গল্প পোস্ট- তোমায় যাবে না কখনও ভোলা এর শেষ পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম

সবাই কেমন আছেন? ভালোই তো আছেন মনে হয়। আমি আপনাদের সবার প্রিয় @maksudakawsar । আমি বাংলাদেশ হতে আপনাদের সাথে সংযুক্ত আছি। একজন ভেরিফাইড মেম্বার হিসাবে আমি প্রতি নিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি যে আপনাদের সাথে নতুন নতুন কিছু নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হতে। কারন আপানাদের মাঝে থেকে আমি কিন্তু অনেক আনন্দই অনুভব করি। আর তাই তো আজ আবার চলে আসলাম বক বক করার জন্য।

ভালোবাসা মানে নিজেকে নতুন রূপে দেখা। ভালোবাসা মানে নিজের অন্যের চোখে নিজেকে হারিয়ে খোঁজা। আর ভালোবাসা মানে মনের গভীরে সারাটিক্ষন প্রিয় মানুষটিকে অনুভব করা। এই ভালোবাসা না থাকলে পৃথিবীটা কিন্তু এত সুন্দর হতো না। ফুটতো না গাছে ফুল আর গাইতো না পাখিরা। আর এসব আছে বলেই ভালোবাসা এত সুন্দর আর র মধুর। কিন্তু ভালোবাসা কিন্তু মাঝে মাঝে হয়ে উঠে বিষাদময়। হয়ে উঠে দূর্বিসহ। প্রিয় মানুষটি তখন হয়ে যায় অপ্রিয়।

তোমায় যাবে না কখনও ভোলা এর শেষ পর্ব.png

ছবি সোর্স
Made By-@maksudakawsar

এইতো কয়েকদিন আগে আমি আপনাদের সাথে একটি গল্প শেয়ার করেছিলাম। আর আমার গল্পটির নাম ছিল তোমায় যাবে না কখনও ভোলা। আমি আপনাদের সাথে গল্পটির প্রথম পর্ব শেয়ার করায় আপনারা বেশ< আগ্রহের সাথে গল্পটির পরবর্তী পর্ব দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তাই আজ আমি গল্পটির শেষ পর্ব নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম। আর আপনারা যারা গল্পটির প্রথম পর্ব পড়েননি তাদের জন্য আমি নীচে গল্পটির প্রথম পর্বের লিংক দিয়ে দিলাম।< /div>

তোমায় যাবে না কখনও ভোলা এর ১ম পর্ব

নীলিমার জ্ঞান ফিরে আসে তখন স্তব্দ নীলিমা শুধু কেদেঁ কেঁদে বুক ভাসায়। নীলিমা ভাবে কি ভুল করলো সে । কি ভাবে এ ভুল নীলিমা সামলাবে। কি জবাব দিবে নীলিমা সমাজের কাছে। এসব ভাবতে ভাবতে নীলিমা ভাবছে কি করছি আমি। কোন কিছু যাচাই না করে আমি কেন শুধু শুধু এত কিছু ভাবছি। চিলে কান নিলে তো আর তার পিছে দৌড়াতে হয় না। বরং নাহিদ আসুক তার সাথে সরাসরি কথা বলে সব জানতে হবে। এরপর রাতে নাহিদ বাসায় ফিরে তিনদিন পর। রাতে যখন নাহিদ ঘুমুতে আসে তখন নীলিমা নাহিদ কে জিজ্ঞেস করে যে, তুমি কি বিবাহিত? নাহিদ যেন আকাশ থেকে পড়লো। নাহিদ নীলিমা কে বলে তুমি ছাড়া আমার জীবনে দ্বিতীয় কোন নারী নেই । আর আসবেও না। এসব কথা শুনে নীলিমা নাহিদ কে সব কিছু খুলে বলে যে নীলিমার কাছে একজন ভদ্রলোক ফোন দিয়ে তাকে বলেছে যে নাহিদ বিবাহিত এবং তার দুটো মেয়ে এবং একটি ছেলে আছে। বড় মেয়ের বয়স ১৪-১৫ হবে। নাহিদ সব শুনে নীলিমা কে বলে আমাদের সুখ দেখে হয়তো কারো হিংসে হচেছ তাই এমন কথা তোমার কানে লাগিয়েছে। তুমি এত সব বিশ্বাস করো না। আমার জীবনে তুমি ছাড়া কেউ নেই। নাহিদের এমন কথায় নীলিমাও নাহিদ কে বিশ্বাস করলো। এরপর তাদের ভালোবাসার সংসার আবার আগের মত চলছে।

বেশ কিছুদিন পর নীলিমার মোবাইলে আবারও একটি ফোন আসলো। এববার কিন্তু একজন ভদ্র মহিলা নীলিমা কে ফোন করেছে। ভদ্র মহিলা ওপার হতে নীলিমাকে কেঁদে কেঁদে বললো যে, নাহিদ তার স্বামী। তাদের তিনটি সন্তান আছে। বড় মেয়ে ক্লাস এইটে পড়ে। ভদ্র মহিলা বলছে আর কাঁদছে। এক পর্যায়ে ভদ্র মহিলা নীলিমা কে তার বাসার ঠিকানা দিয়ে দেখে আসতে বলে। এবার কিন্তু নীলিমা ভদ্র মহিলার কথা শুনে এতটুকুও কাঁদলো না। বরং ফো রাখার পর নীলিমা সিদ্ধান্ত নিল যে সে একবার যাবে। সত্য মিথ্যা যাচাই করতে। দুই একদিন পর নীলিমা তার এক বান্ধবীকে নিয়ে ভদ্র মহিলার দেওয়া ঠিকানায় চলে গেল। নীলিমা সেখানে যেয়ে দেখে এক অপরূপা সুন্দরী রমনী, ছিমছাম গুছানো সংসার ভদ্রমহিলার। ভদ্র মহিলা নীলিমা কে সব ঘর ঘুরে দেখালো। কারন তার প্রতিরুমেই সন্তানদের সাথে নাহিদের ছবি। এমন কি ঘরের সাইট আলনায় নীলিমা নাহিদের কাপড়ও দেখতে পেল। নীলিমা ভদ্র মহিলার কাছে জানতে পারলো যে এটা নাহিদের বড় ভাইয়ের বাড়ী। নাহিদ এখানে পরিবার নিয়ে থাকে। আর বাড়ীর দেখা শুনা করে। এখন আর নীলিমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হলো না যে নাহিদ তার সাথে প্রতারনা করেছে। হঠাৎ নাহিদ ঘরে ঢুকলো। কিন্তু নাহিদের আসার কথা শুনে নীলিমা নিজেকে একটু আড়াল করে নিলো। নাহিদ যখন টেবিলে খেতে বসলো তখন নীলিমা যেয়ে নাহিদের সামনে দাড়াঁয় এবং নাহিদ কে জিজ্ঞেস করে আমি কে আর উনি কে? নীলিমা কে দেখে নাহিদ থো খেয়ে যায়। একপর্যায়ে নীলিমা নাহিদের সাথে ঝগড়া করে চলে আসে। আসার সময় নাহিদের প্রথম পক্ষের স্ত্রী অবশ্য নীলিমা কে অনেক রাখতে চায়। কিন্তু নীলিমা কাঁদতে কাঁদতে চলে আসে।

বেশ কিছুদিন পর নাহিদ নীলিমার কাছে আসে। নীলিমা নাহিদ কে বার বার ফিরিয়ে দিলেও নাহিদ নীলিমার কাছ হতে যেতে চায় না। নাহিদ বলে আমার কাছে তুমিও যেমন আমার প্রথম স্ত্রীও তেমন। আমি কাউকেই ছাড়া থাকতে পারবো না। নীলিমা সব কিছু ভেবে দেখলো কি আর করার মেয়েদের জীবন হয়তো এমনই হয়। আর নীলিমাও নাহিদ কে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে। তাই নীলিমাও নাহিদ কে ফিরিয়ে দিতে পারে না। এভাবেই দিন যাচ্ছিল। কিছুদিন পর নাহিদ যখন নীলিমার কাছে, তখন নাহিদের মোবাইলে একটি ফোন আসে। ফোনটি দেয় নাহিদের বড় মেয়ে। সে তার বাবা কে বলে তুমি আবারও ঐ কালো মহিলার কাছে গেছো। আমার মা তো অনেক সুন্দর। তুমি কেন কালো মাহিলার কাছে গেলে। এসব কথা নীলিমা শুনে ফেলে। আসলে সে নাহিদের পাশে বসা থাকে তো তাই সে কথা গুলো শুনতে পায়। তখন নীলিমা নাহিদের হাত হতে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে নাহিদের মেয়ে কে বেশ কড়া কড়া কিছু কথা শুনিয়ে দেয়। সৎ মায়ের মুখে এসব করা কথা শুনে নাহিদের বড় মেয়ে সোসাইটের এটেম্প নেয়। নাহিদ জানতে পেরে ছুটে যায় তার মেয়ের কাছে।

তারপর নাহিদের ভাই বোনেরা সবাই মিলে এ বিষয়টি নিয়ে পারিবারকি ভাবে বসে এবং নাহিদ কে পরিস্কার জানিয়ে দেয় সে যেন নীলিমা কে টাকা পয়সা যা দেওয়ার দিয়ে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। সে হতে নাহিদ আর নীলিমার কাছে আসে না। এদিকে নীলিমা কয়েকবার নাহিদের বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করতে চাইলেও ভালোবাসার কারনে তা আর করতে পারে না। এমনকি ডিভোর্স ও দিতে পারে না। নীলিমার আসা নাহিদ আবার তার কাছে ফিরে আসবে। এই আসায় বুক বেধেঁ নীলিমার দিন যায় আজও।

কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের গল্পটি ? অপেক্ষায় রইলাম আপনাদের অনূভূতি গুলো জানার। আসলে আমিও বুঝতে পারছি না এখানে কার দোষ? জানলে আমাকে একটু জানাবেন তো প্লিজ।

সবাই ভাল এবং সুস্থ্য থাকবেন।

❤️ধন্যবাদ সকলকে।❤️

@maksudakawsar

image.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন আপনি, ভালোবাসা মানে নিজেকে নতুন রূপে দেখা। আর ভালোবাসার মানুষটাকে নিয়ে সবার মনের মধ্যে অন্যরকম অনুভূতি রয়েছে এবং ভালোবাসার সেই মানুষটিকে কখনো ভুলা যায় না। তোমায় যাবে না কখনো ভোলা, এই গল্পটির প্রথম পর্ব পড়া হয়নি, কিন্তু শেষ পর্ব পড়ে খুব খারাপ লাগলো আমার কাছে। নীলিমা আজও নাহিদের পথ চেয়ে বসে থাকে। নাহিদ দুইটা বিয়ে করেছিল। তার প্রথম পরিবারে তিনটা সন্তান ছিল। তবুও সে নীলিমাকে বিয়ে করে। নাহিদের হাত থেকে তার স্ত্রী নীলিমা ফোনটা নিয়ে, নাহিদের মেয়েকে অনেক কড়া কড়া কথা শুনিয়ে দেয়। যার কারণে তার মেয়ে সোসাইটের এটেম্প নেয়। সবশেষে নাহিদের ভাই-বোনেরা সিদ্ধান্ত নেই নীলিমাকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য। সবকিছু শেষে নীলিমা এখনো নাহিদের অপেক্ষায় আছে। সম্পূর্ণটা বেশ ভালোই লিখেছেন।

 2 years ago 

আমি তো গল্পটি লিখছিলাম আর ভাবছিলাম ভাবছিলাম কেন মেয়েদের জীবনে এত কষ্ট হয়। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

আপনার গল্পের প্রথম পর্বটি আমি পড়েনি। তবে আজকের পর্ব পড়ে বুঝতে পারলাম নীলিমার জীবনে তুফান যাচ্ছে। সে যাকে এত ভালবাসে সে নাহিদ আগে আরেকটা বিয়ে করেছে। এই কারণে তাদের সংসারে ঝগড়া করে একটু পৃথক হয়ে গেল। অনেক সময় মেয়েরা অনেক কিছু মুখ বুঝে সহ্য করে। তবে নীলিমা নাহিদের বড় মেয়েকে মোবাইলে কড়া কথা বলার কারনে এই কারণে মেয়েটি সুইসাইড এটেম্প নেয়। এই কারণে হয়তো বা নাহিদ তার থেকে আরো দূরে চলে গেল। সত্যি আপনার গল্পটি পড়ে খুব খারাপ লাগলো।

 2 years ago 

আপু যে দূরে সরে যাবার সে তো যাবেই, কিন্তু তার জন্য কি আর জীবন বসে থাকবে? বেশ সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন।

 2 years ago 

কিছু কিছু ভালোবাসা আছে ভোলা যায় না। নীলিমা পছন্দ করে নাহিদ কে বিয়ে করেছে। অথচ নাহিদ আগে আরেকটি বিয়ে করেছে ওখানে তার ছেলে-মেয়ে আছে। অথচ নাহিদ প্রথমে সেটা স্বীকার করতেছে না। নাহিদের প্রথম সংসারের মেয়ে যখন বাবার সাথে কথা বলতে লাগলো তখন নীলিমা মোবাইল নিয়ে তার সাথে কড়া ভাষায় কথা বলেন। এই কারণে নাহিদের বড় মেয়ে সোসাইটের এটেম্প নেয়। সেই কারণে নাহিদের ফ্যামিলি নীলিমাকে ডিভোর্স দেওয়ার চিন্তা করে। তারপর নীলিমা নাহিদের অপেক্ষায় আছে। যদিও আমি আপনার গল্পের প্রথম পর্বটি পড়ি নাই তবে এখন শেষ পর্বটি পড়ে অনেক ভালই লাগলো।

 2 years ago 

আশা করি গল্পের প্রথম পর্বটি পরে দেখখেন। বেশ ভালোই লাগবে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।