জেনারেল রাইটিং:- কেন এত কঠিন হয়ে উঠছে জীবন?
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন সবাই? আশা করবো সবাই ভালো আছেন। সৃষ্টিকর্তার রহমতে আমিও আছি ভালোই। তবে ব্যস্ত এ নগরে কতটুকু সময় ভালো থাকতে পারবো সেটা বলা মুশকিল। শত ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে কাটাতে হয় যান্ত্রিক জীবন। মাঝে মাঝে মনে হয় সব কিছুকে বন্ধ করে দিয়ে দূরে কোথাও সবুজ গাছের ছায়ায় নিজেকে একটু স্বস্থির ছায়া দিতে। কিন্তু ঐ যে বাস্তবতা, সেটা তো বড়ই নিষ্ঠুর আর নির্মম। কোন কিছুতেই ছাড় দিতে চায় না। সে যাই হোক বাবা । চলুন মূল পোস্টে ফিরে যাওয়া যাক।
প্রতিদিনই চেষ্টা করি আপনাদের মাঝে সুন্দর করে কিছু লিখে উপহার দেওয়ার জন্য। চাই চারদিকের মানুষগুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকা কষ্টগুলো কে আমার লেখার যাদুতে আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে। জানিনা কতটুকু আপনাদের মাঝে নিজের মনের কথা গুলো কে শেয়ার করতে পারি। আজ চেষ্টা করলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করার জন্য। আশা করি প্রতিদিনের মত করে আমার আজকের জেনারেল রাইটিংটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।

ভালো থাকা, এই ছোট দুটি শব্দের মাঝেই যেন লুকিয়ে আছে জীবনের বড় আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু আজকাল আমরা প্রায় সবাই এক বাক্যে বলি, “ভালো থাকাটা আর সহজ নেই।” কেন এমন হলো? কেন এখনকার দিনে চাইলেও আমরা শান্তিতে, সুখে বা স্বস্তিতে থাকতে পারি না? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজলে দেখা যায়, আমাদের চারপাশ, আমাদের চিন্তা, সমাজব্যবস্থা সব কিছুর মধ্যেই রয়েছে এর জবাব।
আজকের দিনে আমাদের জীবনে মানসিক চাপ একটা নিয়মিত সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাজের চাপে ক্লান্ত, পরীক্ষার ভয়, সম্পর্কের টানাপড়েন, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা সব কিছু একসাথে মিলে আমাদের মাথায় যেন অদৃশ্য এক বোঝা চাপিয়ে দেয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছুটে চলার মাঝে নিজের জন্য সময় বের করাই হয়ে দাঁড়িয়েছে বিলাসিতা। আগে মানুষের জীবনে ছিল ধীর গতি, একটু থেমে দম নেওয়ার সুযোগ। এখন সেই সময় কোথায়? ডিজিটাল যুগে আমরা যেন ২৪ ঘণ্টাই ‘অনলাইন’। কাজের সময় আর অবসরের মধ্যে পার্থক্যই নেই। অফিস শেষে বাড়ি ফিরেও ফোন, ইমেইল, মেসেজ সবই চালু থাকে। ফলে মনের ভেতর একটা চাপ সারাক্ষণ কাজ করে।
আধুনিক সমাজে সবাই সবার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। কে কত ভালো চাকরি পেল, কে কত টাকা আয় করছে, কে কোথায় ঘুরতে গেল এসব দেখে নিজের জীবনের সঙ্গে তুলনা শুরু করি আমরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্যের সুখ-সমৃদ্ধির ছবি দেখে নিজের জীবনকে তুচ্ছ মনে হয়। অথচ আমরা ভুলে যাই, কেউ আসলেই সবসময় সুখী থাকে না। সেখানে দেখানো হয় কেবল বাইরের রঙিন মুখ, ভেতরের ক্লান্তি বা কষ্ট কেউ দেখে না।এই তুলনার মনোভাব আমাদের ভেতর থেকে খেয়ে ফেলে। আমরা নিজের জীবনের আনন্দগুলো উপভোগ করতে ভুলে যাই। সব সময় মনে হয়, আমি পিছিয়ে আছি। তাই সুখের বদলে তৈরি হয় একরাশ হীনম্মন্যতা।
আগে পরিবার মানেই ছিল একসাথে বসে খাওয়া, গল্প করা, পরস্পরের পাশে থাকা। এখন একা থাকা, ব্যস্ততা, সময়ের অভাব এগুলোর কারণে পরিবারে সেই উষ্ণতা কমে গেছে। অনেকেই এখন শহরে একা থাকেন, কাজের ব্যস্ততায় পরিবার থেকে দূরে চলে যান। একাকিত্ব একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।একইভাবে সমাজের মধ্যেও এক ধরনের ভাঙন এসেছে। আগে পাশের বাড়ির মানুষ ছিল আত্মীয়সম, এখন সে পরিচিতই না। সাহায্য, সহানুভূতি, সৌজন্য এসব শব্দ যেন কেবল বইয়ে পড়ে শেখা যায়। ফলে বিপদের সময় পাশে কাউকে পাওয়া যায় না, আর ভালো থাকা তখন আরো কঠিন হয়ে পড়ে।
আমরা খুব দ্রুত সব কিছু চাই চাকরি, টাকা, নাম, সুখ। কিন্তু সেই তাড়াহুড়োর মাঝে আমরা থেমে প্রকৃতি দেখা, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, নিজের জন্য সময় বের করার মতো জিনিসগুলো ভুলে যাই। ফলে জীবন হয়তো গতিশীল, কিন্তু তা নিঃস্ব।এই গতি আমাদের মনকে কখনোই বিশ্রাম নিতে দেয় না। ফলে শরীরের ক্লান্তি যেমন কাটে না, মনের শান্তিও পাওয়া যায় না। তখন ভালো থাকাটা কেবল একটা চাওয়া হয়, পাওয়ার সুযোগ থাকে না।
আজকের পৃথিবী দ্রুত বদলে যাচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন, চাকরির বাজারের অনিশ্চয়তা, অর্থনৈতিক সংকট, রাজনৈতিক অস্থিরতা এসব কারণে মানুষের মনে সবসময় একটা ভয় কাজ করে। "আগামীকাল কী হবে?" এই প্রশ্নের উত্তর না পাওয়ার যন্ত্রণায় অনেকে দিশেহারা হয়ে পড়ে। বিশেষ করে তরুণ সমাজ এখন অনেক বেশি উদ্বিগ্ন। পড়াশোনা শেষ করেও চাকরি পাওয়া যায় না, ছোট চাকরিতে কাজ করেও জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এতে হতাশা ও মানসিক অসুস্থতা বেড়ে যায়।
বন্ধুরা কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের লেখাগুলো? আশা করবো প্রতিদিনের মত করে আজও আপনারা আমার লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়েছেন। আশা করবো মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন।
আমার পরিচিতি
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
.gif)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy

https://x.com/maksudakawsar/status/1924143623425384887
https://x.com/maksudakawsar/status/1924143476784193744
https://x.com/maksudakawsar/status/1924144535288062032
https://coinmarketcap.com/community/post/359692414