এক দিনের ব্যবধানে বাপ-ব্যাটা আহত !!steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago


গত পরশু আর তার আগের দিন হঠাৎই আমরা বাপ ব্যাটা দু'জনেই আহত হয়েছি । আমি আর টিনটিন । আমি ১৬ তারিখ দুপুরে আহত হয়েছি, আর টিনটিন হয়েছে ১৭ তারিখ সন্ধ্যায় । দু'জনেই ডান হাতে আহত হয়েছি । খুলেই বলি তাহলে ব্যাপারটা কি ।

গত পরশুদিনের আগের দিন আমি বৃষ্টিতে ভিজবো বলে ছাদে গিয়েছিলাম । আমি, তনুজা আর টিনটিন । ঝিরি ঝিরি ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছিলো বেশ । দারুন এনজয় করছিলাম । আমাদের ছাদটা বিশাল । ছাদের এ মাথা থেকে ও মাথা অব্দি দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলাম আমরা তিনজনে । আহা ! শ্রাবণের ধারা গায়ে মেখে সে কী অপূর্ব সুন্দর অনুভূতি তা আর বলে বোঝাতে পারবো না ।

এতো ভালো লাগছিলো যে তা আর বলবার নয় । প্রায় ১৫-২০ মিনিট ধরে ভিজলাম । ছাদের একটা কোনায় তনুজার ছাদ বাগান । সেখানে সারি সারি টব । টবে বিভিন্ন ধরণের ফুল গাছ, ক্যাকটাস, লেবু গাছ, এলোভেরা, লেমন গ্রাস, পুদিনা পাতা এসব । এই টবের কোনো ভাঙা অংশে বা ছাদের দেওয়ালে যেখানেই হোক ঘষা লেগেছিলো আমার ডান হাতের পাঞ্জার উল্টো পিঠে । তখন খেয়াল করিনি ।

কিন্তু, ঘরে ঢোকার পরে লক্ষ্য করলাম যে হাতের চেটোর উল্টো দিকের কিছুটা জায়গা থেকে অঝোর ধারায় রক্ত ঝরছে । দ্রুত মেথিলেটেড স্পিরিট লাগালাম ক্ষতস্থানে । এই জিনিসটা খুবই কার্যকরী । এই মেথিলেটেড স্পিরিটে ৯৫% ইথাইল অ্যালকোহল থাকে । তাই যে কোনো ক্ষতস্থানের জীবাণু সংক্রমণ রোধে ১০০% কার্যকরী । রক্ত বন্ধ হওয়ার পরে দেখতে পেলাম বেশ কিছুটা স্থানের চামড়া উঠেই গিয়েছে পুরো । অবশ্য ইনজুরি মোটেও গভীর নয় । জাস্ট উপরের চামড়াটা ছিড়ে উধাও হয়ে গিয়েছে । তবে খুবই সামান্য জায়গার । এক ইঞ্চির চার ভাগের এক ভাগ মোটে ।

যাই হোক, এবারে আসি গত পরশু সন্ধ্যা বেলার ঘটনাটা নিয়ে । আমি সন্ধ্যায় এক কাপ কফি নিয়ে বসে কোডিং করছিলাম নিজের ঘরে । হঠাৎ, দারুন চেঁচামেচি আর কান্নাকাটির আওয়াজ শুনতে পেলাম । কি হয়েছে জানতে দ্রুত ড্রয়ইং রুমে গিয়ে দেখি টিনটিন তারস্বরে চেঁচাচ্ছে । কী হয়েছে জানার পরে বুঝতে পারলাম ঘটনা বেশ সাংঘাতিক । পলকের জন্য আমার একটু মাথা ঘুরে গিয়েছিলো ।

ড্রয়ইং রুমের লাগোয়া আরো একটা বড় রুম আছে । সেই রুমের দরজা আটকাতে গিয়ে টিনটিনের আঙ্গুল দরজার কবজায় আটকে গিয়েছিলো । সাংঘাতিক লেগেছে । কচি আঙুলে কালশিটে পড়ে গিয়েছে । থেঁতলে ফুলে উঠেছে জায়গাটা পুরো । কেটেও গিয়েছে বেশ অনেকটা । দেখে তো ফার্স্ট আমার মাথা ঘুরে উঠলো । পরে হলো সাংঘাতিক রাগ, সবার উপরেই । এতটুকুন একটা বাচ্চাকে দেখে রাখতে পারে না কেউ !

আমার তখন একটাই চিন্তা আঙুলের হাড় ভেঙে গেলো কি না । কিন্ত, দেখলাম যে আঙ্গুল নাড়াতে পারছে । তখন কিছুটা আস্বস্ত হলুম । দ্রুত ফ্রিজ খুলে আইস কিউব এনে আঙুলে ঘষতে লাগলাম । টিনটিন তো তারস্বরে কেঁদেই যাচ্ছে । এরপরে ক্লোফেনাক জেল লাগিয়ে দিলাম ইনজুরিতে । এই ক্রিম একই সাথে ব্যাথানাশক এবং ইনফেকশন আটকায় ।

এরপরে অনেক কষ্টে কান্না কিছুটা কমলে আমার ভাই টিনটিনকে বাইকে করে ঘুরতে নিয়ে গেলো । আধা ঘন্টা ঘুরে আসার পরে দেখলাম শান্ত হয়েছে । দু'দিন পরে এখনো আঙুলের ফোলা পুরো কমেনি । তবে, ব্যাথা আর তেমন নেই বোঝা যাচ্ছে । কারণ একটু আগেই ওই হাত দিয়ে একটা চড় কষিয়ে দিয়ে গেলো আমায় । হা হা :)


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


আজকের টার্গেট : ৫২৫ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 525 trx)


তারিখ : ১৯ আগস্ট ২০২৩

টাস্ক ৩৬০ : ৫২৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron


আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx

৫২৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :

TX ID : afea85dc60458bfac7824ef3a6096effef2c0e3634dc853f2c99ce5c6b59314e

টাস্ক ৩৬০ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

আপনার পোস্টটি পড়ে ভালো লেগেছে আবার কষ্টও পেয়েছি। বৃষ্টির মুহূর্তটা ইনজয় করেছেন
আপনি ও বৌদি তা জেনে অনেকে ভালো লাগলো। কিন্তু ছোট বাচ্চা ব্যথা পেলে আসলেই মাথা ঠিক থাকে না। ছোট কচি হাতগুলো যদি দরজায় লাগে তাহলে অনেক টেনশনেরি ব্যাপার। শেষ পর্যন্ত আপনাকে একটি চড় মেরেছে এতেই বোঝা গেল যাক বাবুর হাত ঠিক হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ দাদা পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

কি সাংঘাতিক ঘটনা দাদা। দরজার কবজায় এই ছোট হাতের আঙ্গুল। কি অবস্থা,আহারে।খুব ব্যথা হয় দরজার কবজায় আটকালে।শুনে খুব খারাপ লাগলো।আসলে বড়দের কিছু হলে তাও মানা যায়। বাচ্চাদের কিছু হলে অনেক বেশি খারাপ লাগে।তবে মিল পেলাম ১৬ তারিখে এই বৃষ্টিতে আমার সাথে ও এমন কষ্টের কিছু অনুভূতি হয়েছিল।যাই হোক আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন,আমিন।

 2 years ago (edited)

দাদা আপনার ঘটনাটি বৃষ্টিতে ভেজা মুহূর্তে অনেক উল্লাসিত অবস্থায় সেজন্য বুঝতে পারেননি রুমে এসে বুঝতে পেরেছেন কিন্তু টিনটিন এর বিষয়টি মারাত্মক ছিল এরকম আমি অনেকবার দরজা আটকাতে গিয়ে লোগে ছ্যাচা খেয়েছি এতটাই ব্যথা লাগে ঠিক থাকা যায় না। এত অল্প বয়সে এত বড় একটি আঘাত খেলে কান্নাকাটি করাটাই স্বাভাবিক। বাপ বেটা দুজনেই আহত হয়েছেন জেনে খারাপ লাগলো। তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক সেটাই কামনা করি।

Hi @rme,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

 2 years ago 

পোস্ট টা পড়তে পড়তে দুঃখও পেলাম, আবার পেট ফুপিয়ে হাসলামও । এক সাথে দুই কাজ। দাদা যেমন বৃষ্টির শ্রাবণ ধারার ছোয়াঁও নিল আবার একটু খেসারতও দিলো। ভাগ্যিস বড় কিছু হয়নি। আহ্ টিনটিনের জন্য বেশ মায়া হচেছ যে ওতোটুকুন একটি বাচ্চা ছেলে কি করে ব্যথা পেল। তাও আবার কচি আগুলের মধ্যে এটা পড়ার পর বুকটা চিন করে উঠলো। কিন্তু যখনই পড়লাম সেই হাতে দাদা কে থাপর দিয়েছে তখনই আবার খিক খিক করে হাসলাম। যাক দাদা আপনি আর টিন টিন একটু সাবধানে থাকবেন।

 2 years ago 

দাদা আপনার পোস্টটা পড়ে খুবই ভালো লাগতেছিলো, আসলে বৃষ্টির মধ্যে ছাদে এভাবে তিনজন আপনারা অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। সত্যি বৃষ্টিতে ভেজা এবং ছাদের ভিতর সেই মুহূর্তটা অসাধারণ ছিল। কিন্তু একটুর জন্য বাপ বেটা দুজন মিলে যেন আঘাত পেলেন তবে আঘাতটা না পেলে সময়টা অনেক দারুন ছিল। যাই হোক আপনার এবং টিনটিন সোনার সুস্থতা কামনা করছি।

 2 years ago 

এ বৃষ্টির দিনে ছাদের এই মাথা থেকে ও মাথা দাপাদাপি করতে আসলেই ভালোই লাগে দাদা । আর বৃষ্টির ভিতর আনন্দের তালে তালে কখন যে আপনি ব্যথাটা পেয়েছেন এজন্য টের পাননি । রক্ত পর্যন্ত ঝরেছে তাহলে তো ভালোই লেগেছে শুধু চামড়া উঠলে আর অতটা রক্ত বের হতো না । কিন্তু আপনার ব্যথাটা তো মোটামুটি যাই হোক । টিনটিন এরটা শুনে তো আমারই বুকের ভেতর কেঁপে উঠল । কারণ দরজার কবজায় অনেক সময় আঙুল কেটেও যেতে পারতো । অল্পের ভিতর দিয়ে বেঁচে গিয়েছে । ছোট মানুষ আঙ্গুল নাড়াতে পারছে ঠিকমতো এটাই বড় কথা । যাক শেষ পর্যন্ত আপনাকে একটা চড় মেরেছে এতেও শান্তি ওর হাত ঠিক আছে এটাতেই বোঝা গেল । ছোট বাচ্চাদের এসব বিষয়ে অনেক খেয়াল রাখতে হয় আমার তো সারাক্ষণই এসব নিয়েই ভয় লাগে কখন যে দরজার ফাঁকায় হাত টাত লেগে যায় ।

 2 years ago 

দাদা অনেক বড় বিপদের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছেন। সত্যি দাদা বিপদ কখন কিভাবে আসে বুঝা মুশকিল। তবে দরজায় আঙ্গুল ঢোকা মানে কঠিন ব্যাপার। আমরা বড়রা সহ্য করতে পারি না আর তো ছোট বাচ্চারা। যাইহোক এখন ভালো আছে জেনে অনেক ভালো লাগল। ধন্যবাদ দাদা পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

সম্পূর্ণ পোস্ট টি পড়ে অনেক ভালোও লাগলো আবার খুব খারাপও লাগলো।সত্যি আনন্দ করতে গেলে ব্যাথা পেলেও কোন কষ্টকে কষ্টই মনে হয় না খারাপ বেশি লেগেছে টিনটিনের ব্যাথার কারণে ও ছোট মানুষ ব্যাথা পেয়েছে তাই কান্নাকাটি করেছে আবার একটু পর স্বাভাবিক হয়ে গেছে কারণ ছোটরা ব্যাথা পেলে যেমন কান্নাকাটি করে ঠিক তেমনি খুব দ্রুত ভুলেও যায় এক কথায় অনুভুতি কম তাই বাবুকে সাবধানে রাখতে হবে।বাবা,ছেলের সুস্থতা কামনা করছি।