শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি - ছেলেবেলার উত্তেজনাপূর্ণ মজার খেলা- চোর-পুলিশ

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করবো সবাই ভালো আছেন সৃষ্টিকর্তার রহমতে । আমিও আছি আপনাদের দোয়ার বরকতে জীবন নিয়ে ভালোই। দিন যায় কথা থাকে। দিন কিন্তু সত্যি সত্যি চলেই যাচ্ছে। চলে যাচ্ছে সময়। সময় কখন আসে আর কখনই বা যায় সেটা টেরই পাই না। তাই ব্যস্ততার পরিমানও দিনের পর দিন বেড়েই যাচ্ছে। আজকাল যেন জীবনের সাথে যুদ্ধ করেই জীবন পার করতে হচ্ছে। তবুও সময় করে বসে পড়লাম আপনাদের জন্য একটু লেখালেখি করার জন্য। আমি আশা করি আজকের ব্লগ আপনাদের সবার অনেক বেশি ভালো লাগবে। সব সময় চেষ্টা করি ভালো ভালো ব্লগগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।


image.png

AI Tools দিয়ে কভার ফটো তৈরি করা হয়েছে

প্রতিটি মানুষের জীবনে ছেলেবেলা হলো একটি স্বর্ণযুগ। আমরা কেউ কিন্তু আমাদের ছেলেবেলাকে ভুলতে পারি না।জীবনের প্রতিটি পদে পদে আমাদের কাছে আমাদের ছেলেবেলা ধরা দেয় স্মৃতি হয়ে। ছেলেবেলার সেই আনন্দঘন দিনগুলো আমাদের জীবনে মাঝে মাঝে মধুর স্মৃতি বিলিয়ে দেয়। নিয়ে যায় সেই শৈশবের কিছু সুন্দর মূহূর্তে। যেখান থেকে ফিরে আসাটাই বেশ মুশকিল। তবুও আমরা ফিরে আসি। আমাদের কে ফিরে আসতে হয়। তাই তো আজ আমি আবার চলে আসলাম আপনাদের মাঝে আমার সেই ছেলেবেলার আরও কিছু স্মৃতি ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য।

আমাদের ছোটবেলার অন্যতম প্রিয় খেলা ছিল ‘চোর-পুলিশ’। এই খেলা ছিল দৌড়ঝাঁপ, কৌশল আর দলবদ্ধ পরিকল্পনার মিশেল। সরকারি কোয়ার্টারের ছোট ছোট গলিতে, মাঠে কিংবা বাড়ির উঠোনে আমরা একসঙ্গে মিলিত হয়ে এই খেলায় মেতে উঠতাম। চোর-পুলিশ খেলার মজা আর উত্তেজনা আজও মনে পড়ে। খেলাটি শুরু হতো দুই দলে ভাগ হয়ে — এক দল পুলিশ, আর অন্য দল চোর। পুলিশের কাজ ছিল চোরদের ধরে ফেলা, আর চোরদের কাজ ছিল পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালানো। এই খেলায় কৌশল, দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং একে অপরের সঙ্গে সমন্বয় খুবই জরুরি ছিল।

আমাদের কোয়ার্টারের গলিতে খেলার জন্য উপযুক্ত জায়গা ছিল ছোট ছোট কোণাগুলো, যেখানে লুকিয়ে থাকা আর পালানোর জন্য অনেক সুযোগ ছিল। আমরা লুকোচুরি খেলতে খেলতে, চোর-পুলিশ খেলার মধ্যে পড়ে যেতাম মগ্ন। কখনো কখনো এতটা মজা হতো যে আমরা জানতাম না কখন রাত হয়ে গেছে।

খেলার সময় আমরা নানা ধরনের পরিকল্পনা করতাম — কখনো কেউ ফাঁদ পেতে প্রস্তুতি নিতো, আবার কেউ চোরদের জন্য লুকিয়ে থাকার জায়গা দেখাতো। একে অপরকে সাহায্য করে আমরা পুরো গলিটাকে আমাদের খেলার জায়গা বানিয়ে ফেলতাম। বর্ষায় বৃষ্টির সময় চোর-পুলিশ খেলা একটু কঠিন হলেও আমরা থামতাম না। বরং বৃষ্টির স্নিগ্ধতায় খেলার মজা আরও বেড়ে যেত। শরীর ভিজে যাওয়ার পর গরম গরম চা খেয়ে আমরা নতুন উদ্দীপনায় আবার খেলায় ঝাঁপিয়ে পড়তাম। শীতকালে খেলার সময় ঠাণ্ডা লাগলেও, দৌড়ঝাঁপে শরীর গরম থাকতো। খেলার শেষে আমরা একসাথে গরম খাবার খেতাম আর নিজেরা নিজেরা খেলায় লেগে থাকা অংশের গল্প শেয়ার করতাম।

চোর-পুলিশ খেলা আমাদের শৈশবের এক জীবন্ত স্মৃতি, যা আমাদের মধ্যে দলবদ্ধ কাজের দক্ষতা, সাহস আর বন্ধুত্বের মূল্যবোধ তৈরি করেছে। আজকের জীবনে যখন স্মৃতি ফিরে দেখি, তখন বুঝি সেই ছোট ছোট খেলাগুলো ছিল আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা।

জানিনা কেমন লাগলো আমার আজকের টপিকটি। আশা করি আপনাদের কাছে আজকের পোষ্টটি বেশ ভালা লাগলো। ভালো থাকবেন, সুখে থাকবেন। আর নিজেকে ভালো রাখার চেষ্টা করবেন।

আমার পরিচিতি

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।


3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeF5StuMqDPqgYjRhUxqFbXTvH2r2mDgNbWweA4YGBo825oLh4oqEqeynn5EZL11LdCrppngkM (1).gif

VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

1000206266.png

1000206267.png

❤️❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️❤️