জেনারেল রাইটিং:-" স্মৃতির মাইলফলকে প্রিয় কমিউনিটির চারটি বছর " II written by @maksudakawsar II

কেমন আছেন সবাই? আশা করবো সবাই ভালো আছেন। সৃষ্টিকর্তার রহমতে আমিও আছি ভালোই। তবে ব্যস্ত এ নগরে কতটুকু সময় ভালো থাকতে পারবো সেটা বলা মুশকিল। শত ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে কাটাতে হয় যান্ত্রিক জীবন। মাঝে মাঝে মনে হয় সব কিছুকে বন্ধ করে দিয়ে দূরে কোথাও সবুজ গাছের ছায়ায় নিজেকে একটু স্বস্থির ছায়া দিতে। কিন্তু ঐ যে বাস্তবতা, সেটা তো বড়ই নিষ্ঠুর আর নির্মম। কোন কিছুতেই ছাড় দিতে চায় না। সে যাই হোক বাবা । চলুন মূল পোস্টে ফিরে যাওয়া যাক।

প্রতিদিনই চেষ্টা করি আপনাদের মাঝে সুন্দর করে কিছু লিখে উপহার দেওয়ার জন্য। চাই চারদিকের মানুষগুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকা কষ্টগুলো কে আমার লেখার যাদুতে আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে। জানিনা কতটুকু আপনাদের মাঝে নিজের মনের কথা গুলো কে শেয়ার করতে পারি। আজ চেষ্টা করলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করার জন্য। আশা করি প্রতিদিনের মত করে আমার আজকের জেনারেল রাইটিংটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।

আজকের এই বিশেষ দিনে শুধু আমি একা নই, আমাদের সবার হৃদয়ে একটা অন্যরকমের আনন্দ আর আবেগ কাজ করছে। কারণ আজ সেই দিন, যেদিন আমাদের প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির জন্ম হয়েছিল। আজ আমাদের কমিউনিটির জন্মদিন, আমাদের সৃষ্টিশীলতার, বন্ধুত্বের, সাহচর্যের এক চমৎকার যাত্রার চতুর্থ বার্ষিকী। চার বছর আগে মাত্র কয়েকজন মানুষ, যারা শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি আর জীবনের রঙিন অনুভূতিগুলোকে ভালোবাসে, এক জায়গায় জড়ো হয়েছিল একটি ভার্চুয়াল কমিউনিটিতে। যার ফাউন্ডার ছিল প্রিয় @rme দাদা। তখন হয়তো কেউ ভাবেনি এই জায়গাটা একদিন এত আপন হয়ে উঠবে।

কমিউনিটির যাত্রাটা শুরু হয়েছিল খুব সাদামাটা ভাবে—কেউ কবিতা লিখতেন, কেউ গান করতেন, কেউ ঘুরে বেড়িয়ে ফিরে এসে সেই গল্প ভাগ করে নিতেন। কেউ রান্না করতেন, আর তা অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করে আনন্দ পেতেন। আজ দাদার হাত ধরে কমিউনিটি এক অন্য জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। যেখানে এখন কিছু সংখ্যক নয়, এখন রূপ নিয়েছে এক বিশাল প্লাটফর্মে। আজ এখানে আমরা একে অপরের সৃষ্টিকে শুধু উপভোগ করিনা, বরং তাতে মন্তব্য করি, ভালোবাসা আর উৎসাহ দিয়ে থাকি। আমি এখনও মনে করতে পারি, আমার প্রথম পোস্টটিতে যখন কেউ মন্তব্য করেছিল, "তোমার লেখাটা মন ছুঁয়ে গেল", তখন মনে হয়েছিল—আমি যেন নিজের একটা ঘর খুঁজে পেয়েছি।

এই কমিউনিটি আমার কাছে শুধুমাত্র একটি প্ল্যাটফর্ম নয়—এটা একটা আশ্রয়। জীবনের ক্লান্ত সময়ে এখানে এসে একটু প্রশান্তি পাই। মন খারাপ থাকলে এখানে ঢুকে কারো লেখা পড়লেই মন ভালো হয়ে যায়। এখানে আমি এমন কিছু বন্ধু পেয়েছি যাদের হয়তো কখনও সামনাসামনি দেখিনি, কিন্তু যাদের সঙ্গে অনুভবের বন্ধন অটুট। আমরা একে অপরের জীবন, ভাবনা, আবেগকে ভাগ করে নিই। এমনকি কেউ যখন দুঃসময় পার করে, আমরা কমিউনিটির সবাই তাকে সান্ত্বনা দিই, পাশে থাকি।

আমাদের কমিউনিটির সবচেয়ে সুন্দর দিকটি হলো এর বৈচিত্র্য। এখানে আছেন ছাত্র, শিক্ষক, গৃহিণী, প্রবাসী, উদ্যোক্তা সব বয়স ও পেশার মানুষ। কেউ হয়তো ঢাকায় থাকে, কেউ কলকাতায়, কেউ আবার ইউরোপে বা মধ্যপ্রাচ্যে। কিন্তু ভাষা, শিল্প, আর অনুভূতির এই বন্ধনে আমরা সবাই এক। এখানে একদিন কেউ শেয়ার করে দাদির হাতের পুরোনো রেসিপি, আবার কেউ লেখেন আধুনিক জীবনযাপনের জটিলতা নিয়ে। এই বৈচিত্র্যই আমাদের কমিউনিটিকে এত সমৃদ্ধ করে তুলেছে।

কমিউনিটি আজ দাদার হাত ধরে এগিয়ে গেছে বহুদূর। আজ কমিউনিটির নিজস্ব একটি কয়েন এসেছে। যার জন্য স্টিমেট প্লাটফর্মে আজ আমার বাংলা ব্লগ মাথা তুলে দাড়িঁয়ে আছে। দাদার অক্লান্ত পরিশ্রমেই আজ কমিউনিটি এত দূর এসে দাঁড়িয়েছে। আর কমিউনিটির সব ইউজাররাও বেশ আনন্দ চিত্তে নিজের জন্য পুষ কিনে লাভবান হতে পারছে। আশা করি পুষ আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে অনায়াসে দাদার হাত ধরে।

আমরা যারা কমিউনিটিতে কাজ করে যাচিছ তারা পেরেছি অনেক কিছু। কমিউনিটির এ বিবি স্কুল আজ আমাদের কে শিখিয়েছে কি করে একজন দক্ষ ব্লগার হয়ে উঠতে হয়। কি করে নিজের দক্ষতা আর ক্রেয়েটিভিটি দিয়ে একটি সুন্দর কবিতা লিখতে হয়। তাই আমি ব্যক্তিগত ভাবে এই কমিউনিটির কাছে দায়বদ্ধ। কারন এখানে আসার আগে জানতাম না কি করে কবিতা লিখে, কি করে জেনারেল রাইটিং লিখে সাজাতে হয়। কিন্তু আজ আমি এত এত দক্ষতার মালিক কেবল মাত্র প্রিয় কমিউনিটির জন্যই।

তাই আজ মনের গভীর হতেই প্রিয় কমিউনিটির এমন দিনে জানাই প্রিয় @rme দাদা কে অনেক অনেক ধন্যবাদ। যিনি আমাদের জন্য এমন একটি প্লাটফর্মের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। সেই সাথে সকল এডমিন আর মডারেটরদের প্রতি রইল আমার কৃতজ্ঞতা। আর প্রিয় বন্ধুদের কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। অনেক বছর এক সাথে থাকার প্রত্যয় নিয়ে আজ শেষ করছি।