। অবহেলা গল্পটা পড়ে খুব ভালো লাগলো আমার কাছে। এরকম গল্প গুলো পড়লে খুব ভালো লাগে। শেষে যদি ভালোবাসার নীল হয় তাহলে খুব ভালো লাগে। পায়েল এবং দুর্জয়েরও শেষে ভালোবাসাটা পূর্ণতা পেয়েছে। তাদের পরিবারও তাদের সম্পর্কটা মেনে নিয়েছে মন থেকে। এদিকে তো দেখছি পায়েলের বাবা দুর্জয় কে অনেক আগ থেকে পছন্দ করে রেখেছে। এবং তাদের সম্পর্কে সবকিছুই জানতো। যাইহোক ভালো লাগলো সম্পূর্ণ গল্পটা।
ধন্যবাদ দাদা সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য।