বাংলা সিনেমা।।২৫ মে ২০২৫
হ্যালো বন্ধুরা,
বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাস মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের চলচ্চিত্র ঐতিহ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।এর সূচনা ঘটে বিংশ শতাব্দীর শুরুতে যখন হীরালাল সেন কলকাতায় সিনেম্যাটোগ্রাফ ব্যবহার করে বিভিন্ন নাটকের অংশ চিত্রায়িত করেন।যদিও এগুলো ছিল মঞ্চনাটকের চিত্রায়িত রূপ তবুও এগুলো বাংলা চলচ্চিত্রের প্রাক্-অবতার হিসেবে বিবেচিত।
১৯১৯ সালে মধুসূদন দত্তের নাটক অবলম্বনে নির্মিত "বিষ্ণু পদ" সিনেমাটি ছিল বাংলা ভাষার অন্যতম প্রাচীন নির্বাক চলচ্চিত্র।১৯৩১ সালে নিখিল মল্লিক পরিচালিত "জামাই ষষ্ঠী" প্রথম সবাক বাংলা সিনেমা হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নেয়।
চলচ্চিত্রের ভাষা হিসেবে বাংলা তখন ধীরে ধীরে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে থাকে।স্বাধীনতা পূর্ব সময়ে সিনেমা ছিল মূলত নাট্যনির্ভর ও পৌরাণিক কাহিনিভিত্তিক কিন্তু স্বাধীনতার পর বাংলা চলচ্চিত্রে এক নতুন জাগরণ আসে।সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক এবং মৃণাল সেন ছিলেন এই নবজাগরণের তিন কাণ্ডারি।সত্যজিৎ রায়ের "অপু ট্রিলজি" (পথের পাঁচালী, অপরাজিত ও অপুর সংসার) বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয় এবং বাংলা চলচ্চিত্রকে একধাপ ওপরে নিয়ে যায়।ঋত্বিক ঘটকের "মেঘে ঢাকা তারা", "সুবর্ণরেখা" প্রভৃতি সিনেমা তীব্র সামাজিক বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে।মৃণাল সেন তাঁর চলচ্চিত্রে মধ্যবিত্ত সমাজের দ্বন্দ্ব এবং রাজনৈতিক চেতনার প্রতিফলন ঘটান।
ষাট ও সত্তর দশকে বাংলা চলচ্চিত্রে উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেনের রোমান্টিক যুগ এক স্বর্ণালী অধ্যায় রচনা করে।পাশাপাশি বাসু চ্যাটার্জি, তরুণ মজুমদার, তপন সিনহা প্রমুখ পরিচালকেরা পারিবারিক ও মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন যা বাণিজ্যিক ও গুণগত মানের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে।আশির দশকে টালিগঞ্জে কম বাজেট ও সস্তা বিনোদন নির্ভর ছবির ভিড় তৈরি হলেও নব্বই দশকে এই ধারা কিছুটা ভাঙে।
২০০০-এর পরবর্তী সময়ে বাংলা সিনেমা ধীরে ধীরে নতুন রূপ পেতে থাকে।রঞ্জন ঘোষ, সৃজিত মুখার্জি, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল, অতনু ঘোষ প্রমুখ নির্মাতারা নতুন গল্প, আধুনিক নির্মাণ কৌশল ও আন্তর্জাতিক মানের ভাবনা নিয়ে বাংলা সিনেমার নতুন রূপ গড়ে তুলেছেন। "চতুষ্কোণ", "নগরকীর্তন", "জাতিস্মর", "বেলাশেষে" ইত্যাদি সিনেমা আবারও বাঙালি দর্শককে হলমুখী করেছে। একইসাথে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম যেমন হইচই, ক্লিক, এমএক্স প্লেয়ার প্রভৃতি বাংলা কনটেন্টের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।
এইভাবে, বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাস শুধুই বিনোদনের নয়, এটি বাঙালির আত্মপরিচয়, সামাজিক উত্তরণ এবং শিল্প-সাংস্কৃতিক বিবর্তনের এক ধারাবাহিক দলিল।
VOTE @bangla.witness as witness

OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

Beauty of Creativity. Beauty in your mind.
Take it out and let it go.
Creativity and Hard working. Discord
বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাস নিয়ে দারুণ আলোচনা করেছেন দাদা। পোস্টটি পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। বেশ ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে। যাইহোক বরাবরের মতো আজকেও এমন তথ্যমূলক একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।