কেমন আছেন প্রিয় বন্ধুরা আমার ? আর বলবো না ভালো নেই।যেমনই আছি বেশ ভালোই আছি। আর ভালো আছি বলেই সারাদিনের ব্যস্ততার পর বসে গেলাম আপনাদের জন্য একটি পোস্ট শেয়ার করতে। পোস্ট শেয়ার না করতে পারলে মনটাই যেন কেমন উরু উরু লাগে। তাই তো শত কষ্টের মাঝেও পোস্ট করা হতে বিরত থাকিনি। বিরত থাকিনি নিজের একটিভিটিজ ধরে রাখতে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ চলে আসলাম আপনাদের মাঝে নিজের আরও একটি ভালো লাগার পোস্ট শেয়ার করতে। দোয়া করবেন হাজারও ব্যস্ততার মাঝে আমি যেন আপনাদের সাথে থাকতে পারি।

আমি @maksudakawsar, বাংলাদেশ হতে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন নিয়মিত গর্বিত ইউজার। গর্বিত বলছি এই কারনে যে, আমার চেয়ে ভালো ভালো অনেক ক্রেয়েটিভ মানুষ আছে যারা এমন একটি প্লাটফর্ম খুঁজে বেড়াচ্ছে নিজেদের যোগ্যতাকে মেলে ধরার জন্য। অথচ আমি কত ক্ষুদ্র একজন ইউজার, যার নেই তেমন ক্রেয়েটিভিটি। তবুও আমি এমন সুন্দর একটি প্লাটফর্মের একজন ভেরিফাইড ইউজার। তাই তো শত ব্যস্ততার মাঝেও আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি আপনাদের মাঝে নতুন নতুন এবং ভিন্ন কিছু পোস্ট নিয়ে উপস্থিত হতে। তাই তো আজ আবার একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম।

বর্ষার এ সময়ে পদ্মার পাড়ে ঘুরে আসার ভিডিওগ্রাফি

বাংলাদেশের হৃদয়ে বয়ে চলা এক বিস্ময়কর নদীর নাম পদ্মা। শুধু নদী নয়, যেন এক জীবনধারা। তার বিশালতা, গর্জন, আর শান্ত সৌন্দর্য — সব মিলিয়ে পদ্মা শুধু একটি জলধারা নয়, এক অনুভব। সম্প্রতি আমি ঘুরতে গিয়েছিলাম মাওয়া ঘাট, যা পদ্মার তীরে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় নদীঘাট। সেই ভ্রমণের অভিজ্ঞতাই আজ তুলে ধরছি। মাওয়া ঘাটে পৌঁছে পদ্মার তীরে দাঁড়ানো মাত্রই হৃদয়ে অন্যরকম প্রশান্তি নেমে এলো। বিশাল, উদার জলরাশি চোখের সামনে বিশাল ক্যানভাসের মতো প্রসারিত। বাতাসে ভেসে আসছিল নৌকার ইঞ্জিনের শব্দ, মানুষের ডাকাডাকি, আর ঢেউয়ের মৃদু গর্জন। পদ্মার পানি সেই সময় কিছুটা ঘোলা, কিন্তু তা যেন আরেক ধরণের সৌন্দর্য বহন করে — রুক্ষ, রিয়েল, কিন্তু মুগ্ধকর।

পদ্মা নদীর ঢেউ ছিল শান্ত, কখনো বা একটু অস্থির। নৌকাগুলোর গতি আর নদীর নিজস্ব ছন্দ মিলে তৈরি করে এক নীরব সংগীত। আমি কিছু সময় একা বসে ছিলাম নদীর পাড়ে, শুধু সেই ঢেউয়ের শব্দ শুনে। মানুষের জীবনে এমন সময় খুব কম আসে, যখন শুধু প্রকৃতি কথা বলে, আপনি শুধু শুনে যান। এরপর আমি উঠলাম এক ছোট্ট ট্রলারে। কাঠের তৈরি এই ট্রলার ধীরে ধীরে নদীর বুকে এগিয়ে যাচ্ছিল। ইঞ্জিনের ঠুকঠাক শব্দ, মাঝির দক্ষ হাতে স্টিয়ারিং ঘোরানো, আর চারপাশে বিস্তৃত পানি — সব মিলিয়ে যেন আমি বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন এক স্বপ্নের জগতে প্রবেশ করলাম। নদীর বুক চিরে চলা এই ট্রলার যাত্রায় আমি দেখেছি জেলেদের জাল ফেলা, নৌকায় বসে চা খাওয়া, শিশুদের পানি নিয়ে খেলা — এসব দৃশ্য যেন পদ্মার প্রাণ।

ট্রলার যখন ধীরে ধীরে পদ্মা সেতুর কাছাকাছি পৌঁছাল, চোখের সামনে ধরা দিল আধুনিক বাংলাদেশের এক গর্ব — পদ্মা সেতু। বিশাল এই স্থাপনাটি নদীর বুকে দাঁড়িয়ে যেন যুগের পর যুগের গল্প বলে। সেতুর নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় মনে হচ্ছিল, আমি সময়ের এক অধ্যায় অতিক্রম করছি — যেখানে ইতিহাস, প্রকৃতি ও আধুনিকতা একসাথে মিশে আছে। এই ভ্রমণ ছিল খুবই সাদামাটা, কিন্তু তা মন ও আত্মার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। পদ্মা নদী শুধুমাত্র একটি নদী নয়, এটি একটি জীবন্ত অনুভব — যেটা নিজে না দেখলে, না অনুভব করলে বোঝা যাবে না। মাওয়া ঘাট থেকে শুরু করে ট্রলারে ভেসে চলা, ঢেউয়ের কানে কানে কথা বলা, আর পদ্মা সেতুর ছায়া — সব মিলিয়ে এই অভিজ্ঞতা আমার যাত্রার অন্যতম প্রিয় একটি অধ্যায়।

তো ভাবলাম আমি কিছুটা ভিডিও গ্রাফি করে আপনাদের সাথে শেয়ার করি। সত্যি বলতে বেশ জানতে ইচ্ছে হচ্ছে যে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে এমন সুন্দর দৃশ্য। জানার অপেক্ষায় রইলাম কিন্তু।

বর্ষার এ সময়ে পদ্মার পাড়ে ঘুরে আসার ভিডিওগ্রাফি