অবহেলা গল্প পর্ব ২

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন?আশা করি,আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আবারো আপনাদের মাঝে অবহেলা গল্পের দ্বিতীয় পর্বটি উপস্থাপন করতে চলেছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-download-a-pic-donate-a-buck-^-54379 (1).jpg

সোর্স


পায়েল তার কলেজে গাড়িতে করে যায়। হঠাৎ একদিন গাড়িটি রাস্তায় নষ্ট হয়ে যায় ঠিক তখন দুর্জয় সাইকেল চালিয়ে ওই রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিল। সে দেখতে পায় ফাঁকা একটি রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দুর্জয় এটি দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সাইকেলটি চালিয়ে মেয়েটির কাছে যায় আর যে বলে কি হয়েছে ম্যাডাম?আপনি ফাঁকা একটি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন কোন প্রবলেম হয়েছে যদি হয় আমাকে বলতে পারেন। পায়েল কোন কথার উত্তর দিচ্ছিল না কারণ সে বুঝতে পারছিল না যে ছেলেটির সাথে সে কথা বলবে কি বলবে না। দুর্জয় আবারো জিজ্ঞাসা করে আপনি কোন কথার উত্তর দিলে না যে আপনার প্রবলেম হলে আমাকে বলতে পারেন আমি আপনাকে সাহায্য করবো। তখন পায়েল দুর্জয় কে একটু ধমক দিয়ে বলে আপনি কেন আমার কাছে জিজ্ঞাসা করছেন আপনি যেখানে যাচ্ছেন সেখানে যান।রাস্তায় মেয়েদের দেখলে কথা না বলতে পারলে আপনাদের ছেলেদের ভালো লাগে না। দুর্জয় তখন পায়েলকে বলে দেখুন যেমনটি ভাবছেন আসলে আমি তেমন ছেলে না। আপনি একটি ফাঁকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন আমি দূর থেকে দেখতে পেলাম তাই আপনাকে সাহায্য করার জন্য বললাম। আচ্ছা ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি আর চলে যাওয়ার আগে একটা কথা বলি এখানে জায়গাটা ভালো নয় তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরে যান। এই বলে দুর্জয় আবার সাইকেল চালাতে শুরু করল।


অন্যদিকে দুর্জয়ের কথাটি শোনার পর পায়েলের একটু ভয় লাগছিল। তাই সে আবার দুর্জয় কে ডাক দেয় কিন্তু দুর্জয় একটু দূরে চলে গিয়েছিল তাই সে শুনতে পায়নি। অন্যদিকে পায়েল দৌড়াচ্ছে আর ডাকতেছে এই শুনুন শুনুন একটু দাঁড়ান। দুর্জয় হঠাৎ শুনতে পায় কে কে যেন পিছন থেকে ডাকছে তাই সে সাইকেলটি থামিয়ে পিছনের দিকে তাকিয়ে দেখে সেই মেয়েটি দৌড়ে তার কাছে আসছে আর থামতে বলছে। দৌড়ে এসে দুর্জয় কে পায়েল বলে কেমন মানুষ আপনি? আমাকে একা রেখে আপনি চলে যাচ্ছেন। আপনি তো বললেন যে জায়গাটা ভালো নয় তার পরেও আমাকে ফেলে এখান থেকে চলে যাচ্ছেন। তখন দুর্জয় পায়েলকে বলে আপনি তো আমাকে উল্টে আরো ধমক দিয়ে বললেন চলে যেতে। তখন পায়েল আবারো দুর্জয় কে ধমক দিয়ে বলে আমি বলেছি বলে আপনি চলে যাবেন কেমন মানুষ আপনি। যাইহোক দুর্জয় পায়েলকে বলে তাহলে এবার বলুন কি সাহায্য করতে পারি আপনার জন্য। তখন পায়েল দুর্জয় কে বলে কলেজে যাওয়ার পথে আমার গাড়িটি বন্ধ হয়ে গেছে বুঝতেও পারছি না কি হয়েছে আপনি যদি একটু সাহায্য করতেন। দুর্জয় হা হা হা হা হা করে হাসতে থাকে এটি দেখে পায়েলের খুব রাগ হয়।পায়েল বলে এমন করে হাসছেন কেন? দুর্জয় বলে না কিছু না চলেন আপনার গাড়িটি দেখা যাক দেখি ঠিক করতে পারি কিনা।


অনেকক্ষণ চেষ্টা পর দুর্জয় পায়েলকে বলে আপনি গাড়ির ভিতর যে চাবিটা অন করেন দেখেন গাড়িটি চালু হয় কিনা। এই কথাটি শোনার পর পায়েল গাড়ির ভেতর যে চাবিটি অন করতে গাড়িটি চালু হয়ে যায়। গাড়ি থেকে বেরিয়ে দুজনকে বলে আপনি না থাকলে আজ হয়তো আমার এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো যাই হোক আমার ব্যবহারের জন্য আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। এই বলে পায়েলের তার পার্স থেকে ২০০০ টাকার একটি নোট বের করে হাতে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে দুর্জয় বলে কি করছেন ম্যাডাম আমি টাকার বিনিময়ে আপনার কে সাহায্য করিনি টাকাটি আপনার কাছে রাখেন। মানুষের বিপদে মানুষ এগিয়ে আসবে এটাই তো স্বাভাবিক তার জন্য তাকে টাকা দিয়ে অপমান করা ঠিক নয়। পায়েল কথাটি শোনার পর হতবাক হয়ে যায় কারণ এই সময়ের মানুষ যে এমনটা হতে পারে সে কোনদিন কল্পনাও করেনি। দুর্জয় পায়েলকে বিদায় জানিয়ে সাইকেল চালাতে শুরু করে ঠিক তখন পিছন থেকে আবার ডাক দিয়ে পায়েল বলে আপনার পরিচয়টা তো জানতে পারলাম না। তখন দুর্জয় বলে আমার নাম দুর্জয় আপনার নাম কি? পায়ের উত্তর দেয় আমার নাম পায়েল। পায়েল আবার জিজ্ঞাসা করে আপনি কি করেন?দুর্জয় বলে আমি পড়াশোনা শেষ করার পর এখন একটি গার্ডম্যানের চাকরি করছি। পায়েল বলে আপনি শিক্ষিত ছেলে হয়ে গার্ডম্যানের চাকরি করছেন। দুর্জয় বলে কেন শিক্ষিত ছেলে কি এই চাকরি করতে পারে না। পায়েল উত্তর দেয় আসলে আমি তেমনটা বলতে চাইনিএর থেকে ভালো চাকরি করতে পারতেন। দুর্জয় বলে আমি চাকরি খুজতেছি ভালো চাকরি পেলে এ কাজটি আর করব না আসলে আমারও ভালো লাগেনা কিন্তু বসে থাকার থেকে কিছু না কিছু করা উচিত সেটাই করছি।


পায়েলকে বিদায় জানিয়ে দুর্জয় রওনা হল তার কাজের উদ্দেশ্য পায়েল ও রওনা হল তার কলেজে। আজ কলেজে যাওয়ার পর পায়েলের কোন সাবজেক্টে মন বসছিল না মনে পড়ে যাচ্ছিল বারবার রাস্তায় দেখা হওয়া দুর্জয়ের কথা।

আজ এখানেই শেষ করছি আবারও দেখা হবে সবার সাথে সেই পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 2 years ago 

ভাই আপনার লেখা অবহেলা গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব পড়ে খুব ভালো লেগেছে। এই গল্পটির প্রথম পর্ব আমার পড়া হয়নি, তবে দ্বিতীয় পর্ব পড়ে অনেক কিছুই বুঝতে পারলাম। প্রথমদিকে পায়েল দুর্জয় কে ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দিলেও পরে নিজেই ডেকে নিয়েছে। তারপরে দুর্জয়ের কাছে ক্ষমাও চেয়েছে। দুইজন শেষে দুই দিকে যাওয়ার পরে কি হয়েছে তা জানার জন্য পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

 2 years ago 

ধন্যবাদ দাদা

 2 years ago 

আপনার লেখা অবহেলা গল্পের আজকের দ্বিতীয় পর্ব পড়ে । গল্পের মাঝে দুর্জয় চরিত্র খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা রইলাম। ধন্যবাদ চমৎকার গল্পটি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপনাকেও ধন্যবাদ সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য।