অপচয় ( তৃতীয় পর্ব )!!
আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
করোনার দীর্ঘ বিরতির পরে আমি এবং লিখন আবার যোগাযোগ শুরু করি। ঈদের আগের কথা বলছি। তো একদিন লিখন বলল ইমন চল আলিফের খোঁজ নিয়ে আসি। আলিফের বাড়ি আমরা চিনতাম না তবে ওর এলাকার নাম জানতাম। দুজন চলে গেলাম আলিফের এলাকায়। অনেকের কাছে শুনে অনেক খুজে সেদিন আমরা আলিফকে পেয়েছিলাম। দীর্ঘ দুই বছর পরে আবার আমাদের দেখা হয়েছিল। আলিফ তখন কথা দেয় আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখবে। এবং কিছুদিন রেখেছিল। তারপর আবার আলিফের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় আমাদের।
ঢাকা পলিটেকনিক এর ছাএাবাসে থাকত আলিফ। ততদিন স্বাভাবিকভাবেই রাজনীতির সাথে জড়িয়ে গিয়েছে। তবে ক্ষমতাসীন দলের না বিরোধীদলের ছাএ সংগঠন এর সদস্য তখন আলিফ। এই নিয়ে ক্যাম্পাসে বেশ কয়েকবার আলিফ মার খেয়েছে যখম হয়েছে। এভাবেই চলছিল। আমার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ না থাকলেও লিখনের সাথে ওর যোগাযোগ হতো নিয়মিত। এবং লিখনের থেকে আমি খবর পেতাম।
প্রায়ই আলিফ অভাব অনটনে পড়ে লিখনের কাছে টাকা ধার চাইতো। অধিকাংশ সময় লিখন দেওয়ার চেষ্টা করতো। আমার থেকে নিয়েও বেশ কয়েকবার আলিফ কে টাকা দেওয়া হয়। যদিও সেই টাকা আর কখনও আলিফ ফেরত দেয়নি। এবং আমরা কেউই ঐ টাকা দাবি করিনি। এভাবেই চলছিল। রাজনীতিতে পরে ততদিনে আলিফের লেখাপড়া একেবারে গোল্লায় গিয়েছে। প্রতি সেমিষ্টারে কয়েকটা করে রিটেক খাওয়া যেন ওর কাছে স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়ালো।
তবে সেগুলোর চেয়েও বড় ধরনের একটা বিপদে আলিফ ততদিনে পড়ে গিয়েছে। যেটা আমরা তখনও জানতাম না। আলিফ ততদিনে নেশাগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ আলিফ সিগারেটের পাশাপাশি পাতা স্টার্ট করে দিয়েছিল। যারা পাতা জিনিসটা বুঝতে পারছেন না তাদের উদ্দেশ্যে বলি সহজ বাংলায় এটাকে বলে গাঁজা। এটা শোনার পরে আমি এবং লিখন আলিফকে বেশ অনেক বার বোঝাবার চেষ্টা করি। কিন্তু সেরকম কোন ফলাফল হয়নি। আমাদের সামনে ও বলতো ঠিক আছে আমি ছেড়ে দিবনে আর খাবনা এই সেই। কিন্তু ও সেটা কখনোই করত না। ক্রমাগত ওর নেশার পরিমাণ বাড়তে থাকে আর সেটা ওর শরীর দেখেই বোঝা যেত। এভাবেই কয়েক বছর চলে গেল। তখন এক নতুন ঝামেলার উদয় হলো। প্রায়ই আলিফ আমাকে ফোন দিয়ে টাকা চাইতো।
আলিফের ডিমান্ড খুব বেশি ছিল না। আলিফের ডিমান্ড ছিল ঐ ৪০০-৫০০ টাকা। আমি কয়েকবার সেই টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে জানতে পারি আমার থেকে ঐ টাকা নিয়ে ও নেশা করে। শুধু আমি না ওর পরিচিত সবার থেকেই এই টাকা চাওয়ার ব্যাপার টা যেন রুটিন হয়ে দাঁড়ায়। একসময় গিয়ে আমরা সবাই ওকে পুরোপুরি টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশে ঘটে গেল এক গণঅভ্যুত্থান। ক্ষমতাসীন দলের আধিপত্য কমে গেল। কিন্তু ঠিকই বেড়ে গেল বিরোধী দলের আধিপত্য। তারাই যেন তখন সব। আলিফ কে তখন দেখে কে। আলিফ তখন ঢাকা মহানগর ছাএ কমিটির সভাপতির বিশেষ চ্যালা। সবসময় ও ওর সেই নেতার সাথেই থাকে। আলিফের তখন চোখে নেতা হওয়ার স্বপ্ন। লেখাপড়া শেষ হলেও চাকরিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা আর ওর নেই।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Daily task
https://x.com/Emon423/status/1966051961507295325?t=W-g94JdlzXT7KtuCyfxSDg&s=19