জেনারেল রাইটিং- মানুষ কেন নিজের অন্যায়কে অন্যায় মনে করে না?
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন আমার প্রিয় সহযাত্রী ভাই বোনেরা? আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের সবার দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। আশা করি সবার দিনটা ভাল কেটেছে। আজকে আপনাদের সবার মাঝে আমার আরও একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজ আমি একটি জেনারেল রাইটিং নিয়ে আপনাদের সবার মাঝে হাজির হয়েছি।আশা করি আপনাদের সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে। তাহলে চলুন আজ আমার জেনারেল রাইটিংটি দেখে আসি যে কি বিষয় নিয়ে লেখলাম। হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আমার জেনারেল রাইটিং এর বিষয় হলো মানুষ কেন নিজের অন্যায়কে অন্যায় মনে করে না?

মানুষ সৃষ্টির সেরা। কারন মানুষের রয়েছে জ্ঞান আর বিবেক বুদ্ধি। যা অন্য কোন প্রাণীর মধ্যে নেই। তবে সৃষ্টির সেরা হয়েও মানুষের মধ্যে ভালো এবং খারাপ দুটো গুনই রয়েছে। তবে মানুষ চিরকালই নিজেকে ন্যায়ের পক্ষে এবং সঠিক বলে মনে করতে চায়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, কেউ কেউ এমন সব কাজ করে থাকে যা সমাজ, ধর্ম কিংবা আইন অনুযায়ী স্পষ্টভাবে অন্যায়। তবুও তারা নিজের কাজকে ভুল মনে করে না। প্রশ্ন ওঠে, কেন এমন হয়? কেন একজন মানুষ নিজের অন্যায় আচরণকে সহজে "অন্যায়" বলে মেনে নেয় না? বিষয়টি হয়তো আমরা কখনও ভেবে দেখি না। কিন্তু বেশ কিছুদিন যাবৎ আমি বিষযটি নিয়ে একটু ভেবে দেখলাম। আমার মনে হয় মানুষ বেশ কিছু কারনেই সব সময় নিজে সৎ এবং সঠিক মনে করে। যার কারনে তার কাছে কোন অন্যায়কেই অন্যায় মনে হয না।
মানুষ সব সময় নিজেকে ভালো মানুষ হিসেবে দেখতে চায়। মানুষ যখন কোনো ভুল কাজ করে, তখন তার মস্তিষ্ক সেই কাজটিকে যুক্তিসঙ্গত মনে করানোর চেষ্টা করে। যেমন, কেউ ঘুষ খেলে বলে, তিনি মনে করেন- “সবাই তো খাচ্ছে” বা “আমার তো অনেক প্রয়োজন ছিল।” আর এমন ধারনার মাধ্যমে সে নিজের কাছে নিজের কাজটিকে যৌক্তিক করে তোলে। এছাড়া অনেক সময় সমাজ বা আশপাশের পরিবেশ যদি কোনো ভুল আচরণকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে, তাহলে সেই আচরণ আর "ভুল" বলে মনে হয় না। যার কারনে মানুষের ভিতরে ভুলের প্রবনতা আরও বেড়ে যায়।
অন্যায় কাজ করলে মানুষের মধ্যে অপরাধবোধ তৈরি হয়। কিন্তু এই অনুভূতি অত্যন্ত অস্বস্তিকর। ফলে মানুষ সচেতন বা অচেতনভাবে নিজের কাজটিকে অন্যায় বলে মানতে চায় না, যাতে করে মানসিক চাপ এড়ানো যায়। এই মানসিক চাপ এড়ানোর একটি উপায় হলো নিজেকে বোঝানো যে সে যা করেছে, তা ছিল সঠিক। আর এভাবেই মানুষ অন্যায়ের সাথে আপোষ করে। অন্যদিকে অনেক সময় মানুষ অন্যায়ের সংজ্ঞাই ঠিকভাবে জানে না। তারা বুঝে না, কোন কাজটি ক্ষতিকর বা অনৈতিক। বিশেষ করে যারা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত বা নৈতিক শিক্ষার অভাবে বেড়ে ওঠে, তারা অনেক সময় জানতেই পারে না যে তাদের আচরণ অন্যায়।
ক্ষমতা যখন কারো হাতে চলে আসে, তখন তার মধ্যে অহংকারবোধ বেড়ে যায়। এমন মানুষরা মনে করে, তারা যা খুশি তা-ই করতে পারে। এমন ভাবনা তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে। ফলে তাদের নিজের অন্যায়ও কে “সিদ্ধান্ত” বা “অধিকার” বলে মনে হয়। অনেক সময় মানুষ নিজের ভুলের জন্য অন্য কাউকে দায়ী করে। এই দৃষ্টিভঙ্গি মানুষকে নিজের কর্মের দায় এড়াতে সাহায্য করে। মানুষের নিজের অন্যায়কে অন্যায় মনে না করার পেছনে রয়েছে জটিল অনেক কারন। এটি শুধুমাত্র ব্যক্তি নয়, পুরো সমাজের নৈতিক কাঠামোর উপরও প্রভাব ফেলে। এজন্য দরকার সঠিক শিক্ষা।
আশা করি প্রতিদিনের মত করে আজও আপনাদের কাছে আমার আজকের পোস্টটি বেশ ভালো লেগেছে। আপনাদের মন্তব্যের আসায় রইলাম।
আমার পরিচিতি
আমি মাহফুজা আক্তার নীলা । আমার ইউজার নাম @mahfuzanila। আমি একজন বাংলাদেশী ইউজার। আমি স্টিমিট প্লাটফর্মে যোগদান করি ২০২২ সালের মার্চ মাসে। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যোগদান করে আমি অরেনেক বিষয় শিখেছি। আগামীতে আরও ভালো কিছু শেখার ইচ্ছে আছে। আমি পছন্দ করি ভ্রমন করতে, ছবি আঁকতে, বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে। এছাড়াও আমি বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে। মন খারাপ থাকলে গান শুনি। তবে সব কিছুর পাশাপাশি আমি ঘুমাতে কিন্তু একটু বেশীই পছন্দ করি।

https://x.com/mahfuzanila95/status/1920107352449028484
https://x.com/mahfuzanila95/status/1920107312804684104
আপনার বিশ্লেষণে আমি সম্পূর্ণ একমত। বিশেষ করে যারা নৈতিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত, তাদের ক্ষেত্রে অন্যায় চিনতে পারার সক্ষমতা কমে যায়। পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কীভাবে এই দায়িত্ব নিতে পারে, সে বিষয়ে কিছু পরামর্শ থাকলে আমাদের জন্য উপকারী হতো।আপনি যদি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কিছু উদ্ধৃতি বা উদাহরণ দিতেন, তাহলে লেখাটি আরও গভীরতা পেত। সর্বোপরি ধন্যবাদ আপু আপনাকে এতো সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।