অতি বৃষ্টির কারণে পানিতে আম বাগান ভরাট, বাড়ছে রোগের আক্রমণ
আমি @riyadx2 বাংলাদেশ থেকে
মঙ্গলবার, ২০ ই মে ২০২৫ ইং
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টানা অতিবৃষ্টির কারণে হাঁড়িভাঙ্গা আমের বাগানগুলোতে দেখা দিয়েছে চরম দুরবস্থা। বৃষ্টির পানি জমে মাটিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে আমগাছের স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। গাছের শিকড় পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন না পাওয়ায় গাছ দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং এতে করে ফলনের পরিমাণ ও গুণমান দুটোই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।আমের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। হয়তো আর অল্প কিছু দিন এরকম পানি জমা থাকলে আমাদের এলাকার প্রতিটি আম বাগানের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিবে। ইতোমধ্যে অনেক গুলো সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এই প্রাকৃতিক সমস্যার কারণে আমবাগানে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ। বিশেষ করে অ্যানথ্রাকনোজ, ফল পচা, ডাই-ব্যাক, পাউডারি মিলডিউসহ নানা রোগের আক্রমণ অতীতের তুলনায় অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে। এসব রোগ আমের গায়ে দাগ ফেলে, আগাম পচন ধরায় এবং অনেক ক্ষেত্রে গাছের ডালপালা পর্যন্ত শুকিয়ে যায়। ফলে হাঁড়িভাঙ্গা আমের স্বাদ, গন্ধ ও রপ্তানিযোগ্য মান হুমকির মুখে পড়ে।ঘন ঘন বৃষ্টির কারণে আরো অনেক ধরনের রোগ আক্রমণ করছে হাঁড়িভাঙ্গা আম বাগান গুলোর মধ্যে। অতীতে এতো বেশি রোগ ছিল না আমাদের আম বাগান গুলোর মধ্যে। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।
হাঁড়িভাঙ্গা আম দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও বাজারমূল্য সম্পন্ন আম হিসেবে পরিচিত। উত্তরবঙ্গের রংপুর , চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ অঞ্চলে এর বাণিজ্যিক চাষ হয়ে থাকে এবং এখানকার কৃষকেরা এ আম থেকেই বছরের বড় একটি আয় উপার্জন করে থাকেন। কিন্তু চলতি মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চাষিদের মুখে হাসি নেই। বরং তারা চিন্তিত ঋণ পরিশোধ, উৎপাদন খরচ এবং জীবিকার অনিশ্চয়তা নিয়ে। কেননা, এখন পর্যন্ত প্রতিটি আম চাষী তাদের আম বাগানের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে টাকা ব্যয় করেছেন শুধু মাত্র কিছুটা লাভের আশায়। কিন্তু তার আগেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষকদের মাথায় হাত।
এই পরিস্থিতিতে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি। রোগ চিহ্নিত করে দ্রুত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া, জমিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা এবং নির্ভরযোগ্য ছত্রাকনাশক ব্যবহার করার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মীদের নিয়মিত বাগান পরিদর্শন ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া দরকার, যাতে চাষিরা সঠিক দিকনির্দেশনা পান। বিশেষ করে উন্নত মানের কীটনাশক প্রয়োগ করা প্রতিটি কৃষকদের জন্য খুবই জরুরি।যাতে করে আম বাগান থেকে সকল ধরনের রোগ একদম মুক্ত হয়ে যায়।সকল ধরনের রোগ বালাই থেকে মুক্তি পেলেই আমের ফলন অনেক বেশি ভালো হবে।আম চাষিরা ও তাদের মনের মতো ফলন পাবেন।
এই সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে কৃষক একা কোনোভাবেই সফল হতে পারবে না তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে সরকার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে হলেও, এর প্রভাব কমিয়ে আনার জন্য কিছু বাস্তবসম্মত ও টেকসই উদ্যোগ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।। সেই সঙ্গে রোগবালাই ব্যবস্থাপনা, পানি নিষ্কাশন এবং সার ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে মাঠপর্যায়ে। কৃষি বিভাগ থেকে বিশেষজ্ঞদের নিয়মিত বাগান পরিদর্শনের ব্যবস্থা করলে চাষিরা বাস্তবসম্মত পরামর্শ পেয়ে উপকৃত হবে। শুধু তাই নয়, দীর্ঘমেয়াদে এই অঞ্চলের আমচাষকে টিকিয়ে রাখতে হলে জলাবদ্ধতা প্রতিরোধে উপযোগী অবকাঠামো গড়ে তোলা, মাটি ও আবহাওয়ার উপযোগী নতুন জাত উদ্ভাবন এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করতে হবে।
এককথায়, হাঁড়িভাঙ্গা আমকে টিকিয়ে রাখতে চাইলে সমন্বিত উদ্যোগ এবং কৃষক কেন্দ্রিক চিন্তা ভাবনার কোন বিকল্প নেই। এখনই যদি সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে শুধু এই মৌসুম নয় পুরো আমচাষ ব্যবস্থাই বড় রকমের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Device | iPhone 11 |
---|---|
Camera | 11+11 MP |
County | Bangladesh |
Location | Rangpur, Bangladesh |
Vote@bangla.witness as witness
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Daily task
Link
https://x.com/Riyadx2P/status/1924723470455521432?t=ydvygOZZH1HXgTNqMe7BEg&s=19
https://x.com/Riyadx2P/status/1924723895963418701?t=ydvygOZZH1HXgTNqMe7BEg&s=19
Screenshot