সাবমেরিন।।১২ মে ২০২৫

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

সাবমেরিন একটি বিশেষ ধরণের জাহাজ যা জলের নিচে দীর্ঘ সময় ধরে চলাফেরা করতে পারে।এর মেকানিজম মূলত বয়নসি (buoyancy) নিয়ন্ত্রণ, প্রপালশন সিস্টেম এবং চাপ সহনশীল গঠন দ্বারা নির্ধারিত। সাবমেরিনে ব্যালাস্ট ট্যাঙ্ক নামে একটি সিস্টেম থাকে যা জলে ডুবে যাওয়া বা জলের উপরে ওঠার জন্য দায়ী।যখন এই ট্যাঙ্কে পানি ভরে যায় তখন সাবমেরিন ভারী হয়ে নিচে ডুবে যায়,আর যখন এই পানি ফেলে দিয়ে বাতাস ভরে দেওয়া হয়, তখন তা আবার ভেসে ওঠে।

17469950804253826121416385622033.png

Image created by OpenAI


চলাচলের জন্য সাবমেরিনে একটি শক্তিশালী প্রপালশন সিস্টেম ব্যবহৃত হয় — এটি হতে পারে ডিজেল-ইলেকট্রিক বা নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর-চালিত।ডিজেল সাবমেরিনে বাতাস লাগার দরকার হয় বলে তা মাঝেমধ্যে পানির উপরে উঠে আসে, কিন্তু নিউক্লিয়ার সাবমেরিন বহুদিন পানির নিচে থাকতে পারে কারণ এতে অক্সিজেন ও বিদ্যুৎ নিজেই উৎপন্ন হয়।সাবমেরিনের শরীর শক্ত ধাতব ও পানির চাপ সহনশীল উপাদানে তৈরি হয় যাতে গভীর জলে প্রচণ্ড চাপেও গঠন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

নেভিগেশন, সনার (SONAR), কমিউনিকেশন এবং টার্গেটিং সিস্টেম ইত্যাদির সাহায্যে সাবমেরিন গভীর জলের নিচেও শত্রু জাহাজ খুঁজে পেতে ও আক্রমণ চালাতে পারে।সামরিক, বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান এবং উদ্ধার অভিযানে সাবমেরিনের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সাবমেরিনের প্রযুক্তিগত গঠন ও কার্যপ্রণালি অত্যন্ত জটিল ও বহুমাত্রিক।এর প্রধান অংশগুলো হচ্ছে — ব্যালাস্ট সিস্টেম, প্রপালশন সিস্টেম, জীবনধারণ সাপোর্ট সিস্টেম, সেন্সর-নেভিগেশন প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

১. ব্যালাস্ট এবং ট্রিম ট্যাঙ্ক:
সাবমেরিনের ডুবে যাওয়া ও ভেসে ওঠা ব্যালাস্ট ট্যাঙ্কের মাধ্যমে ঘটে।এই ট্যাঙ্কে বায়ু ও পানি আদান-প্রদান করে ভাসমান অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হয়।যখন ব্যালাস্ট ট্যাঙ্কে পানি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, তখন সাবমেরিনের ওজন বাড়ে এবং এটি নিচে ডুবে যায়। আবার যখন উচ্চচাপের বাতাস দিয়ে পানি বের করে দেওয়া হয়, সাবমেরিন হালকা হয়ে উঠে আসে।ট্রিম ট্যাঙ্ক ব্যবহার করে সামনের বা পেছনের দিক ভারসাম্য বজায় রাখা হয়।

২. প্রপালশন সিস্টেম (চালনা ব্যবস্থা):
সাবমেরিন মূলত দুইভাবে চালিত হয়— ডিজেল-ইলেকট্রিক অথবা নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর দ্বারা।

  • ডিজেল-ইলেকট্রিক সাবমেরিন: ডিজেল ইঞ্জিনে চার্জ হওয়া ব্যাটারি ব্যবহার করে পানির নিচে চলে।তবে অক্সিজেনের প্রয়োজন হওয়ায় এটি মাঝেমধ্যে পানির ওপরে উঠে আসে।
  • নিউক্লিয়ার সাবমেরিন: ইউরেনিয়াম ফিশন প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপন্ন করে যা দীর্ঘ সময় সাবমেরিনকে পানির নিচে রাখতে সক্ষম।এর সাথে বাষ্প টারবাইন ও জেনারেটর বিদ্যুৎ তৈরি করে প্রপেলার ঘোরায়।

৩. জীবনধারণ সাপোর্ট সিস্টেম:
পানির নিচে বহুদিন থাকতে হলে ক্রুদের অক্সিজেন, খাবার, পানি এবং বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হয়।সাবমেরিনে কার্বন-ডাই-অক্সাইড রিমুভার, অক্সিজেন জেনারেটর, পানির পরিশোধক ও বায়ু সঞ্চালন ব্যবস্থা থাকে যাতে দীর্ঘমেয়াদি মিশন চালানো যায়।

৪. সোনার ও সেন্সর সিস্টেম:
সাবমেরিনের চোখ ও কান হচ্ছে সোনার (SONAR)।এটি সাউন্ড ওয়েভ ব্যবহার করে আশেপাশের বস্তুর অবস্থান শনাক্ত করে।

  • Active SONAR: শব্দ পাঠিয়ে প্রতিধ্বনি ধরে অবস্থান নির্ণয় করে।
  • Passive SONAR: নিজে শব্দ পাঠায় না কেবল আশেপাশের আওয়াজ শুনে বিশ্লেষণ করে।
    এছাড়া আছে GPS, জাইরোস্কোপ, ম্যাগনেটোমিটার ও ইনফ্রারেড সেন্সর।

৫. অস্ত্র ব্যবস্থা ও প্রতিরক্ষা:
সাবমেরিন থেকে টর্পেডো, মিসাইল, মাইন ও ন্যুক্লিয়ার অস্ত্র নিক্ষেপ করা যায়।আধুনিক সাবমেরিনে VLS (Vertical Launching System) থাকে যার মাধ্যমে জলজ ও স্থলভাগে দূরপাল্লার হামলা চালানো সম্ভব।আত্মরক্ষার জন্য নীরবভাবে চলার প্রযুক্তি ও ধোঁয়াটে প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে।

৬. শরীর বা Hull নির্মাণ:
সাবমেরিনের শরীর দুই ভাগে বিভক্ত — outer hull (সাধারণ কাঠামো) ও pressure hull (মজবুত অভ্যন্তরীণ কাঠামো)।pressure hull সাধারণত উচ্চ শক্তির ইস্পাত বা টাইটেনিয়াম দিয়ে তৈরি হয় যা গভীর পানির চাপ সহ্য করতে পারে।


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকবেন।

BoC- linet.png
-cover copy.png

|| Community Page | Discord Group ||


image.png

png_20211106_204814_0000.png

Beauty of Creativity. Beauty in your mind.
Take it out and let it go.
Creativity and Hard working. Discord

1000158425.png

PUSS COIN:BUY/SELL

Sort:  

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



 2 days ago 

সাউথ কোরিয়ার জেজু দ্বীপে গিয়ে সাবমেরিনে চড়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। লাইফে শুধুমাত্র একবারই সাবমেরিনে চড়েছিলাম। যাইহোক সাবমেরিন সম্পর্কে চমৎকার আলোচনা করেছেন দাদা। বরাবরের মতো আজকেও এমন তথ্যবহুল একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।