জেনারেল রাইটিং- অন্যায়কারীর শান্তি হয় না বলেই সে আরও বেশী অন্যায় করার সুযোগ পায়

in আমার বাংলা ব্লগ6 days ago

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন আমার প্রিয় সহযাত্রী ভাই বোনেরা? আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের সবার দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। আশা করি সবার দিনটা ভাল কেটেছে। আজকে আপনাদের সবার মাঝে আমার আরও একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজ আমি একটি জেনারেল রাইটিং নিয়ে আপনাদের সবার মাঝে হাজির হয়েছি।আশা করি আপনাদের সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে। তাহলে চলুন আজ আমার জেনারেল রাইটিংটি দেখে আসি যে কি বিষয় নিয়ে লেখলাম। হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আমার জেনারেল রাইটিং এর বিষয় হলো অন্যায়কারীর শান্তি হয় না বলেই সে আরও বেশী অন্যায় করার সুযোগ পায়।


people-7393196_1280.png

source

জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে আমরা ন্যায়ের সঙ্গে যেমন পরিচিত হই, তেমনি অন্যায়ের মুখোমুখিও হতে হয়। কেউ ন্যায়ের পথে চলে আত্মতৃপ্তি খুঁজে পায়, আবার কেউ অন্যায় করে নিজ স্বার্থ রক্ষা করার চেষ্টা করে। কিন্তু সত্যিই কি অন্যায়কারীরা শান্তিতে থাকে? কিংবা তারা কি বারবার অন্যায় করার সুযোগ পায়?

প্রথমেই দেখা যাক একজন অন্যায়কারীর মানসিক অবস্থান। যখন কেউ প্রথমবার অন্যায় করে, তখন তার অন্তরে এক ধরনের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। সে জানে, সে যা করেছে তা ভুল, তা সমাজ বা ধর্ম বা মানবতার বিপরীত। এই সচেতনতা থেকেই জন্ম নেয় এক ধরনের ভয়।পদে পদে ধরা পড়ার ভয়, সম্মান হারানোর ভয়, প্রতিশোধের ভয়। এই ভয়ের সঙ্গে দীর্ঘ সময় বসবাস করা যায় না, তাই সে নিজেকে সুস্থির করতে দ্বিতীয়বার, তৃতীয়বার এমন করে আরও বেশী অন্যায়ের দিকে এগিয়ে যায়।

মানুষ যখন প্রথম অন্যায় করে, তখন সে হয়তো নিজেকে যুক্তি দিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করে—"আমাকে এটা করতেই হতো", "অন্যরা তো করেই", কিংবা "এটা তেমন বড় কিছু না" ইত্যাদি। কিন্তু সময় যত গড়ায়, এই যুক্তি ক্ষীণ হতে থাকে। নিজের ভেতরের অপরাধবোধকে চাপা দিতে সে আরও বড় অন্যায়ের আশ্রয় নেয়। এভাবেই অন্যায়কারীর জীবন হয়ে ওঠে এক অনিয়ন্ত্রিত জাল। যেখানে সে নিজেই আটকে যায়।

এখানে সমাজের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় দেখা যায়, একজন মানুষ অন্যায় করার পরও কোনো শাস্তি না পেয়ে উল্টো পুরস্কৃত হয়। ক্ষমতার আসনে বসে, টাকার পাহাড় গড়ে, কিংবা সামাজিক মর্যাদা অর্জন করে। এই দৃশ্য দেখে আরও অনেকে মনে করে, অন্যায় করেও সব কিছু অর্জন করা সম্ভব। ফলে অন্যায় সমাজে সংক্রামক রোগের মতো ছড়িয়ে পড়ে। অথচ সমাজ যদি প্রথমেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়, সঠিক বিচার নিশ্চিত করে, তবে অনেক অপরাধের জন্মই হতো না।

"অন্যায়কারীর শান্তি হয় না"—এই কথার গভীরে রয়েছে এক কঠিন সত্য। একজন মানুষ যতই বাহ্যিকভাবে সফল হোক না কেন, যদি তার ভিতরটা অন্যায়ের পাপে আক্রান্ত হয়, তবে সে কখনও প্রকৃত শান্তি পায় না। তার রাতের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে, মানুষকে বিশ্বাস করতে পারে না, প্রতিটি সম্পর্কের পেছনে ষড়যন্ত্র খোঁজে। এমনকি নিজের ছায়াকেও ভয় পায় কখনো কখনো। এই মানসিক অস্থিরতা থেকেই জন্ম নেয় আরও অপরাধের, যেগুলো মূল অপরাধকে ঢাকতে সাহায্য করে।

অনেক সময় নিরব দর্শকেরাও অন্যায়ের প্রসারে ভূমিকা রাখে। তারা ভাবে, "আমি তো কিছু করিনি", অথচ এই "কিছু না করাটাই" অনেক সময় অন্যায়কারীদের সাহস জোগায়। সমাজ যদি অন্যায়ের বিরুদ্ধে কণ্ঠ না তোলে, তবে অন্যায়কারীরা দিনকে দিন আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা জানে, কেউ বাধা দেবে না, কেউ প্রশ্ন করবে না। তাই তারা আরও বেশি অন্যায় করার সুযোগ পায়।

অন্যায়কারীর শান্তি হয় নাএই সত্য যত তাড়াতাড়ি আমরা বুঝতে পারব, ততই সমাজের অন্যায় কমবে। একজন অন্যায়কারী নিজেই জানে সে অশান্তিতে ভুগছে, এবং সেই অস্থিরতাই তাকে আবারও অন্যায়ের দিকে ঠেলে দেয়। আমাদের দায়িত্ব হলো এই চক্র ভেঙে দেওয়া। ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোই একমাত্র উপায়, যা সমাজকে সত্যিকারের শান্তি এনে দিতে পারে।

আশা করি প্রতিদিনের মত করে আজও আপনাদের কাছে আমার আজকের পোস্টটি বেশ ভালো লেগেছে। আপনাদের মন্তব্যের আসায় রইলাম।

আমার পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা । আমার ইউজার নাম @mahfuzanila। আমি একজন বাংলাদেশী ইউজার। আমি স্টিমিট প্লাটফর্মে যোগদান করি ২০২২ সালের মার্চ মাসে। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যোগদান করে আমি অরেনেক বিষয় শিখেছি। আগামীতে আরও ভালো কিছু শেখার ইচ্ছে আছে। আমি পছন্দ করি ভ্রমন করতে, ছবি আঁকতে, বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে। এছাড়াও আমি বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে। মন খারাপ থাকলে গান শুনি। তবে সব কিছুর পাশাপাশি আমি ঘুমাতে কিন্তু একটু বেশীই পছন্দ করি।

❤️❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️❤️

image.png