শৈশবের বৃষ্টির দিন নিয়ে কিছু অনুভূতি

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন আমার প্রিয় সহযাত্রী ভাই বোনেরা? আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের সবার দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। তবে মনমানসিকতা ভালো নেই। আর মনমানসিকতা যদি ভালো না থাকে তাহলে শরীর মন অচল হয়ে পড়ে। তারপরেও আপনাদের সবার মাঝে আমার আরও একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজ আমি একটি শৈশবের কিছু কথা নিয়ে আপনাদের সবার মাঝে হাজির হয়েছি।আশা করি আপনাদের সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে। তাহলে চলুন আজ আমার শৈশবের কিছু স্মৃতির অনুভূতি জেনে আসি।

আসলে শৈশবকাল আমাদের সবার জীবনে একটি স্মৃতিমধুর। আমি মনে করি শৈশবের স্মৃতি আমাদের সবার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যা আমাদের প্রতিটিদিন প্রতিটি মুহূর্ত ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেই শৈশবের দিনগুলোর মাঝে। শৈশবে আমাদের ছিল না কোন ভাবনা, ছিলনা কোন দুঃশ্চিন্তা বা কোন দায়িত্ববোধ। তখন আমাদের প্রতিটি দিন ও মুহূর্ত ছিল একদম সাদাসিদে ও আনন্দ পূর্ণ। এখনো সেই দিনগুলোর প্রতিটা সময় ও মুহূর্তগুলো মনে পড়লে মনে হয় যেন সেদিনের সেই দিন গুলোই অনেক সুন্দর ছিল। এখন ভাবী কেন বড় হতে গেলাম। চাইলেও ফিরে যেতে পারবো না সেই শৈশবে ফেলে আসা দিনগুলোতে। তাইতো আজও চলে গিয়েছিলাম শৈশবের কিছু মধুর স্মৃতিতে। আর সেই মধুর স্মৃতির কিছু অংশ আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এলাম।

kids-8771267_1280 (1).jpg

Source

বৃষ্টির দিনে শৈশবের যে আনন্দ, তার তুলনা একমাত্র সেই দিনগুলোই জানে। তখন আকাশ থেকে নেমে আসা বৃষ্টির ছোঁয়ায় হৃদয় ভরে উঠত অনাবিল সুখে। বৃষ্টির দিনে শৈশব ছিল এক বিশেষ অনুভূতির জায়গা। যেখানে আনন্দ, উচ্ছ্বাস, খেলা, আর মুগ্ধতা মিলেমিশে একাকার হয়ে যেত। বৃষ্টির দিন শৈশবের স্মৃতিতে গভীরভাবে মিশে রয়েছে। সেই দিনগুলোতে আকাশের কালো মেঘ, মাটি থেকে ওঠা কুয়াশার গন্ধ, আর বৃষ্টির ঝমঝম শব্দে, আমাদের মনে এক অদ্ভুত আনন্দ তৈরী হতো। শৈশবের বৃষ্টির দিন ছিল আনন্দ, খেলা, আর স্নিগ্ধতার ভরা এক অপরূপ সময়।

বৃষ্টির দিনে ঘরের ভিতর বসে, জানালা দিয়ে বাইরে তাকালে একটা আলাদা অনুভূতি জাগতো। পানি, মাটি, গাছপালা, সবকিছু এক নতুন রূপে রাঙিয়ে উঠতো। যেহেতু কোয়াটারে থাকতাম তাই বৃষ্টির দিন আসলেই নেমে যেতাম সবাই মিলে বৃষ্টির পানিতে ভিজতে। আর আনন্দ ভরা হৃদয় নিয়ে সবাই এক সাথে গেয়ে উঠতাম আই বৃষ্টি ঝেপে, ধান দিবো মেপে।

বৃষ্টি পড়তে শুরু করলে আমরা সবাই নিজেদের ঘর থেকে বেরিয়ে যেতাম। কেউ সঙ্গী করে নিয়ে আসত পেপারের তৈরি নৌকা, কেউ আবার হাত দিয়ে ছোট ছোট খেলার যন্ত্র তৈরি করত। আর আমরা সবাই একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করতে করতে কাদা,পানি মিশিয়ে এক বিশাল খেলা শুরু করতাম। তাছাড়া শৈশবের বৃষ্টির দিনে, যখন সকলে মিলেমিশে ঘরোয়া আনন্দে ডুবে থাকতাম তখন বাইরে গাছপালার মাঝে বৃষ্টির শব্দও এক বিশেষ সুর তৈরি গাছপালায় বৃষ্টির টিপটিপ শব্দ, বাতাসে হালকা ঝড়ের ঝাপটা, এসব ছিল শৈশবের অমূল্য অংশ।

বৃষ্টির দিনে কাঁদা মাটিতে খেলা করে যখন বাসায় ফিরে আসতাম তখন মায়ের যে পিটানী খেতাম সে কথা আজও ভুলার নয়। মা সাবান দিয়ে জোড়ে জোড়ে গা ডলে গোসল করিয়ে দিতো। আর বার বার বলতো আর যাবি, আর যাবি। আমিও কেঁদে কেঁদে বলতাম না আর যাবো না। হি হি হি। অবশ্য মা এমন করার পর আবার গরম গরম বুট ভাজা, চাল ভাজা আরও কত কি যে খেতে দিতো তার হিসেব নেই। আর আমরা সব বোনেরা আনন্দ নিয়ে খেতাম আর এটা সেটা খেলতাম।

আজও যখন বৃষ্টি হয়, শৈশবের সেই বৃষ্টির দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। তখনকার আনন্দ, যখন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বন্ধুত্বের গভীরতা সব মিলেমিশে একাকার হয়ে যেত এই অনুভূতিগুলো ফিরে আসলে মনে হয় যেন শৈশব আবার ফিরে এসেছে। শৈশবের বৃষ্টির দিনগুলো ছিল এমন এক সময়, যখন পৃথিবী ছিল শান্ত, সবুজ আর পবিত্র। প্রকৃতির সাথে বৃষ্টির খেলা, তার মধ্যে বৃষ্টির ছোঁয়া, কখনো ভুলে যাওয়ার নয়। আজও যখন বৃষ্টি হয়, মনে হয় যেন সেই শৈশব ফিরে এসেছে। আর আমি সেই ছোট্ট শিশুটিই হয়ে আছি, যিনি বৃষ্টির মধ্যে আনন্দ নিয়ে খেলছিল।

কেমন লেগেছে আপনাদের সবার কাছে আজ আমার শৈশবে ফেলে আসা সুন্দর কিছু স্মৃতি নিয়ে পোস্টটি। আশা করছি আপনাদের সবার কাছে আমার পোস্টটি পড়েও অনেক ভালো লেগেছে সবাই ভালো ও সুস্থ থাকবেন সে পর্যন্ত আগামীতে আবার নতুন ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে চলে আসবো ইনশাল্লাহ আল্লাহাফেজ।

❤️❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️❤️

image.png